ETV Bharat / state

আজ রাজ্যজুড়ে চিকিৎসা পরিষেবায় সংকটের আশঙ্কা

author img

By

Published : Jun 12, 2019, 6:47 AM IST

Updated : Jun 12, 2019, 7:44 AM IST

রাজ্যজুড়ে সরকারি হাসপাতালে আজ ১২ ঘণ্টার জন্য বহির্বিভাগ বয়কটের ডাক দিয়েছে চিকিৎসকদের পাঁচটি সংগঠন । এর জেরে রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবা ব্যবস্থা চরম সংকটে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে ।

আজ রাজ্যজুড়ে চিকিৎসা পরিষেবায় সংকটের আশঙ্কা

কলকাতা, 12 জুন : আজ রাজ্যজুড়ে সরকারি হাসপাতালে ১২ ঘণ্টার জন্য বহির্বিভাগ বয়কটের ডাক দিয়েছে চিকিৎসকদের পাঁচটি সংগঠন । NRS-র ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন । আর, এই ধরনের পরিস্থিতির মধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নতুন করে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাও দেখা যাচ্ছে । সব মিলিয়ে আজ রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবা ব্যবস্থা চরম সংকটে পড়তে চলেছে বলে মনে করছে বিভিন্ন মহল।

গতকাল দিনভর দফায় দফায় আলোচনা হয়েছে । স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য চিকিৎসকদের আশ্বাস দিয়েছেন । কর্মবিরতি তোলার অনুরোধ করেছেন । এরপরও কর্মবিরতি সহ অবস্থান-বিক্ষোভে অনড় রয়েছেন NRS মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তাররা । যার জেরে ব্যাহত হচ্ছে পরিষেবা। NRS-র এই ঘটনার জের কলকাতা সহ রাজ্যের প্রতিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পড়েছে । এই সব স্থানের জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ মঙ্গলবার কর্মবিরতি শুরু করেছে। মঙ্গলবার রাতে মুর্শিদাবাদ, বর্ধমান এবং মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনার কথা জানা গেছে ।

এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে NRS মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে । আক্রান্ত হন জুনিয়র ডাক্তাররা । অবস্থান বিক্ষোভের পাশাপাশি শুরু হয় কর্মবিরতি । পরিস্থিতি সামাল দিতে মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালে পৌঁছে যান রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা প্রদীপকুমার মিত্র । ছিলেন স্বাস্থ্য দপ্তরের অন্য আধিকারিকরাও । হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক হয় স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকদের । হাসপাতালে পৌঁছান স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য । পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে মন্ত্রী নির্মল মাজি এবং কলকাতা পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মাও পৌঁছান । পরিস্থিতি সামাল দিতে বৈঠকেও বসেন তাঁরা । সোমবার পুলিশের তরফে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ উঠছে NRS-র আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে । আন্দোলনরতদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর সামনে কলকাতা পুলিশ "শেম শেম", "হায় হায়" আওয়াজ তোলেন আন্দোলনকারীরা। এমন আওয়াজ কলকাতা পুলিশ কমিশনারের সামনেও তোলা হয় । তেমনই, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে না চেয়ে আন্দোলনকারীদের তরফে দাবি জানানো হয়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতি তাঁরা চাইছেন।

শেষ পর্যন্ত দিনভর আলোচনার শেষেও অনড় অবস্থানে রয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা । মঙ্গলবার হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সংবাদমাধ্যমে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, "ওরা (আন্দোলনকারীরা) কতগুলো দাবি করেছিল । যেমন, এখানে নিরাপত্তা আরও বাড়ানো । পুলিশের অ্যাক্টিভিটি আরও বাড়ানো । পুলিশ কমিশনার নিজেই এসেছেন । পুলিশের তরফে যা যা পদক্ষেপ নেওয়ার, তার সব নেওয়া হবে । নিরাপত্তা থেকে সবকিছু যাতে আরও বেশি জোরদার হয়, সেগুলো দেখা হবে । ওরা ওদের আরও কতগুলো বক্তব্য আমাদের বলেছে । সেগুলি নিশ্চিত ভাবে আমরা দেখব কী করা যায় ।"

পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, "হয়ত যতটা বেশি সক্রিয় হওয়ার কথা ছিল, ততটা সক্রিয় ছিল না । ওদের (আন্দোলনরতদের) এই অভিযোগ খতিয়ে দেখবেন পুলিশ কমিশনার‌ ।" অন্য মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালগুলিতেও প্রভাব ছড়িয়ে পড়েছে । এই বিষয়ে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, "আমরা অনুরোধ করব, জুনিয়র ডাক্তাররা পরিষেবা দিন । কোনও মতে মানুষের পরিষেবা বিঘ্নিত না হয়‌, সেটা যেন তাঁরা দেখেন । আমাদের বিশ্বাস, যাঁরা ডাক্তার, তাঁরা মানুষের পরিষেবা দেবেন । এটাই তাঁদের সবার আগের মানসিকতা । এটা সর্বাগ্রে তাঁরা অগ্রাধিকার দেবেন । বাকি বিষয়গুলি আমরা দেখে নিচ্ছি ।"

বেসরকারি একটি হাসপাতালে NRS-র এক জুনিয়র ডাক্তারের চিকিৎসা চলছে। তাঁর শারীরিক অবস্থার বিষয়ে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, "আমি নিজে গিয়ে দেখে এসেছি । এবং বারে বারে খবর নেওয়া হচ্ছে । তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল । কথা বলছেন। চিকিৎসা যা করার সেখানকার ডাক্তাররা করছেন। আমরা যোগাযোগ রেখে চলেছি । এর জন্য যে খরচ লাগবে তার সবটাই সরকার বহন করবে । মুখ্যমন্ত্রী এর জন্য নির্দেশ দিয়েছেন ।"

স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, "সরকার সব সময় পাশে আছে । মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তারদের পাশে আছেন । ডাক্তারদের নিয়ে সব সময় তিনি চিন্তা ভাবনা করেন বলে বিভিন্ন সময় বৈঠক করেছেন । ডাক্তারদের প্রতি সম্পূর্ণ সহানুভূতি মুখ্যমন্ত্রীর আছে ‌। যা পদক্ষেপ নেওয়ার তিনি সব সময় সেই পদক্ষেপ নিয়েছেন ।"

জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি এবং অবস্থান-বিক্ষোভ প্রত্যাহারের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, "আমি অনুরোধ করছি যাতে এখানকার ডাক্তাররা তাঁদের যে কর্মবিরতি, সেটা তুলে নেন‌ । এই কর্মবিরতি যাঁরা করছেন, এটা নিশ্চিত ভাবে তাঁদের ব্যাপার । অনুরোধ করাটা আমার ব্যাপার। আমি তো জোর করে তাঁদের তুলে দিতে পারি না। আমার নিশ্চিত বিশ্বাস যে তাঁরা পুরো জিনিসটা ভালো করে পর্যালোচনা করবেন এবং দেখবেন যে মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন ।"

এরপরও পরিস্থিতির তেমন বদল ঘটেনি বলে মনে করছে চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠন। মঙ্গলবার বিকালে এবং সন্ধ্যায় বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তাররা মিছিল করে NRS-এ এসে আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছে । ডাক্তারদের বিভিন্ন সংগঠনের তরফেও এই আন্দোলনকে সমর্থন জানানো হয়েছে ।

এদিকে, আজ রাজ্যের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে বহির্বিভাগের পাশাপাশি এমারজেন্সি বিভাগেও কর্মবিরতি চলবে বলে জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে জানানো হয়েছে । এর পাশাপাশি সকাল 9টা থেকে রাত 9টা পর্যন্ত ডাক্তারদের পাঁচটি সংগঠনের যৌথমঞ্চ রাজ্যের প্রতিটি সরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগ বয়কটের ডাক দিয়েছে । মঞ্চে থাকা একটি সংগঠনের সদস্যরা গণছুটি নিয়ে বহির্বিভাগ বয়কটে সামিল হবেন বলে জানানো হয়েছে । এর পাশাপাশি যেসব ডাক্তার প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেন তাঁদের চেম্বারও আজ সকাল 9টা থেকে রাত 9টা পর্যন্ত বন্ধ রাখার ডাক দিয়েছে ওই যৌথ মঞ্চ । সব মিলিয়ে আজ রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবা ব্যবস্থা সংকটে পড়তে চলেছে বলে মনে করছে বিভিন্ন মহল ।

