কলকাতা, 10 জানুয়ারি : পড়ুয়াদের ট্যাবের টাকা দেওয়ার জন্য ব্যাঙ্কের তথ্য আপলোড করা নিয়ে শুরু থেকেই নাজেহাল প্রধান শিক্ষকরা । এরই মধ্যে জেলা পরির্দশকরা স্বল্প সময়ের মধ্যে পড়ুয়াদের ব্যাঙ্কের তথ্য যাচাই করে আপলোড করার নির্দেশ দিচ্ছে ৷ আগেই এমন অভিযোগ জানিয়েছিলেন প্রধান শিক্ষকরা । গতকাল রাতে জেলা পরিদর্শকদের তরফে প্রধান শিক্ষকদের হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করে বলা হয়েছে, আজ রাত 12টার মধ্যে সকল দ্বাদশ শ্রেণির সব ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যাঙ্কের তথ্য যাচাই করে চূড়ান্ত করতে হবে । ব্যাঙ্কের তথ্য সঠিকভাবে যাচাই করা না হলে এর জন্য প্রধান শিক্ষকদেরই দায়ী করা হবে বলে জানানো হয়েছে । এই নির্দেশ আসতেই মুখ্যমন্ত্রীর দারস্থ হয়েছেন প্রধান শিক্ষকদের একাংশ । ই-মেইল মারফত মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছেন তারা ৷
স্কুল ও মাদ্রাসা বোর্ডের ক্লাস টুয়েলভের পড়ুয়াদের অনলাইন ক্লাসের সুবিধা করে দিতে একটি করে ট্যাব দেওয়ার ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । এরপর 22 ডিসেম্বর তিনি জানান, 9 লাখ ট্যাব একসঙ্গে জোগাড় করার অসুবিধা দেখা দিয়েছে । তাই ট্যাবের পরিবর্তে সরাসরি সংশ্লিষ্ট পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে 10 হাজার টাকা করে দেওয়া হবে । ঘোষণার পরদিন থেকেই তৎপরতা শুরু হয়ে যায় স্কুল শিক্ষা দপ্তরে । 28 ডিসেম্বরের মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের ব্যাঙ্কের তথ্য পোর্টালে আপলোড করতে প্রধান শিক্ষকদের নির্দেশ দেওয়া হয় । এত কমদিনের মধ্যে এই বিশাল কাজ সম্ভব নয় বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন প্রধান শিক্ষকরা । তারপর সময়সীমা বাড়িয়ে প্রথমে 31 ডিসেম্বর ও তারপরে 3 জানুয়ারি পর্যন্ত করা হয় । কিন্তু তারপরেও বিভিন্ন সমস্যার কারণে সব পড়ুয়ার ব্যাঙ্কের তথ্য যাচাই করে আপলোড করতে পারেনি বহু স্কুল ।
গতকাল রাতে ফের ব্যাঙ্কের তথ্য আপলোড করা নিয়ে একটি নির্দেশিকা আসে প্রধান শিক্ষকদের কাছে । উত্তর 24 পরগনার জেলা পরিদর্শকের তরফে পাঠানো নির্দেশে বলা হয়েছে, "দেখা গেছে, বহু এন্ট্রি একাধিকবার করা হয়েছে ৷ মনে হচ্ছে প্রধান শিক্ষক স্তরে সঠিকভাবে যাচাই করা হয়নি । ডেটা এন্ট্রি, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট যাচাই, সরাসরি টাকা ট্রান্সফার এবং সব দ্বাদশ শ্রেণির যোগ্য পড়ুয়াদের অন্তর্ভুক্তিকরণের ক্ষেত্রে "জিরো টলারেন্স" নেওয়া হবে । তাই সব প্রধান শিক্ষককে অনুরোধ করছি, চূড়ান্ত করা এবং সাক্ষর করার আগে সব তথ্য ব্যক্তিগতভাবে 100 শতাংশ যাচাই করে নিতে ৷ আগামীকাল মধ্যরাত পর্যন্ত পোর্টাল খোলা থাকবে।"
আরও পড়ুন : 24তম দিনে পার্শ্ব শিক্ষকদের অবস্থান; লড়াই আরও দীর্ঘ হবে, বলছেন আন্দোলনকারীরা
আজ ফের সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হন প্রধান শিক্ষকদের একাংশ । স্টেট ফোরাম অফ হেডমাস্টার অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসের সাধারণ সম্পাদক চন্দন কুমার মাইতি বলেন, "এই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কেন, কিসের জন্য বুঝতে পারছি না । আমাদের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর নেই । গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি কর্মী, অ্যাসিস্ট্যান্ট টিচারদের ছুটির দিনে আনার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ছি । এই সব অসুবিধার কথা শিক্ষা দপ্তরের জানা রয়েছে । কিন্তু জেলা পরিদর্শকরা হুমকি, ধমকি দিচ্ছেন । কোথাও কোথাও আবার বিদ্যালয় পরিদর্শক নানারকম মেসেজ পাঠিয়ে বিব্রত করছে । আমরা অসহায়বোধ করছি । তাই মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমরা সকালেই ই-মেল করেছি ।"