কলকাতা , 14 মে : আগামী সপ্তাহ থেকে রাজ্যে চালু হতে পারে বেসরকারি বাস ও মিনিবাস পরিষেবা । কিন্তু আগের মতো যাত্রী হবে না বলে মনে করছে বেসরকারি বাস মালিক সংগঠন । তাই তিনগুণ ভাড়া বাড়িয়েও লাভ হবে না বলে তাদের আশঙ্কা ।
ইতিমধ্যেই রাজ্যের 7টি গ্রিন জো়নে সরকারি বাস চালুর নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী । এরপরই ভাড়া তিনগুণ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বাস মালিক সংগঠনগুলির তরফে । মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন যে, বেসরকারি বাসের ভাড়ার ক্ষেত্রে সরকার কোনওরকম হস্তক্ষেপ করবে না । কিন্তু বাসগুলি একসঙ্গে 20 জন যাত্রী তুলতে পারবে । অন্যদিকে, মিনিবাসের ক্ষেত্রে তোলা যাবে মোট 15 জন যাত্রী । তবে কন্টেনমেন্ট জো়ন থেকে যাত্রী তোলা ও নামানো যাবে না । সকাল 7টা থেকে সন্ধে 7টা পর্যন্ত মিলবে পরিষেবা । পাশাপাশি দূরপাল্লার বেসরকারি বাস পরিষেবা চালু হবে ।
ওয়েস্টবেঙ্গল বাস-মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের জয়েন্ট সেক্রেটারি প্রদীপ নারায়ণ বোস বলেন যে, " আমাদের সংগঠনের তরফে সব দিক চিন্তা করে ভাড়া ঠিক করা হয়েছে। বেসরকারি বাসের ক্ষেত্রে প্রতি স্টেজে ভাড়া 3.5 গুণ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। পাশাপাশি মিনিবাসের ক্ষেত্রে 3.75 গুণ করা হয়েছে। অর্থাৎ বাসের ক্ষেত্রে হবে 25 টাকা। মিনিবাসের ক্ষেত্রে ভাড়া করতে হবে 30 টাকা। আমরা নিশ্চিত যে বাসে যাত্রীর অভাব হবে না। তাই সারাদিনের জ্বালানি খরচ করতে তেমন অসুবিধায় পড়তে হবে না।" বলেন, একই রুটে সরকারি ও বেসরকারি বাস চলাচল করলে যাতে যাত্রী পেতে কোনও সমস্যা না হয় সে বিষয়টির দিকে সংগঠনই নজর দেবে । গড়ে দৈনিক বেসরকারি বাসে 800 জন এবং মিনিবাসে 500 জন যাত্রী বহন করা হয় । তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এক তৃতীয়াংশ যাত্রী বহনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে । জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন যে, "20 জন যাত্রী নিয়ে বাস চালিয়ে যাতে জ্বালানি ও অন্যান্য খরচ তোলা যায় তাই সবদিক বিচার করেই ভাড়া ঠিক করতে হবে। তবে এটা কতটা সম্ভব হবে জানা নেই। যাত্রী না হলে আয় ও ব্যয়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে গাড়ি চালানো অসম্ভব হবে। এখন ট্রেন বন্ধ, স্কুল-কলেজ, অফিস, কোর্ট সহ সব বন্ধ। তাই সেক্ষেত্রে সারাদিনে হয়তো 10 জন যাত্রীও হবে না।" তিনি আরও বলেন যে সব রুটে সরকারি ও বেসরকারি বাস চলবে সেক্ষেত্রে ভাড়া সমান করতে হবে।
অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন যে, "আজ বৈঠকে আমাদের গাড়ি চালাতে প্রস্তুত হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। লকডাউনের কারণে বহু পরিবহন কর্মী নিজেদের বাড়িতে চলে গেছেন। তাঁরা এখন ফিরতে পারবেন না। তাই কর্মীর অভাবে কতগুলো বাস আমরা নামাতে পারব তা এখনও জানি না। অন্যদিকে যদি যাত্রী না হয় তাহলে আমাদের বাস চালিয়ে কোনও লাভ হবে না। কারণ ইতিমধ্যেই আমাদের এবিষয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে। উত্তরবঙ্গে আলিপুরদুয়ারে পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি বাস চালিয়ে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। কারণ সেখানে গত তিন দিনে আমাদের আয় থেকে ব্যয় হয়েছে অনেক বেশি। তাই অগত্যা সেখানকার বাস পরিষেবা বন্ধ করে দিতে হয়েছে। সেই জন্য বাসের ভাড়া বাড়ালেও যদি যাত্রী না মেলে সে ক্ষেত্রে বাস চালানো অসম্ভব হয়ে পড়বে।" অন্যদিকে গতকাল শহরের বেশ কয়েকটি রুটে সরকারি বাস চললেও যাত্রী হয়েছিল খুবই কম ।