নয়াদিল্লি, 6 জানুয়ারি : কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশকে খারিজ দিল সুপ্রিম কোর্ট ৷ পশ্চিমবঙ্গে প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় অবসরকালীন সুযোগ সুবিধা সংক্রান্ত করা মামলা কলকাতায় রাখতে চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন জানান ৷ সেই মামলা সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের প্রিন্সিপাল বেঞ্চ (Central Administrative Tribunal, CAT) কলকাতা থেকে দিল্লিতে সরাতে নির্দেশ দেয় ৷ একে চ্যালেঞ্জ করে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন ৷ কলকাতা হাইকোর্ট ক্যাটের সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ জারি করে৷ কিন্তু আজ সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাইকোর্টের সেই সিদ্ধান্ত খারিজ করল (Supreme Court sets aside Calcutta High Court order) ৷
বৃহস্পতিবার বিচারপতি এ এম খানউইলকর (Justices AM Khanwilkar) এবং বিচারপতি সিটি রবিকুমারের (CT Ravikumar) বেঞ্চ 29 নভেম্বর, 2021 তারিখে কলকাতা হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশ বাতিল করে ৷ নয়াদিল্লির ক্যাট প্রিন্সিপাল বেঞ্চের (CAT Principal Bench) মামলা স্থানান্তর সংক্রান্ত নির্দেশে স্থগিতাদেশ জারি করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ যা স্বস্তি দিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Chief Advisor for Chief Minister Mamata Banerjee) ৷ কিন্তু এই নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের এক্তিয়ারের (territorial jurisdiction) বাইরে, জানায় সুপ্রিম কোর্ট ৷
আরও পড়ুন : Alapan Bandyopadhyay: সুপ্রিম কোর্টে আলাপন মামলা দিল্লি থেকে না সরানোর আবেদনের শুনানি পিছল
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এদিন এসজিআই তুষার মেহতা (Solicitor General of India Tushar Mehta) উপস্থিত ছিলেন ৷ আর আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে ছিলেন প্রবীণ আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি (Senior Advocate Dr Abhishek Manu Singhvi) ৷ তুষার মেহতা আদালতে জানান, ক্যাট প্রিন্সিপাল বেঞ্চের চেয়ারপার্সন নয়াদিল্লিতে রয়েছেন ৷ তাই বিষয়টি দিল্লি হাইকোর্টের আওতাভুক্ত, কলকাতা হাইকোর্টে নয় ৷ তিনি কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের সমালোচনা করে আদালতে বলেন, "কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশ দেওয়ার সময় আরও সংযত এবং সতর্ক হওয়া উচিত ছিল ৷ আদালতের বিচার ব্যবস্থায় ব্যক্তিগত মতামত এবং রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির কোনও জায়গা নেই ৷ আমি গভীর শ্রদ্ধা রেখেই জানাচ্ছ, এটা আশা করা যায় না ৷"
তবে সুপ্রিম কোর্ট আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে ক্যাট প্রিন্সিপাল বেঞ্চের নির্দেশকে বিচারের আওতায় থাকা হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জের অনুমতি দিয়েছে ৷ সলিসিটির জেনারেল তুষার মেহতা অবশ্য আশ্বস্ত করেছেন, আদালত যতক্ষণ না চূড়ান্ত নির্দেশ দিচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্য সচিবের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হবে না ৷
আরও পড়ুন : Alapan Bandyopadhyay: আলাপনের মামলার শুনানি কলকাতার বেঞ্চেই করার নির্দেশ হাইকোর্টের
28 মে প্রধানমন্ত্রীর একটি পর্যালোচনা বৈঠকে অংশগ্রহণ না-করায় প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ এনে ব্যবস্থা গ্রহণের তোড়জোড় শুরু করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার । সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের কলকাতা বিভাগ মামলা করেছিল তাঁর বিরুদ্ধে । কিন্তু সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের দিল্লিতে অবস্থিত প্রিন্সিপাল বেঞ্চে আবেদন জানায় কর্মিবর্গ ও প্রশিক্ষণ দফতর । আবেদনে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়য়ের মামলা সংক্রান্ত সমস্ত বিষয় প্রিন্সিপাল বেঞ্চে নিয়ে আসার আবেদন জানিয়েছিল কর্মিবর্গ দফতর । গত 22 অক্টোবর প্রিন্সিপাল বেঞ্চ তা অনুমোদন করে । এর বিরুদ্ধেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব ।
29 অক্টোবর সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল প্রিন্সিপাল বেঞ্চের (দিল্লির) নির্দেশ খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য ও বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চ । হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় কেন্দ্র । কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট যেহেতু এই মামলা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নয়, তাই সময় নিয়ে মামলার শুনানির আবেদন জানিয়েছিলেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা ।
আরও পড়ুন : Alapan Bandyopadhyay : অবসরকালীন সুযোগ সুবিধার মামলা কলকাতায় রাখতে হাইকোর্টে আলাপন