ETV Bharat / state

অধ্যাপিকাকে হেনস্থা, প্রতিবাদে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পদত্যাগ অধ্যাপকদের - Resignation

রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পদত্যাগ করলেন কয়েকজন অধ্যাপক ।

রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়
author img

By

Published : Jun 18, 2019, 3:22 PM IST

কলকাতা, 18 জুন : জাত-গায়ের রঙ-পদবী তুলে অধ্যাপিকাকে হেনস্থা । এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে পদত্যাগ করলেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন অধ্যাপক । ঘটনার গুরুত্ব বুঝে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসলেন মন্ত্রী ব্রাত্য বসু । আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি বিভাগের প্রধান পদত্যাগপত্র জমা দেন উপাচার্যর কাছে । পদত্যাগ করেন আরও তিনটি সেন্টারের অধিকর্তা । রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সব্যসাচী বসুরায়চৌধুরি বলেন, "আমি পদত্যাগপত্রগুলি এখনও হাতে পাইনি । অফিসে জমা পড়েছে বলে শুনেছি । বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসতে চাই । দোষ প্রমাণিত হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।"

গত 20 মে ভূগোলের অধ্যাপিকা ও ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান সরস্বতী কেরকেটাকে হেনস্থা করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে । বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও টিচার্স কাউন্সিলের কাছে ঘটনার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জানান অধ্যাপিকা । টানা চার ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। পাশাপাশি জলের বোতল ছুঁড়ে মারা হয় । এই ঘটনার প্রতিবাদ জানান অধ্যাপকরা । প্রতিবাদস্বরূপ পদত্যাগও করেন অনেকে ।

রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আশিসকুমার দাস বলেন, "গত 20 মে ভূগোলের অধ্যাপিকা ও ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান সরস্বতী কেরকেটাকে হেনস্থা করা হয়েছিল । তাঁকে চার ঘণ্টা ঘেরাও করে রাখা হয় । অবশেষে নিরাপত্তাকর্মীরা ঘেরাওমুক্ত করেন ।'' উনি আরও বলেন, "আমরা ঘটনার প্রতিবাদ জানাই। জাতপাতের বিরুদ্ধে আমরা প্রতিবাদ জানাই। এডুকেশন ডিপার্টমেন্টের প্রধান ভারতী বন্দ্যোপাধ্যায়, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান বঙ্কিমচন্দ্র মণ্ডল, অর্থনীতি বিভাগের প্রধান বিন্দি, সংস্কৃত বিভাগের প্রধান অমলকুমার মণ্ডল সহ বেশ কয়েকজন বিভাগীয় প্রধান পদত্যাগ করেছেন ।

কলকাতা, 18 জুন : জাত-গায়ের রঙ-পদবী তুলে অধ্যাপিকাকে হেনস্থা । এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে পদত্যাগ করলেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন অধ্যাপক । ঘটনার গুরুত্ব বুঝে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসলেন মন্ত্রী ব্রাত্য বসু । আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি বিভাগের প্রধান পদত্যাগপত্র জমা দেন উপাচার্যর কাছে । পদত্যাগ করেন আরও তিনটি সেন্টারের অধিকর্তা । রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সব্যসাচী বসুরায়চৌধুরি বলেন, "আমি পদত্যাগপত্রগুলি এখনও হাতে পাইনি । অফিসে জমা পড়েছে বলে শুনেছি । বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসতে চাই । দোষ প্রমাণিত হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।"

গত 20 মে ভূগোলের অধ্যাপিকা ও ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান সরস্বতী কেরকেটাকে হেনস্থা করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে । বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও টিচার্স কাউন্সিলের কাছে ঘটনার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জানান অধ্যাপিকা । টানা চার ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। পাশাপাশি জলের বোতল ছুঁড়ে মারা হয় । এই ঘটনার প্রতিবাদ জানান অধ্যাপকরা । প্রতিবাদস্বরূপ পদত্যাগও করেন অনেকে ।

রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আশিসকুমার দাস বলেন, "গত 20 মে ভূগোলের অধ্যাপিকা ও ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান সরস্বতী কেরকেটাকে হেনস্থা করা হয়েছিল । তাঁকে চার ঘণ্টা ঘেরাও করে রাখা হয় । অবশেষে নিরাপত্তাকর্মীরা ঘেরাওমুক্ত করেন ।'' উনি আরও বলেন, "আমরা ঘটনার প্রতিবাদ জানাই। জাতপাতের বিরুদ্ধে আমরা প্রতিবাদ জানাই। এডুকেশন ডিপার্টমেন্টের প্রধান ভারতী বন্দ্যোপাধ্যায়, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান বঙ্কিমচন্দ্র মণ্ডল, অর্থনীতি বিভাগের প্রধান বিন্দি, সংস্কৃত বিভাগের প্রধান অমলকুমার মণ্ডল সহ বেশ কয়েকজন বিভাগীয় প্রধান পদত্যাগ করেছেন ।