কলকাতা, 12 জুন : আজ রাজ্যজুড়ে সরকারি হাসপাতালে ১২ ঘণ্টার জন্য বহির্বিভাগ বয়কটের ডাক দিয়েছে চিকিৎসকদের পাঁচটি সংগঠন । NRS-র ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন । আর, এই ধরনের পরিস্থিতির মধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নতুন করে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাও দেখা যাচ্ছে । সব মিলিয়ে আজ রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবা ব্যবস্থা চরম সংকটে পড়তে চলেছে বলে মনে করছে বিভিন্ন মহল।

গতকাল দিনভর দফায় দফায় আলোচনা হয়েছে । স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য চিকিৎসকদের আশ্বাস দিয়েছেন । কর্মবিরতি তোলার অনুরোধ করেছেন । এরপরও কর্মবিরতি সহ অবস্থান-বিক্ষোভে অনড় রয়েছেন NRS মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তাররা । যার জেরে ব্যাহত হচ্ছে পরিষেবা। NRS-র এই ঘটনার জের কলকাতা সহ রাজ্যের প্রতিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পড়েছে । এই সব স্থানের জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ মঙ্গলবার কর্মবিরতি শুরু করেছে। মঙ্গলবার রাতে মুর্শিদাবাদ, বর্ধমান এবং মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনার কথা জানা গেছে ।

এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে NRS মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে । আক্রান্ত হন জুনিয়র ডাক্তাররা । অবস্থান বিক্ষোভের পাশাপাশি শুরু হয় কর্মবিরতি । পরিস্থিতি সামাল দিতে মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালে পৌঁছে যান রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা প্রদীপকুমার মিত্র । ছিলেন স্বাস্থ্য দপ্তরের অন্য আধিকারিকরাও । হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক হয় স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকদের । হাসপাতালে পৌঁছান স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য । পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে মন্ত্রী নির্মল মাজি এবং কলকাতা পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মাও পৌঁছান । পরিস্থিতি সামাল দিতে বৈঠকেও বসেন তাঁরা । সোমবার পুলিশের তরফে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ উঠছে NRS-র আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে । আন্দোলনরতদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর সামনে কলকাতা পুলিশ "শেম শেম", "হায় হায়" আওয়াজ তোলেন আন্দোলনকারীরা। এমন আওয়াজ কলকাতা পুলিশ কমিশনারের সামনেও তোলা হয় । তেমনই, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে না চেয়ে আন্দোলনকারীদের তরফে দাবি জানানো হয়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতি তাঁরা চাইছেন।

শেষ পর্যন্ত দিনভর আলোচনার শেষেও অনড় অবস্থানে রয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা । মঙ্গলবার হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সংবাদমাধ্যমে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, "ওরা (আন্দোলনকারীরা) কতগুলো দাবি করেছিল । যেমন, এখানে নিরাপত্তা আরও বাড়ানো । পুলিশের অ্যাক্টিভিটি আরও বাড়ানো । পুলিশ কমিশনার নিজেই এসেছেন । পুলিশের তরফে যা যা পদক্ষেপ নেওয়ার, তার সব নেওয়া হবে । নিরাপত্তা থেকে সবকিছু যাতে আরও বেশি জোরদার হয়, সেগুলো দেখা হবে । ওরা ওদের আরও কতগুলো বক্তব্য আমাদের বলেছে । সেগুলি নিশ্চিত ভাবে আমরা দেখব কী করা যায় ।"

পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, "হয়ত যতটা বেশি সক্রিয় হওয়ার কথা ছিল, ততটা সক্রিয় ছিল না । ওদের (আন্দোলনরতদের) এই অভিযোগ খতিয়ে দেখবেন পুলিশ কমিশনার‌ ।" অন্য মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালগুলিতেও প্রভাব ছড়িয়ে পড়েছে । এই বিষয়ে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, "আমরা অনুরোধ করব, জুনিয়র ডাক্তাররা পরিষেবা দিন । কোনও মতে মানুষের পরিষেবা বিঘ্নিত না হয়‌, সেটা যেন তাঁরা দেখেন । আমাদের বিশ্বাস, যাঁরা ডাক্তার, তাঁরা মানুষের পরিষেবা দেবেন । এটাই তাঁদের সবার আগের মানসিকতা । এটা সর্বাগ্রে তাঁরা অগ্রাধিকার দেবেন । বাকি বিষয়গুলি আমরা দেখে নিচ্ছি ।"

