কলকাতা, 12 জুলাই: ভোট শেষ । বুধবার পঞ্চায়েত ভোটের ফল নিয়ে মুখ খুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। কিন্তু, তারপরও তিনি যা বললেন এবং দাবি করলেন তাতে নতুন বিতর্কে জন্ম নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পালটা তীব্র কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিরোধীরা । এমনকী, ভোটে যা হয়েছে তার পরিণতি ভোগ করতে হবে তৃণমূলকে। এমন হুঁশিয়ারিও দিচ্ছেন কেউ কেউ।
রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটে এখনও পর্যন্ত হিংসার বলি প্রায় 35 জনেরও বেশি। মনোনয়ন পর্বের শুরুর দিন থেকে হিংসা, হানাহানি, রক্তপাতের একই ছবি দেখা গিয়েছে ভোটের ফলে ঘোষণার দিন পর্যন্ত । এরপর অবশেষে বুধবার সন্ধ্যায় নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি প্রত্যাহার করে নিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন । মুখ্যমন্ত্রীও ভোট হিংসা নিয়ে মুখ খুলেছেন । কিন্তু তাঁর বক্তব্যে ফের নতুন করে সমালোচনার হাতিয়ার উঠে এসেছে বিরোধীদের হাতে । মুখ্যমন্ত্রীকে পালটা আক্রমণও করেছেন বিরোধী নেতারা । বিশেষ করে রাজ্যসভার সিপিএম সাংসদ তথা আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য্য তীব্র কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন মমতার দিকে । অন্যদিকে, প্রদেশ কংগ্রেস নেতা সৌম্য আইচ রায়ও মুখ্যমন্ত্রীর কড়া সমালোচনা করেন।
পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে লাগাতার হিংসা, মৃত্যুতে কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটের ফল ঘোষণার পর মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, "19 জন মারা গিয়েছে। সাত জনের মৃত্যু হয়েছে ভোটের দিন। প্রত্যেক পরিবারকে দুই লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।" সার্বিকভাবে ত্রিপুরা-সহ দেশের একাধিক রাজ্যের হিংসা, প্রসাশনিক ব্যবস্থার সঙ্গে তুলনা টেনে বাংলার পরিস্থিতি অনেক ভালো বলেও দাবি করেন তিনি। যা নিয়ে বিরোধীরা পালটা আক্রমণ করে মমতাকে। রাজ্যসভার সিপিএম সাংসদ বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য্য বলেন, "রাজ্যে গণতন্ত্রকে খুন করেছেন মমতা। উনি আবার বড় বড় কথা বলছেন! পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের গুন্ডা বাহিনী তাণ্ডব চালিয়েছে। 60-এর বেশি সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।"
আরও পড়ুন: বিজেপির টাকার উৎস কি ? তদন্ত চান মমতা
বিকাশ রঞ্জন আরও বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী বলছেন 19 জনের মৃত্যু হয়েছে । তাঁরা তৃণমূলের কর্মী ছিলেন। কিন্তু, বাকি মৃতদের পরিবার বাদ দিয়ে সরকারি টাকা কীভাবে ওই 19 জনকে দেওয়া হয়, সেটাও আমরা দেখব। মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসে দলীয় 21 জুলাইয়ের কথা বলছেন ! উনি সরকার আর দল এক করে ফেলেছেন। যার ফল ওঁকে ভোগ করতেই হবে।" প্রদেশ কংগ্রেস নেতা সৌম্য আইচ রায় বলেন, "বাংলার গণতন্ত্রকে দায়িত্ব নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেষ করেছেন। তাঁর মুখে এই সমস্ত কথা মানায় না। উনি বলেছেন বাংলার কুৎসা করা হচ্ছে, কিন্তু, গত 11 বছরে এমন সন্ত্রাস চালিয়েছেন, যে দেশের কাছে বাংলার সম্মান হেট হয়ে গিয়েছে। 50 জনের বেশি মারা গেল। উনি বলছেন, 19 জন মারা গিয়েছে। এতেই বোঝা যায় উনি কত বড় মিথ্যাবাদী।"