Intro:কলকাতা, ১৭ জুন: তফশিলি জাতির এক শিক্ষিকা হেনস্থার ঘটনায় পদত্যাগ দেওয়ার হিড়িক পড়ল রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি বিভাগের প্রধান পদত্যাগ জমা দেয় উপাচার্যের অফিসে। পদত্যাগ করেন আরও তিনটি সেন্টারের অধিকর্তা। সঙ্গে আরও চার জন তফশিলি জাতির অধ্যাপক জাত নিয়ে হেনস্থার অভিযোগ জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরী জানান, তিনি পদত্যাগপত্রগুলি হাতে পাননি। তাঁর অফিসে জমা পড়েছে বলে শুনেছেন। তিনি এ বিষয়ে আলোচনা চান বলেও জানিয়েছেন।
Body:গত ২০ মে তফশিলি জাতির ভূগোলের শিক্ষিকা ও ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান সরস্বতী কেরকেটাকে হেনস্থা করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও টিচার্স কাউন্সিলের কাছে লিখিত অভিযোগ করে ওই শিক্ষিকা জানান, ২০ মে ছাত্র সংসদের একদল সদস্য এসে তাঁকে চার ঘন্টার বেশি সময় ধরে হেনস্থা করে। তাঁকে চার ঘন্টা টানা দাঁড় করিয়ে রাখা হয়, জলের বোতল ছুড়ে মারা হয় বলে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওই তরুণী অধ্যাপিকার। ওই অধ্যাপিকার সমর্থনে ও বেশ কয়েকটি দাবি-দাওয়া নিয়ে গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল করেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক-অধ্যাপিকারা। মিছিল শেষে উপাচার্যের কাছে নিজেদের দাবিদাওয়া পেশ করতে না পেরে উপাচার্যের পদত্যাগের স্লোগানও দেন কেউ কেউ। অভিযোগ, সেই কারণে পরের দিন বৃহস্পতিবার বহু অধ্যাপক-অধ্যাপিকাকে আটকে রেখে, কটু কথা বলে হেনস্থা করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ও তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতির সদস্যরা। সেই ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল চারটে বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও তিনটি সেন্টারের অধিকর্তারা পদত্যাগ জমা দেন।

এ বিষয়ে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আশীষ কুমার দাস বলেন, "গত ২০ মে সরস্বতী কেরকেটা আমাদের জিওগ্রাফি ডিপার্টমেন্টের, তাকে তো ৪ ঘন্টা ঘেরাও করে রেখেছিল। তারপরে কর্তৃপক্ষ ৪ ঘণ্টা পরে জানতে পারে। একই ক্যাম্পাসে হচ্ছে অথচ কর্তৃপক্ষ জানতে পারেনি। ৪ ঘন্টা পরে তাকে রেজিস্ট্রার ও সিকিউরিটি অফিসার দিয়ে ঘেরাও মুক্ত করে। সেটার বিরুদ্ধে আমরা সম্মিলিতভাবে সঙ্গে আমাদের আরও কিছু দাবি-দাওয়া ছিল, সেগুলো নিয়ে আমরা বুধবারে একটি মিটিং করে একটা মিছিল করি। করার পরে আর্টস ফ্যাকাল্টির টিচার যাঁরা ওইদিন ছিলেন আমরা সম্মিলিতভাবে উপাচার্যের ওখানে যাই এবং সময় চাই। সেই সময় উপাচার্য মহাশয় কোনো মিটিংয়ে ব্যস্ত ছিলেন, উনি বললেন আপনারা ওয়েট করুন, আমি পরে আপনাদের ডাকছি। আমরা অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর যখন ডাকছেন না তখন আবার যাই। তখন বলেন না আজকে আর দেখা করতে পারব না। সেই সময় খুব সংগত কারণে আমরা মিছিলটা উপাচার্যের ঘরের সামনে দিয়ে যেতে যেতে স্লোগান দিয়ে, আমাদের দাবি পূরণ করতে হবে, এই যে জাতপাত রেসিস্ট এগুলো আমরা মানছি না মানবো না এগুলো বলতে বলতে যাই। তার মধ্যে দু-একজন উপাচার্যের পদত্যাগ চাই, এই ধরনের স্লোগান দেয়।"