বেসরকারি একটি হাসপাতালে NRS-র এক জুনিয়র ডাক্তারের চিকিৎসা চলছে। তাঁর শারীরিক অবস্থার বিষয়ে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, "আমি নিজে গিয়ে দেখে এসেছি । এবং বারে বারে খবর নেওয়া হচ্ছে । তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল । কথা বলছেন। চিকিৎসা যা করার সেখানকার ডাক্তাররা করছেন। আমরা যোগাযোগ রেখে চলেছি । এর জন্য যে খরচ লাগবে তার সবটাই সরকার বহন করবে । মুখ্যমন্ত্রী এর জন্য নির্দেশ দিয়েছেন ।"

স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, "সরকার সব সময় পাশে আছে । মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তারদের পাশে আছেন । ডাক্তারদের নিয়ে সব সময় তিনি চিন্তা ভাবনা করেন বলে বিভিন্ন সময় বৈঠক করেছেন । ডাক্তারদের প্রতি সম্পূর্ণ সহানুভূতি মুখ্যমন্ত্রীর আছে ‌। যা পদক্ষেপ নেওয়ার তিনি সব সময় সেই পদক্ষেপ নিয়েছেন ।"

জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি এবং অবস্থান-বিক্ষোভ প্রত্যাহারের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, "আমি অনুরোধ করছি যাতে এখানকার ডাক্তাররা তাঁদের যে কর্মবিরতি, সেটা তুলে নেন‌ । এই কর্মবিরতি যাঁরা করছেন, এটা নিশ্চিত ভাবে তাঁদের ব্যাপার । অনুরোধ করাটা আমার ব্যাপার। আমি তো জোর করে তাঁদের তুলে দিতে পারি না। আমার নিশ্চিত বিশ্বাস যে তাঁরা পুরো জিনিসটা ভালো করে পর্যালোচনা করবেন এবং দেখবেন যে মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন ।"

এরপরও পরিস্থিতির তেমন বদল ঘটেনি বলে মনে করছে চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠন। মঙ্গলবার বিকালে এবং সন্ধ্যায় বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তাররা মিছিল করে NRS-এ এসে আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছে । ডাক্তারদের বিভিন্ন সংগঠনের তরফেও এই আন্দোলনকে সমর্থন জানানো হয়েছে ।

এদিকে, আজ রাজ্যের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে বহির্বিভাগের পাশাপাশি এমারজেন্সি বিভাগেও কর্মবিরতি চলবে বলে জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে জানানো হয়েছে । এর পাশাপাশি সকাল 9টা থেকে রাত 9টা পর্যন্ত ডাক্তারদের পাঁচটি সংগঠনের যৌথমঞ্চ রাজ্যের প্রতিটি সরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগ বয়কটের ডাক দিয়েছে । মঞ্চে থাকা একটি সংগঠনের সদস্যরা গণছুটি নিয়ে বহির্বিভাগ বয়কটে সামিল হবেন বলে জানানো হয়েছে । এর পাশাপাশি যেসব ডাক্তার প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেন তাঁদের চেম্বারও আজ সকাল 9টা থেকে রাত 9টা পর্যন্ত বন্ধ রাখার ডাক দিয়েছে ওই যৌথ মঞ্চ । সব মিলিয়ে আজ রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবা ব্যবস্থা সংকটে পড়তে চলেছে বলে মনে করছে বিভিন্ন মহল ।

