কলকাতা, 11 জুলাই : বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটার থেকে পশ্চিমবঙ্গে আবার শুরু হয়েছে লকডাউন। তবে শুধুমাত্র কনটেইনমেন্ট জ়োনগুলিতে আঁটোসাঁটো করা হয়েছে লকডাউনের নিয়ম। প্রথমদিন শহরে গণপরিবহন স্বাভাবিক থাকলেও শুক্রবার বেলা বাড়ার সাঙ্গে সাঙ্গে কমতে থাকে গণপরিবহন। এরফলে সমস্যায় পড়তে হয় নিত্য যাত্রীদের।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাস্তায় বেসরকারি বাস, অটো ও ট্যাক্সি থাকলে শুক্রবার সংখ্যা অনেকটাই কমে যায়। আজ সেই সংখ্যা ঠেকেছে তলানিতে ৷ শহরের প্রধান জনপথগুলি কোনটেইনমেন্ট জ়োনের আওতার বাইরে তাই প্রশাসনের তরফে গণপরিবহন স্বাভাবিক রাখার কথা বলা হয়েছিল। তবে একদিকে যাত্রীর অভাব অন্যদিকে জ্বালানির দাম আকাশ ছোঁয়া ৷ পরিষেবা দিতে গড় রাজি ছিল বেসরকারি বাস ও মিনিবাসগুলি । এই পরিস্থিতে পুনরায় লকডাউনের জেরে রাস্তা বাসের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে 20 থেকে 30 শতাংশে ।
জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বার সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "বাসের সংখ্যা অনেকটাই কমেছে ৷ কারণ দুই 24 পরগনায় যে বাসের কর্মী-চালকেরা থাকেন তাদের অনেকেই আসতে পারেছেন না। আবার অনেকে ভয়ে আসছেন না । তাই চালক-কর্মীর অভাবে বাস পথে নামানো যায়নি। এছাড়া বাস কর্মীরা একটা আতঙ্কের মধ্যে ভুগছে। এই অবস্থায় তারা কাজে যোগ দিতে চাইছে না। বহু শ্রমিক দিনের বেলায় কাজ করে রাতে বাসেই ঘুমায়। তারাও এখন আর বাসে থাকতে চাইছে না। তাই শ্রমিকের অভাবে বহু গাড়ি আজকে পথে নামতে পারেনি। সংগঠনের তরফে তাই বাধ্য হয়ে শ্রমিকদের ছাড় দিতেই হচ্ছে।"
মিনিবাস কো-অর্ডিনেশন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক স্বপন ঘোষ বলেন, বৃহস্পতিবারের তুলনায় শুক্রবার মিনি বাসের সংখ্যা অনেকটাই কমছিল। মূল কারণ হল রাস্তায় লোক নেই ও জ্বালানি দামের অতিরিক্ত বৃদ্ধি ৷ সেই সঙ্গে যেভাবে হুহু করে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে এর ফলে সাধারণ মানুষ অনেকটাই ভীত হয়ে পড়েছেন। অনেকেই বাড়ি থেকেই বেরোচ্ছেন না। সংক্রমণের ভয়ে বেশিরভাগ মানুষ এখন গণপরিবহন এড়িয়ে চলছে। আবার গতকাল থেকে বহু জায়গায় অফিস-কাচারি, ব্যাঙ্ক, দোকান-পাট সহ অনেক কিছুই বন্ধ। এই পরিস্থিতিতে বাস পথে নামিয়ে 500 টাকাও আয় হচ্ছে না।"
ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস-মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপনারায়ণ বসু বলেন, "উত্তর কলকাতায় হাতেগোনা কয়েকটি বাস ও মিনিবাস ছাড়া খুব একটা বাস চলছে না। সকালের দিকে কিছু সংখ্যক বাস চোখে পড়লোও 12টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে পরিষেবা হ্রাস পেতে থাকে। পথে যাত্রী নেই। কে চড়বে বাস ? অন্যদিকে বাসের কর্মীরা যেসব এলাকায় থাকে সেই রকম বহু জায়গায় লকডাউনের ফলে অনেকেই বাড়ি থেকে বেরোতে পারেনি ৷ এই পরিস্থিতিতে বাস থাকলেও বাস চালাবার লোক নেই।"