কলকাতা, 23 জুন: রাজ্যপাল তাঁর জয়েনিং রিপোর্ট ফিরিয়ে দিয়েছেন ৷ ফলে তাঁর নিয়োগ নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে ৷ তার উপর বারবার তাঁকে আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছে ৷ সবমিলিয়ে বেশ অস্বস্তিতে থাকা রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীবা সিনহার গলায় এ বার শোনা গেল হতাশার সুর ৷
তাঁকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার হিসেবে মনোনীত করলেও তাঁর জয়েনিং রিপোর্ট রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ফিরিয়ে দেওয়ায় তাঁর নিয়োগের বৈধতা নিয়েই জটিলতা দেখা দিয়েছে ৷ যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজীবা সিনহার পাশে দাঁড়িয়েছেন ৷ তবু স্বয়ং রাজ্য নির্বাচন কমিশনার যথেষ্ট অস্বস্তিতে রয়েছেন বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল ৷ গতকাল থেকেই তাঁর পদত্যাগ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা ৷
যদিও রাজ্যপালের পদক্ষেপকে অসাংবিধানিক বলে দাবি করে রাজীবা সিনহার পাশে দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তিনি বলেন, ইমপিচমেন্ট ছাড়া রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে সরানো যাবে ৷ রাজ্যপাল জয়েনিং রিপোর্ট গ্রহণ না করলেও রাজীবা সিনহাই পঞ্চায়েত নির্বাচনের কাজ চালিয়ে যাবেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী ৷ তাঁর আশ্বাসবাণীর পরও রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের উপর থেকে যে চাপ কাটেনি, তা বোঝা গেল তাঁর আজকের কথায় ৷ কোথাও যেন হতাশা ধরা পড়ল তাঁর গলায় ৷ আজ সকালে তিনি নির্বাচন কমিশনের অফিসে প্রবেশের সময় তাঁকে রাজ্যপালের পদক্ষেপের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে রাজীবা সিনহা বলেন, "কী আর বলব আমি ? কিছু বলার নেই ।"
আরও পড়ুন: 274টি পদে কোনও বিরোধী প্রার্থীর মনোনয়ন জমা দিতে ইচ্ছে হয়নি ? বিস্মিত প্রধান বিচারপতি
এ দিকে, দীর্ঘ টালবাহানা, আইনি টানাপোড়েনের পর অবশেষে রাজ্যে আসতে চলেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী । পঞ্চায়েত নির্বাচনের নিরাপত্তা সুরক্ষিত রাখতে আজ বিকেল থেকেই ধাপে ধাপে রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী এসে পৌঁছবে ৷ পঞ্চায়েত ভোটে ভিন রাজ্যের পুলিশ থাকলেও আদালতের নির্দেশের পর এখনও পর্যন্ত মোট 822 কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য আবেদন করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ।
প্রথমে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল ৷ সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশ বহাল রাখার পর, রাজ্য নির্বাচন কমিশনার প্রথমে পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য 22 কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য আবেদন করেছিলেন ৷ এ জন্য তাঁকে হাইকোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় ৷ আদালত নির্দেশ দেয়, রাজ্যে হিংসার ঘটনা ঘটে চলেছে ৷ ফলে এ বারের নির্বাচনে যেন 2013 সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের থেকে কম কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন না হয় ৷ এরপরই আরও 800 কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য আবেদন জানান রাজ্য নির্বাচন কমিশনার ৷ আজ বিকেল থেকেই ধাপে ধাপে রাজ্যে প্রবেশ করতে শুরু করবে বাহিনী ৷