Intro:কলকাতা, ১১ জুন: দিনভর দফায় দফায় আলোচনা। স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য আশ্বাস, অনুরোধ। এর পরেও কর্মবিরতি সহ অবস্থান-বিক্ষোভে অনড় রয়েছেন NRS মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তাররা। যার জেরে ব্যাহত হচ্ছে পরিষেবা। NRS-র এই ঘটনার জের কলকাতা সহ রাজ্যের প্রতিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পড়েছে। এই সব স্থানের জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ মঙ্গলবার কর্মবিরতি শুরু করেছে। বুধবার রাজ্য জুড়ে সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে ১২ ঘন্টার জন্য বহির্বিভাগ বয়কটের ডাক দিয়েছে চিকিৎসকদের পাঁচটি সংগঠন। NRS-এর এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। আর, এই ধরনের পরিস্থিতির মধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নতুন করে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাও দেখা যাচ্ছে। সব মিলিয়ে বুধবার রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবা ব্যবস্থা চরম সংকটে পড়তে চলেছে বলে মনে করছে বিভিন্ন মহল।
Body:মঙ্গলবার রাতে মুর্শিদাবাদ, বর্ধমান এবং মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনার কথা জানা গিয়েছে। এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গত সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে NRS মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। আক্রান্ত হন জুনিয়র ডাক্তাররা। অবস্থান বিক্ষোভের পাশাপাশি শুরু হয় কর্মবিরতি। পরিস্থিতি সামাল দিতে মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালে পৌঁছে যান রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা প্রদীপকুমার মিত্র। ছিলেন স্বাস্থ্য দপ্তরের অন্যান্য আধিকারিকও। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক হয় স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকদের। হাসপাতালে পৌঁছন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে মন্ত্রী নির্মল মাজি এবং কলকাতা পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মাও পৌঁছন। পরিস্থিতি সামাল দিতে বৈঠকেও বসেন তাঁরা। গত সোমবার পুলিশের তরফে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ উঠছে NRS-এর আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে। আন্দোলনরতদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর সামনে যেমন কলকাতা পুলিশ "শেম শেম", কলকাতা পুলিশ "হায় হায়" বলে আওয়াজ তোলেন আন্দোলনকারীরা। এমন আওয়াজ কলকাতা পুলিশ কমিশনারের সামনেও তোলা হয়। তেমনই, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে না চেয়ে আন্দোলনকারীদের তরফে দাবি জানানো হয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতি তাঁরা চাইছেন।

শেষ পর্যন্ত দিনভর আলোচনার শেষেও অনড় অবস্থানে রয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। মঙ্গলবার হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সংবাদমাধ্যমে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, "ওরা (আন্দোলনকারীরা) কতগুলো দাবি করেছিল যেমন, এখানে নিরাপত্তা আরও বাড়ানো, পুলিশের অ্যাক্টিভিটি আরও বাড়ানো। পুলিশ কমিশনার নিজেই এসেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে। পুলিশের তরফে যা যা পদক্ষেপ নেওয়ার, তার সব নেওয়া হবে। নিরাপত্তা থেকে সবকিছু যাতে আরও বেশি জোরদার হয়, সেগুলো দেখা হবে। ওরা ওদের আরও কতগুলো বক্তব্য আমাদের বলেছে। সেগুলি নিশ্চিত ভাবে আমরা দেখব কী করা যায়।"

পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী মঙ্গলবার বলেন, "কালকে হয়তো যতটা বেশি সক্রিয় হওয়ার কথা ছিল, ততটা সক্রিয় ছিল না। ওদের (আন্দোলনরতদের) এই অভিযোগ খতিয়ে দেখবেন পুলিশ কমিশনার‌।" অন্য মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালগুলিতেও প্রভাব ছড়িয়ে পড়েছে। এই বিষয়ে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, "আমরা অনুরোধ করব, যাঁরা রয়েছেন ছাত্ররা, তাঁরা তাঁদের পরিষেবা দিক যাতে কোনও মতে মানুষের পরিষেবা বিঘ্নিত না হয়‌, সেটা যেন তাঁরা দেখেন। আমাদের বিশ্বাস, যাঁরা ডাক্তার, তাঁরা মানুষের পরিষেবা দেবেন, এটাই তাঁদের সবার আগের মানসিকতা। এটা সর্বাগ্রে তাঁরা অগ্রাধিকার দেবেন। বাকি বিষয়গুলি আমরা দেখে নিচ্ছি।"

