কলকাতা, 8 জুন : দিনের বেশির ভাগ সময়ই ফাঁকা থাকে দলীয় কার্যালয় । গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ছাড়া কার্যালয়ে খুব একটা আসেন না দলীয় নেতারা । তাই কলকাতার লেনিন সরণির RSP-র কার্যালয় হয়ে উঠেছে শহরে চিকিৎসার জন্য আসা রোগী ও তাঁদের পরিজনদের আশ্রয়স্থান । আরও পাঁচজনের সঙ্গে এখন সেখানে রয়েছে ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত শিশু । তবে শুধু চিকিৎসাজনিত কারণে নয়, পরীক্ষা বা অন্য যে কোনও জরুরি কাজের জন্যও সেখানে থাকার বন্দোবস্ত রয়েছে ।
ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত শিশুর চিকিৎসা চলছে নীলরতন সরকার হাসপাতালে । চিকিৎসা শেষ হতে সময় লাগবে প্রায় 2 বছর । বালুরঘাট থেকে নিয়মিত কলকাতায় আসাও সম্ভব নয় । বাধ্য হয়ে কলকাতায় থাকতে হচ্ছে । কিন্তু, হোটেলে থাকার সামর্থ্য নেই । তারপর যদি হোটেল ভাড়া করে থাকতে হয়, তাহলে চিকিৎসাই হয়তো হবে না বলে জানিয়েছেন শিশুর বাবা । তাই মাথার উপর ছাদ পেয়ে কৃতজ্ঞ রোগীর পরিবার । আবার টিউমারের চিকিৎসা করাতে আসা এক দম্পতিও রয়েছেন এই দলীয় কার্যালয়ে । গুরুত্বপূর্ণ কোনও পরীক্ষা বা চিকিৎসার জন্য, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সারা বছরই এখানে সাধারণ মানুষ আসেন । ইতিমধ্যেই এই দলীয় কার্যালয়ে চিকিৎসার জন্য আশ্রয় নিয়েছেন 4-5টি পরিবার । তাদের জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত পানীয় জল, পাখা, বিছানা । সেজন্য কোনও ভাড়া দিতে হয় না । শুধুমাত্র দলের জেলার সম্পাদক বা জেলা নেতৃত্বের চিঠি হাতে নিয়ে এলেই রোগী ও তাঁর পরিবার নিশ্চিন্তে এখানে আশ্রয় নিতে পারেন । জরায়ুতে টিউমার নিয়ে চিকিৎসা চলছে এখানে থেকেই। দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে এসেছেন এক দম্পতি । নীলরতন সরকার হাসপাতালে তাঁরও চিকিৎসা চলছে। বছরে অন্তত পাঁচবার চিকিৎসার জন্য আসতে হয়। যতবারই আসেন ততবারই থাকেন RSP-র পার্টি অফিসে।
রাজ্যের যে সব জায়গা থেকে একদিনে কলকাতা থেকে ফিরে যাওয়া সম্ভব নয় সেই সব এলাকার বাসিন্দারা এই পার্টি অফিসেই আশ্রয় নেন। দীর্ঘদিন ধরেই এই প্রথা চলে আসছে । নির্দিষ্ট সময়ে দলীয় কার্যালয়ে এসে জানিয়ে দিলেই থাকার জায়গা পেয়ে যান রোগী ও তাঁর পরিবার । রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে দোতলা এবং তিনতলায় রোগীর পরিবারের জন্য ঢালাও বিছানার ব্যবস্থাও করে দেওয়া হয় । RSP-র ওই দলীয় কার্যালয়ের সর্বক্ষণের সহকারী সুপল দাশগুপ্ত বলেন, "এখানে থাকার জন্য কোনও টাকা পয়সা লাগে না । থাকার জায়গা, জল এবং হাসপাতালের কোনও বিষয়ে সাহায্য লাগলে আমরা সাহায্য করি । তবে অবাঞ্ছিত লোকের প্রবেশ আটকাতে জেলা সম্পাদক বা জেলা নেতৃত্বের চিঠি নিয়ে এলেই এখানে থাকার ব্যবস্থা হতে পারে ।"