ETV Bharat / state

নিয়ম জারির পরও কোরোনা-মৃতের শেষকৃত্য নিয়ে অভিযোগ

author img

By

Published : Aug 19, 2020, 2:06 PM IST

রাজ্যে প্রতিদিন বাড়ছে কোরোনা সংক্রমিতের সংখ্যা । অনেকক্ষেত্রে, মৃত্যুর পরে কোরোনা রোগীর শেষকৃত্য নিয়ে অভিযোগ উঠেছে একাধিক । রাজ্য সরকারের নিয়ম জারির পরেও কলকাতা পৌরনিগম এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে সঠিক ভূমিকা পালন করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ ।

kmc
নিজস্ব ছবি

কলকাতা, 18 অগাস্ট : রাজ্যে প্রতিদিন বাড়ছে কোরোনা সংক্রমিতের সংখ্যা । একইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর হারও । 24 ঘণ্টায় 3 হাজার 80জন আক্রান্ত হয়েছেন । রাজ্যে এই পর্যন্ত কোরোনায় মৃত্যু হয়েছে 2 হাজার 473জনের । মৃত্যুর পরে কোরোনা রোগীর শেষকৃত্য নিয়ে অভিযোগ উঠেছে একাধিক । অনেকক্ষেত্রে এমন অভিযোগ উঠেছে যে, কোরোনা রোগীর দেহ সঠিকভাবে সৎকার করা হচ্ছে না । এইদিকে রাজ্য সরকারের তরফে ইতিমধ্যেই ঘোষণা করা হয়েছে, কোরোনা রোগীর মৃত্যুর পর পরিবারকে একবার দেখতে দিতে হবে । শেষকৃত্যের পর তাঁর অস্থি তুলে দিতে হবে পরিবারের হাতে । কিন্তু অনেকক্ষেত্রেই অস্থি পাচ্ছে না পরিবার । তবে গাফিলতি কোথায় হচ্ছে । কার্যত কাঠগড়ায় কলকাতা পৌরনিগম ও রাজ্যের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ।

কোরোনা মৃতদেহ সৎকার নিয়ে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে । পরিবারের কোনও সদস্য কোরোনায় আক্রান্ত হলে বাকি সদস্যদের কোয়ারানটিনে থাকতে হয় । এই সময় কোরোনা আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হলে পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে যেতে পারছেন না । শেষবারের মতো নিজের পরিজনকে দেখার সুযোগ হচ্ছে না । মৃতদেহ সৎকার নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে । এইরকমই অভিযোগ করেছেন রাজ্যবর্ধন গুপ্তা । তাঁর বাবা ওমপ্রকাশ গুপ্তার সোয়াব নমুনার রিপোর্ট প্রথমে নেগেটিভ আসে । এরপর আবার স্বাস্থ্যদপ্তরের তরফে জানানো হয়, তাঁর বাবা কোরোনা পজ়িটিভ । আগের রিপোর্টে ভুল ছিল । 27 মার্চ হাসপাতালে ভরতি করা হয় ওমপ্রকাশবাবুকে । দুই ঘণ্টা পর জানানো হয় তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক । পরেরদিন জানানো হয় ওমপ্রকাশবাবুর মৃত্যু হয়েছে । কিন্তু তাঁকে শেষবার দেখতে পারেননি রাজ্যবর্ধন ।

রাজ্যবর্ধন বলেন, "আমায় বলা হয়েছিল, মৃতদেহ আপনি দেখতে পারবেন না । সেই নিয়ম নেই । মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার সময় আমরা জানাব । কিন্তু জানানো হয়নি । অস্থিও পাইনি । যদিও হাসপাতালের দাবি, ফোন করা হয়েছিল আমাদের । কিন্তু না কি ফোনে পাওয়া যায়নি । "

