কলকাতা, 1 মে : এবছরের মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর দিন থেকে পর পর ছ'টি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিল পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিটের মধ্যে । এই ধরনের কোনও ঘটনা যাতে রাজ্য জয়েন্টে না ঘটে তা নিয়ে প্রথম থেকেই সচেতন রাজ্য জয়েন্ট বোর্ড (WBJEEB) । মাধ্যমিক পরীক্ষা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবছর জয়েন্ট পরীক্ষায় প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে একটি করে রেডিয়ো ফ্রিকোয়েন্সি ডিটেক্টর যন্ত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জয়েন্ট বোর্ড । রাজ্য জয়েন্ট বোর্ডের রেজিস্ট্রার দিব্যেন্দু কর বলেন, প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রের সেন্টার ইনচার্জের কাছে এই যন্ত্রটি পাঠানো হবে । তিনি পরীক্ষাকেন্দ্রের প্রতিটি রুমে ওই যন্ত্রটি নিয়ে ঘুরবেন । সেই সময় পরীক্ষা হলে কোনও মোবাইল ফোন বা ব্লু-টুথের মতো যন্ত্রের সিগনাল কাজ করলে তা জানান দেবে এই রেডিয়ো ফ্রিকোয়েন্সি ডিটেক্টর ।
পশ্চিমবঙ্গ জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের রেজিস্ট্রার বলেন, "রেডিয়ো ফ্রিকোয়েন্সি ডিটেক্টর হচ্ছে একটা ডিভাইজ় । এই ডিভাইজ় প্রত্যেক সেন্টারে সেন্টার ইনচার্জের তত্ত্বাবধায়নে থাকবে । উনি প্রত্যেক ঘরে ঘরে ঘুরবেন । কোনওরকম কোনও ইলেকট্রনিক ডিভাইজ় যেমন, ইলেকট্রনিক ফোন বা ব্লু-টুথ এই সবগুলো যদি থাকে তাহলে ওটাকে ক্যাচ করবে । মানে সেন্সরে দেখাবে যে কারোর কাছে আছে । তা আমরা অ্যাড্রেস করতে পারব, এটুকু আমাদের আশা আছে ।" দিব্যেন্দুবাবু জানাচ্ছেন, আগেও এই যন্ত্রটি ব্যবহার করা হত । তবে অন্যভাবে । তিনি বলেন, "এটা আগে আমরা বেশি ব্যবহার করিনি । যাঁরা রোমিং অবজ়ার্ভার তাঁদের দেওয়া হত । তাঁরা সারপ্রাইজ় ভিজ়িট দিতেন তাঁরা নিয়ে যেতেন । এবার বোর্ডের সিদ্ধান্ত সব সেন্টারকেই পাঠাব একটা করে । যাতে সবসময় সুপারভিশন থাকে ।"
এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন প্রশ্নপত্র বেরিয়ে আসার ঘটনাকে সামনে রেখেই রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানাচ্ছেন বোর্ডের এক সদস্য । ওই আধিকারিক বলেন, "এবার রেডিয়ো ফ্রিকোয়েন্সি ডিটেক্টর দেওয়া হচ্ছে সবাইকে । যাতে মোবাইল ব্যবহার আটকানো যায় । মাধ্যমিকে পরীক্ষা শুরুর ২০-৩০ মিনিটের মধ্যে প্রশ্নপত্র হোয়াটসঅ্যাপে বেরিয়ে এসেছিল । স্মার্টফোনে ছবি তোলা হচ্ছে, সেই ছবি হোয়াটসঅ্যাপে বেরিয়ে যাচ্ছে । এই জিনিসগুলো আটকানোর জন্য রেডিয়ো ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন ডিভাইজ় দেওয়া হচ্ছে । কোনও মোবাইল নেটওয়ার্ক যদি অপারেটিভ থাকে তাহলে সেটাতে ধরা পড়বে ।" ওই আধিকারিক জানাচ্ছেন, পরীক্ষা চলাকালীন এই যন্ত্রটি ব্যবহার করা হবে । যাতে মোবাইল বা অন্য কোনও ইলেকট্রনিক যন্ত্র ব্যবহারকারীদের হাতে নাতে ধরা যায় ।
ধরা পড়লে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে? রেজিস্ট্রার দিব্যেন্দু কর বলেন, "ধরা পড়লে যা নিয়ম তাই করতে হবে । কেউ যদি ধরা পড়ে তাকে আমরা পুলিশের হাতে তুলে দেব ৷ খাতা RA করা হবে । যে রকম রিপোর্ট দেবেন আমাদের সেন্টার ইনচার্জ, সেইভাবে আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ।"