সেই স্লোগানের কারণে পরেরদিন তাঁদের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ও তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতি হেনস্থা করে বলে অভিযোগ। আশীষবাবু বলেন, "ওই স্লোগানে উনি বোধহয় আহত হন। উনি কতটা আহত হন সেটা পরের দিন বোঝা যায়। পরের দিন বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা ছিল। আমাদেরকে দুপুর ১ টা থেকে ৫টা অব্দি ঘেরাও করে রাখে ছাত্ররা এবং শিক্ষাকর্মী বন্ধুরা। এখন তো সবই তৃণমূল। অশ্লীল গালাগালি, ব্যক্তিগত আক্রমণ সেগুলো তো আমি ছেড়েই দিলাম। তাঁদের মূল বক্তব্য, কেন আমরা উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়েছি? যতক্ষণ না আমরা উপাচার্যের কাছে ক্ষমা চাইব, ততক্ষণ এই ঘেরাও অবস্থান চলবে। আমাদের ওই সময় প্রায় ১৬ জন মতো টিচার্স ছিলেন। তখন আমরা কিছুটা বাধ্য হয়ে উপাচার্যের কাছে গিয়ে আমরা দুঃখ প্রকাশ করি। যদিও খবরের কাগজে উনি স্টেটমেন্ট দিয়েছেন আমরা ক্ষমা চেয়েছি। তারপরে আমরা চলে আসি। শুক্রবারে কিছু হয়নি।"

বৃহস্পতিবারের ওই ঘটনা ও তপশিলি জাতির অধ্যাপিকাকে হেনস্থার ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল পদত্যাগ করেন চারজন বিভাগীয় প্রধান ও তিনটি সেন্টারে অধিকর্তা। আশীষবাবু বলেন, "এই যে ঘটনাটা ঘটল, তার আগেও ধারাবাহিকভাবে নানা ঘটনা ঘটেছে। সেগুলো আমরা নিজেরা আলোচনা করে মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছি যাতে শিক্ষার পরিবেশটা নষ্ট না হয়। কিন্তু একটা তো সীমা থাকে প্রত্যেকটা মানুষের। আর আমরা তো মাস্টারমশাই। তাই আজকে যাঁরা গেছিলেন তাঁরা সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিই। চারজন বিভাগীয় প্রধান ও তিনটি সেন্টারের ডিরেক্টর পদত্যাগ জমা দিয়েছেন উপাচার্যের দপ্তরে। তার মধ্যে দুটি সেন্টারের ডিরেক্টর আমি ছিলাম। আবার আলাদা করে চারজন শিক্ষক তপশিলি জাতি ভুক্ত, তাদের উপর এত কাল যে অত্যাচার হয়েছে মানসিক এবং অন্যভাবে, সেগুলো লিপিবদ্ধ করে উপাচার্যের দপ্তরে জমা দিয়ে এসেছেন।"

গতকাল পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এডুকেশন ডিপার্টমেন্টের প্রধান ভারতী ব্যানার্জি, পলিটিকাল সায়েন্স ডিপার্টমেন্টের প্রধান বঙ্কিম চন্দ্র মণ্ডল, ইকোনমিক্স ডিপার্টমেন্টের প্রধান বিন্দি শ, সংস্কৃত ডিপার্টমেন্টের প্রধান অমল কুমার মণ্ডল। সেন্টার ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ ও স্কুল অফ ল্যাংগুয়েজেস অ্যান্ড কালচারের অধিকর্তা আশীষ কুমার দাস ও বি আর আম্বেদকর নামের একটি সেন্টারের অধিকর্তা বঙ্কিম চন্দ্র মণ্ডলও পদত্যাগ করেছেন। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরী জানান, তিনি শুনেছেন তাঁর দফতরে পদত্যাগপত্রগুলি জমা পড়েছে। তিনি সেগুলো এখনো হাতে পাননি ও গ্রহণ করেননি। তাঁর বক্তব্য, তিনি আলাপ আলোচনা চান। সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরী জানান, ইতিমধ্যেই তপশিলি জাতির অধ্যাপিকা হেনস্থার ঘটনায় একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি তৈরি করা হয়েছে। যদি সেখানে দোষ প্রমাণিত হয় তাহলে দোষীদের কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
Conclusion:
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.