কোরোনা মৃতদেহ সৎকার নিয়ে রয়েছে অভিযোগ

সাংসদ তথা রাজ্যের কোভিড মোকাবিলায় বিশেষ দলের উপদেষ্টা শান্তনু সেন এই বিষয়ে জানান, মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় না । হাসপাতালে মৃত্যুর পর সেই দেহ কলকাতা পৌরনিগমকে হস্তান্তর করা হয় । কলকাতা পৌরনিগমের কর্মীরা মৃতদেহ সৎকার করেন । আগে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় পরিবারের সদস্যদের মৃতদেহ দেখতে দেওয়া হত না । অবশ্য পরবর্তী সময়ে সেই নিয়ম পরিবর্তন করা হয়েছে । এখন হাসপাতালের বাইরে একটি খোলা জায়গায় কিছুক্ষণের জন্য মৃতদেহ রাখা হয় । পরিবারের লোকজনদের খবর দেওয়া হয় । স্বজনরা এসে মৃতদেহ দেখার সুযোগ পাচ্ছেন । সেই সঙ্গে এখন পরিবারের সদস্যরা চাইলে তাঁদের অস্থিও দেওয়া হচ্ছে । কলকাতা পৌরনিগম ও রাজ্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলি উঠেছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন তিনি ।

কলকাতা পৌরিনগমের প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য ও স্বাস্থ্যবিভাগের প্রধান অতীন ঘোষ বলেন, "সময়ের সঙ্গে বহু নিয়ম-বিধির পরিবর্তন করা হয়েছে । আগে আত্মীয় পরিজনের মৃতদেহ দেওয়ার সুযোগ ছিল না । এখন 20 মিনিটের জন্য পরিবারকে মৃতদেহ দেখতে দেওয়া হচ্ছে । এবং তপসিয়া হিন্দু কবরস্থানে একটি কাউন্টার করা হয়েছে । সেখান থেকেই দেওয়া হচ্ছে ডেট সার্টিফিকেট । রাখা থাকছে মৃত ব্যক্তির অস্থি । যাঁরা অস্থি চাইবেন, তাঁদের সকলকেই অস্থি দেওয়া হচ্ছে ।" একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, এইবার থেকে অনলাইনে সার্টিফিকেট পাওয়া যাবে । মারা যাওয়া সাতদিন পরেই অনলাইনে আপলোড করা হবে ডেথ সার্টিফিকেট । তাই যাঁরা এই ধরনের অভিযোগ করছেন তাঁরা ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন ।

প্রশাসনিক বক্তব্য থেকে এই বিষয় স্পষ্ট যে, কোরোনা আক্রান্তের মৃতদেহের ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়ম পরিবর্তন করেছে । এখন মৃতদেহ চাইলেই দেখতে পারেন পরিবারের সদস্যরা । অস্থিও পেতে পারেন । কিন্তু সবক্ষেত্রেই এই নিয়ম মেনে চলা হচ্ছে না । বারবার স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও পৌরনিগমের ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ উঠছে । বরং থেকেই যাচ্ছে অভিযোগ ।

কলকাতা, 18 অগাস্ট : রাজ্যে প্রতিদিন বাড়ছে কোরোনা সংক্রমিতের সংখ্যা । একইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর হারও । 24 ঘণ্টায় 3 হাজার 80জন আক্রান্ত হয়েছেন । রাজ্যে এই পর্যন্ত কোরোনায় মৃত্যু হয়েছে 2 হাজার 473জনের । মৃত্যুর পরে কোরোনা রোগীর শেষকৃত্য নিয়ে অভিযোগ উঠেছে একাধিক । অনেকক্ষেত্রে এমন অভিযোগ উঠেছে যে, কোরোনা রোগীর দেহ সঠিকভাবে সৎকার করা হচ্ছে না । এইদিকে রাজ্য সরকারের তরফে ইতিমধ্যেই ঘোষণা করা হয়েছে, কোরোনা রোগীর মৃত্যুর পর পরিবারকে একবার দেখতে দিতে হবে । শেষকৃত্যের পর তাঁর অস্থি তুলে দিতে হবে পরিবারের হাতে । কিন্তু অনেকক্ষেত্রেই অস্থি পাচ্ছে না পরিবার । তবে গাফিলতি কোথায় হচ্ছে । কার্যত কাঠগড়ায় কলকাতা পৌরনিগম ও রাজ্যের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ।