বেসরকারি একটি হাসপাতালে NRS-এর এক জুনিয়র ডাক্তারের চিকিৎসা চলছে। তাঁর শারীরিক অবস্থার বিষয়ে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, "আমি নিজে গিয়ে দেখে এসেছি এবং বারে বারে খবর নেওয়া হচ্ছে বেসরকারি হাসপাতালে যে জুনিয়র ডাক্তার ভর্তি রয়েছেন তাঁর শারীরিক অবস্থা স্টেবল, কথা বলছে। চিকিৎসা যা করার সেখানকার ডাক্তাররা করছেন। আমরা যোগাযোগ রেখে চলেছি। এর জন্য যে খরচ লাগবে তার সবটাই সরকার বহন করবে। মুখ্যমন্ত্রী এর জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।"

মঙ্গলবার স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, "সরকার সব সময় পাশে আছে। মুখ্যমন্ত্রীর ডাক্তারদের পাশে আছেন। ডাক্তারদের নিয়ে সব সময় তিনি চিন্তা ভাবনা করেন বলে বিভিন্ন সময় বৈঠক করেছেন। ডাক্তারদের প্রতি সম্পূর্ণ সহানুভূতি মুখ্যমন্ত্রীর আছে‌। যা পদক্ষেপ নেওয়ার তিনি মানবদরদী একজন মুখ্যমন্ত্রী, তার যা পদক্ষেপ যেখানে নেওয়ার প্রয়োজন হয়েছে তিনি সব সময় সেই পদক্ষেপ নিয়েছেন এবং আগামী দিনেও যা তাঁর করার, তাঁকে বলে দিতে হয় না, তিনি নিজে যেটা করার, তিনি নিজেই সচেষ্ট।"

জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি এবং অবস্থান-বিক্ষোভ প্রত্যাহারের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, "আমি অনুরোধ করছি যাতে এখানকার ডাক্তাররা তাঁদের যে কর্মবিরতি, সেটা তুলে নেন‌। এই কর্মবিরতি যাঁরা করছেন, এটা নিশ্চিত ভাবে তাঁদের ব্যাপার। অনুরোধ করাটা আমার ব্যাপার। আমি তো জোর করে তাঁদের তুলে দিতে পারি না। আমার নিশ্চিত বিশ্বাস যে তাঁরা পুরো জিনিসটা ভালো করে পর্যালোচনা করবেন এবং দেখবেন যে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন। এবং, তাঁরা মানুষের পরিষেবা থেকে যাতে বিরত না থাকেন, এই হাসপাতাল এবং অন্যান্য হাসপাতালে সেটা তাঁরা দেখবেন।"Conclusion:তবে, এর পরেও পরিস্থিতির তেমন বদল ঘটেনি বলে মনে করছে চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠন। মঙ্গলবার বিকালে এবং সন্ধ্যায় বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তাররা মিছিল করে NRS-এ এসে আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন। ডাক্তারদের বিভিন্ন সংগঠনের তরফেও এই আন্দোলনকে সমর্থন জানানো হয়েছে। এদিকে, বুধবার রাজ্যের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে বহির্বিভাগের পাশাপাশি ইমারজেন্সি বিভাগেও কর্মবিরতি চলবে বলে জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে জানানো হয়েছে। এর পাশাপাশি সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ডাক্তার দের পাঁচটি সংগঠনের যৌথমঞ্চ রাজ্যের প্রতিটি সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগ বয়কটের ডাক দিয়েছে। মঞ্চে থাকা একটি সংগঠনের সদস্যরা গণছুটি নিয়ে বহি বিভাগ বয়কটের শামিল হবেন বলে জানানো হয়েছে। এর পাশাপাশি যেসব ডাক্তার প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেন তাঁদের চেম্বারও আগামীকাল সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বন্ধ রাখার ডাক দিয়েছে ওই যৌথ মঞ্চ। সব মিলিয়ে বুধবার এ রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবা ব্যবস্থা সংকটে পড়তে চলেছে বলে মনে করছে বিভিন্ন মহল।

_______
চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যর বাইট RAP-এ পাঠানো আছে
_______




Last Updated : Jun 12, 2019, 7:44 AM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.