কলকাতা, 4 জুলাই: সভা সমাবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না বিরোধী দলগুলিকে ৷ এই দাবিতে হাইকোর্টে আবেদন জানালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Opposition party is not allowed to hold meetings and processions says suvendu adhikari to high court)। পয়গম্বর মহম্মদকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের পর থেকে রাজ্য পুলিশ দ্বিচারিতা করছে বলেও সোমবার আদালতে উল্লেখ করেন শুভেন্দুবাবুর আইনজীবী ।
কারণ একদিকে আদালতে বলা হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আবার অন্যদিকে ভারতীয় জানতা পার্টির নেতা-নেত্রীরা কোথাও যেতে চাইলে 144 ধারা জারির নাম করে যেতে দেওয়া হচ্ছে না । মিটিং-মিছিলও করতে দেওয়া হচ্ছে না । নদিয়ার নাকাশিপাড়ায় একটি রাজনৈতিক সভা করার আর্জি জানালে পুলিশ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয় বলে অনুমতি দেয়নি । তার বিরুদ্ধেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন বিরোধী দলনেতা ।
আরও পড়ুন : 'জ্যাঠামশাই'-এর সঙ্গে তিক্ততায় ইতি ! মুখোমুখি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ও অরুণাভ ঘোষ
বিরোধী দলনেতার তরফে আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী সোমবার প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে জানান, নাকাশিপাড়ায় ঝামেলার পরিপ্রেক্ষিতে 144 ধারা জারি করা হয় ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে । রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হয়ে ওঠায় একাধিক জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় । সেই পরিপ্রেক্ষিতে 13 জুন আদালত নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্যকে পরিস্থিতির উপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে । যদি না-পারে তাঁরা কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য চাইতে পারে । 14 জুন 2022 নাকাশিপাড়ায় ব্যক্তিগত ও সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা হয় । গাড়ি ভাঙচুর করা হয় । 15 জুন হাইকোর্ট ফের নির্দেশ দেয় রাজ্যকে গ্রাউণ্ড সিচুয়েশন ভালো করে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে । কিন্ত 24 জুন রাজ্য রিপোর্ট দিয়ে জানায় পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে । লোকের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে প্রচার করা হচ্ছে । ভারতীয় জনতা পার্টি ওই এলাকায় একটা মিটিং করার অনুমতি চাইলে 21 জুন তারিখ পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেটকে রিপোর্ট দিয়ে জানায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো নয় । তাহলে কোন বক্তব্য সঠিক ? 144 ধারা জারি করা মানে গণতান্ত্রিক মত প্রকাশকে রুদ্ধ করা যায় না । সুপ্রিম কোর্টের পরিষ্কার নির্দেশ রয়েছে ।
আরও পড়ুন : মাদক মামলায় পণ্য বাজেয়াপ্ত করলে ভিডিয়োগ্রাফি বাধ্যতামূলক, নির্দেশ হাইকোর্টের
এর বিরুদ্ধে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, "এই ধরনের আবেদন আদালতের বাতিল করা উচিত । জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল হাওড়া, অঙ্কুরহাটিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জন্য । 14 জুনের একটা রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে আপত্তি তোলা হয়েছে । নদিয়ার নাকাশিপাড়ার 'দেশবন্ধু পাঠাগার' যেখানে 13 তারিখ প্রতিবাদের ঘটনা ঘটেছিল । সেই জায়গায় মিটিং করার অনুমতি চাওয়া হয় । সেখানে রিপোর্টে পরিষ্কার বলা হয় যে ওই এলাকার পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে । এখনও ওই জায়গায় সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হচ্ছে । সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি যাতে বজায় থাকে । ফলে এই ধরনের মামলা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ।"
এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে বিরোধী দলনেতার আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তীর বক্তব্য, "কিন্তু মিটিং বাতিল করার জন্য 144 ধারার অজুহাত কি ঠিক ?"
পাশাপাশি রাজ্যকে এই ব্যাপারে তাঁদের অবস্থান স্পষ্ট করার জন্য রাজ্যকে রিপোর্ট দিতে বলা হোক বলেও আবেদন জানান তিনি ৷ যদিও প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ আপাতত এই মামলায় কোনও রায়দান করেনি ।
আরও পড়ুন : শুভেন্দুর বিরুদ্ধে অভিষেকের মানহানির মামলা স্থানান্তরের নির্দেশ হাইকোর্টের