কলকাতা, 24 নভেম্বর : সময় লেগেছে প্রায় দুই মাস। তবে, ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়। স্নাতকে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও তার পরবর্তী বেশ কয়েকটি মেধাতালিকার ভিত্তিতে হাতেগোনা পড়ুয়াদের ভরতির চিত্র অবশেষে বদলেছে নবম প্রভিশনাল মেধাতালিকা প্রকাশের পর। বিভিন্ন বিষয়ের স্নাতক কোর্সে ভরতির জন্য নবম মেধাতালিকা প্রকাশের পর দেখা যায় আর মাত্র হাতেগোনা কয়েকটি আসন ফাঁকা রয়েছে জেনারেল ক্যাটাগরিতে।
কোরোনা পরিস্থিতির জেরে চলতি বছর প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকের প্রবেশিকা পরীক্ষা বাতিল করা হয় । পরিবর্তে মেধা অর্থাৎ বোর্ড পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে স্নাতক কোর্সগুলিতে পড়ুয়া ভরতির সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। রাজ্য সরকারের উচ্চশিক্ষা দপ্তরের গাইডলাইন অনুযায়ী সম্পূর্ণ অনলাইনে ভরতি প্রক্রিয়া চালু হয় 18 অগাস্ট থেকে। 16টি বিষয়ের স্নাতক কোর্সে ভরতির জন্য অনলাইনে আবেদন গ্রহণ প্রক্রিয়া চলে 1 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। 4 সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয় প্রথম প্রভিশনাল মেধাতালিকা। আর সেই মেধাতালিকার ভিত্তিতে ভরতি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার পরেই এবছরের ভরতির বেহাল দশা নজরে আসে। দেখা যায়, প্রথম মেধাতালিকার ভিত্তিতে 16টি স্নাতক কোর্স মিলিয়ে মোট 665টি আসনের মধ্যে পড়ুয়া ভরতি হয়েছেন মাত্র 179টি আসনে। এরপর থেকে প্রতিটি মেধাতালিকার ভিত্তিতেই খুব কম সংখ্যক করে পড়ুয়া ভরতি হতে থাকে।
তারপর একের পর এক মেধাতালিকা প্রকাশ করে বিপুল পরিমাণে ফাঁকা থাকা আসন পূরণ করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অবশেষে নবম মেধাতালিকা প্রকাশের পর ভরতির বেহাল দশার চিত্রটা বদলাতে দেখা যায়। দেখা যায়, জেনারেল ক্যাটাগরিতে খুবই কম সংখ্যক আসন বর্তমানে ফাঁকা রয়েছে। সায়েন্সের বিভিন্ন বিষয় যেমন, গণিত, লাইফ সায়েন্স, ফিজ়িকাল সায়েন্সের জেনারেল ক্যাটাগরিতে কোনও আসন ফাঁকা নেই। স্ট্যাটিস্টিকসে জেনেরাল ক্যাটাগরিতে মাত্র একটি আসন ফাঁকা রয়েছে। লাইফ সায়েন্সে 3টি, গণিতে 4টি এবং ফিজিক্সে 6টি ফাঁকা থাকা আসনগুলি সবই তফসিলি জাতি, উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত রয়েছে।
একই চিত্র কলা শাখার বিভিন্ন বিষয়ের স্নাতক কোর্সে ছাত্র ভরতির ক্ষেত্রেও। ইংরেজি এবং বাংলা উভয় বিষয়েই দুটি করে ও ইতিহাস এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান উভয় বিষয়েই তিনটি করে আসন ফাঁকা রয়েছে জেনেরাল ক্যাটাগরিতে। ইকোনমিকসের জেনেরাল ক্যাটাগরিতে পাঁচটি এবং সমাজবিজ্ঞানে মাত্র একটি আসন ফাঁকা রয়েছে। হিন্দি এবং দর্শনশাস্ত্রের মতো বিষয়ে একটিও আসন ফাঁকা নেই।
প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, "সংরক্ষিত ক্যাটাগরির প্রার্থীদের জন্য নির্ধারিত আসনগুলি নিয়ে অ্যাডজাস্টমেন্টের কাজ চলছে বর্তমানে। এই সপ্তাহের শেষে আমরা ভরতি নিয়ে একটি স্পষ্ট চিত্র পেয়ে যাব বলে আশা করছি।" প্রায় 2 মাস ধরে চলছে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক কোর্সে ছাত্র ভরতির প্রক্রিয়া। প্রথম থেকেই ধীরগতিতে ছাত্র ভরতির চিত্র দেখা গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আশাবাদী ছিল যে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব আসনই ভরে যাবে। সেই আশাই পূরণ হওয়ার পথে পায়ে পায়ে এগোচ্ছে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়।