কোরোনা মৃতদেহ সৎকার নিয়ে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে । পরিবারের কোনও সদস্য কোরোনায় আক্রান্ত হলে বাকি সদস্যদের কোয়ারানটিনে থাকতে হয় । এই সময় কোরোনা আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হলে পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে যেতে পারছেন না । শেষবারের মতো নিজের পরিজনকে দেখার সুযোগ হচ্ছে না । মৃতদেহ সৎকার নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে । এইরকমই অভিযোগ করেছেন রাজ্যবর্ধন গুপ্তা । তাঁর বাবা ওমপ্রকাশ গুপ্তার সোয়াব নমুনার রিপোর্ট প্রথমে নেগেটিভ আসে । এরপর আবার স্বাস্থ্যদপ্তরের তরফে জানানো হয়, তাঁর বাবা কোরোনা পজ়িটিভ । আগের রিপোর্টে ভুল ছিল । 27 মার্চ হাসপাতালে ভরতি করা হয় ওমপ্রকাশবাবুকে । দুই ঘণ্টা পর জানানো হয় তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক । পরেরদিন জানানো হয় ওমপ্রকাশবাবুর মৃত্যু হয়েছে । কিন্তু তাঁকে শেষবার দেখতে পারেননি রাজ্যবর্ধন ।

রাজ্যবর্ধন বলেন, "আমায় বলা হয়েছিল, মৃতদেহ আপনি দেখতে পারবেন না । সেই নিয়ম নেই । মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার সময় আমরা জানাব । কিন্তু জানানো হয়নি । অস্থিও পাইনি । যদিও হাসপাতালের দাবি, ফোন করা হয়েছিল আমাদের । কিন্তু না কি ফোনে পাওয়া যায়নি । "

কোরোনা মৃতদেহ সৎকার নিয়ে রয়েছে অভিযোগ

সাংসদ তথা রাজ্যের কোভিড মোকাবিলায় বিশেষ দলের উপদেষ্টা শান্তনু সেন এই বিষয়ে জানান, মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় না । হাসপাতালে মৃত্যুর পর সেই দেহ কলকাতা পৌরনিগমকে হস্তান্তর করা হয় । কলকাতা পৌরনিগমের কর্মীরা মৃতদেহ সৎকার করেন । আগে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় পরিবারের সদস্যদের মৃতদেহ দেখতে দেওয়া হত না । অবশ্য পরবর্তী সময়ে সেই নিয়ম পরিবর্তন করা হয়েছে । এখন হাসপাতালের বাইরে একটি খোলা জায়গায় কিছুক্ষণের জন্য মৃতদেহ রাখা হয় । পরিবারের লোকজনদের খবর দেওয়া হয় । স্বজনরা এসে মৃতদেহ দেখার সুযোগ পাচ্ছেন । সেই সঙ্গে এখন পরিবারের সদস্যরা চাইলে তাঁদের অস্থিও দেওয়া হচ্ছে । কলকাতা পৌরনিগম ও রাজ্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলি উঠেছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন তিনি ।

কলকাতা পৌরিনগমের প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য ও স্বাস্থ্যবিভাগের প্রধান অতীন ঘোষ বলেন, "সময়ের সঙ্গে বহু নিয়ম-বিধির পরিবর্তন করা হয়েছে । আগে আত্মীয় পরিজনের মৃতদেহ দেওয়ার সুযোগ ছিল না । এখন 20 মিনিটের জন্য পরিবারকে মৃতদেহ দেখতে দেওয়া হচ্ছে । এবং তপসিয়া হিন্দু কবরস্থানে একটি কাউন্টার করা হয়েছে । সেখান থেকেই দেওয়া হচ্ছে ডেট সার্টিফিকেট । রাখা থাকছে মৃত ব্যক্তির অস্থি । যাঁরা অস্থি চাইবেন, তাঁদের সকলকেই অস্থি দেওয়া হচ্ছে ।" একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, এইবার থেকে অনলাইনে সার্টিফিকেট পাওয়া যাবে । মারা যাওয়া সাতদিন পরেই অনলাইনে আপলোড করা হবে ডেথ সার্টিফিকেট । তাই যাঁরা এই ধরনের অভিযোগ করছেন তাঁরা ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন ।

প্রশাসনিক বক্তব্য থেকে এই বিষয় স্পষ্ট যে, কোরোনা আক্রান্তের মৃতদেহের ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়ম পরিবর্তন করেছে । এখন মৃতদেহ চাইলেই দেখতে পারেন পরিবারের সদস্যরা । অস্থিও পেতে পারেন । কিন্তু সবক্ষেত্রেই এই নিয়ম মেনে চলা হচ্ছে না । বারবার স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও পৌরনিগমের ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ উঠছে । বরং থেকেই যাচ্ছে অভিযোগ ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.