কলকাতা, 13 ডিসেম্বর : 2 বি গড়চা রোড । এই ঠিকানাতেই গতকাল খুন হন উর্মিলা কুমারী । তাঁর বাড়ির দরজার সামনেই রয়েছে একটি মদের দোকান । আর সেই দোকানটিকে কেন্দ্র করে নানা অসামাজিক কাজকর্মের অভিযোগ উঠেছে । উর্মিলাদেবীর মত্যুর পর যা আরও জোরালো হয় । স্থানীয়দের দাবি, বিষয়টি বহুবার জানানো হয়েছিল গড়িয়াহাট থানায় । ফল মেলেনি । তাদের অভিযোগ, ঘটনায় নিষ্ক্রিয় থেকেছে পুলিশ । সেই অভিযোগ কানে গেছে পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তাদের । সেই সূত্রে DC (সাউথ- ইস্ট) অজয় প্রসাদকে বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে বলে লালবাজার সূত্রের খবর ।
গতকাল সকাল সাড়ে 11 টা নাগাদ 2 বি গড়চা ফার্স্ট লেনের বাসিন্দা উর্মিলা কুমারীকে গলাকাটা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন কয়েকজন । আসলে ওই সময় আসেন বাড়ির পরিচারিকা । তিনি ঘরে ঢুকেই দেখেন মাঝের ঘরের বিছানায় পড়ে রয়েছেন উর্মিলাদেবী । তাঁর গলা কাটা ও পেটে ছুরির কোপ । পেট আড়াআড়িভাবে কাটা । বেরিয়ে এসেছে লিভারসহ পাকস্থলী । শিউড়ে ওঠেন তিনি । চিৎকার করে ডাকেন প্রতিবেশী দেবলিনা দাসের পরিবারকে । দাস দম্পতি ঘরে ঢুকে দেখেন মৃত্যু হয়েছে ওই বৃদ্ধার । প্রতিবেশীরা সঙ্গে সঙ্গে খবর দেন গড়িয়াহাট থানায় । বোঝা যায় এটি একটি খুনের ঘটনা । সেই ঘটনার পরই তাঁর উর্মিলাদেবীর বাড়ির সামনে থাকা মদের দোকান নিয়ে আবারও ক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন স্থানীয়রা । তাদের বক্তব্য, এলাকায় অসামাজিক কাজের অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ সক্রিয় থাকলে হয়ত এই খুনও এড়ানো যেত ।
স্থানীয়দের দাবি, এই এলাকায় দিনভর প্রকাশ্যেই চলে মদ্যপান । ইদানিং গজিয়ে উঠেছে গাঁজার ঠেকও । আবার রাতে মদ বেআইনিভাবে বিক্রি হয় ওই চত্বরে । ইন্দ্রনীল চন্দ্র নামে এক স্থানীয় যুবক উর্মিলাদেবীর পরিচারিকার ডাকে এসে প্রথমে গলা কাটা দেহটি দেখেন । তাঁর অভিযোগ, "বিভিন্ন ধরনের লোকজন এসে পাড়ায় ভিড় করে প্রতিদিন । প্রকাশ্যেই চলে মদ্যপান । গাঁজার আসরও বসছে এখন । নিজের পাড়াতেই প্রতিবাদ করতে পারি না । আমরা যারা এখানে থাকি আইন মেনেই চলি । এই বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছিলাম অনেকদিন আগেই । বলেছিলাম একটা অন্তত CCTV বসাতে । আমরা অভিযোগ জানালে একবার টহল দিয়ে যায় পুলিশ । ব্যস ওইটুকুই । এলাকার পরিবেশ উন্নত করতে পুলিশ নিষ্ক্রিয় থেকেছে । যে অপরাধের ঘটনা ঘটে গেল CCTV থাকলে আরও সহজে আততায়ীকে ধরতে পারত পুলিশ ।"
দেবজয় নামের এক যুবকের কথায়, "আমার বাড়িতে অসুস্থ বাবা এবং তিন বছরের বাচ্চা আছে । যেভাবে অসামাজিক কাজকর্ম চলে তাতে আমি অত্যন্ত ভয়ে থাকি । আমরা পুলিশ, এক্সাইজ় ডিপার্টমেন্টকে বারবার জানিয়েছি । তারা সব সময় একে অপরকে দেখায় । মূল বিষয়টির কোনও নিস্পত্তি হয় না ।"