কলকাতা, 2 জুন : ১ জুন থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় স্কুল থেকে মিড-ডে মিল বাবদ চাল-আলু বিতরণের কাজ শুরু হয়েছে । আমফান বিধ্বস্ত বেশ কয়েকটি জেলার ক্ষেত্রে এই সপ্তাহেই শুরু হয়ে যাবে বিতরণের কাজ। তবে, যে সব স্কুলকে আমফান শেল্টার এবং COVID-19-এর জন্য কোয়ারানটিন সেন্টার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে সেখান থেকে চাল-আলু বিতরণ করা যাবে না। সেইসব স্কুলের ক্ষেত্রে বিকল্প কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে জেলা প্রশাসনকে। জেলা প্রশাসনগুলিকে এমনই বলা হয়েছে রাজ্য স্কুলশিক্ষা দপ্তরের তরফে। সেই মর্মে বেশ কয়েকটি জেলায় রাজ্য প্রশাসন নির্দেশিকাও জারি করেছে।
রাজ্যের অধিকাংশ জেলায় ১ জুন থেকে মিড-ডে মিলের জন্য দুই কেজি চাল ও দুই কেজি আলু পড়ুয়াপিছু বিতরণের কাজ শুরু হয়েছে । পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পশ্চিম বর্ধমানের মতো জেলাগুলিতে ১-৬ জুন পর্যন্ত চলবে এই বিতরণের কাজ। আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি জেলায় কোথাও ৫ জুন, কোথাও ৮ জুন থেকে শুরু হবে অভিভাবকদের মধ্যে চাল-আলু বিতরণের কাজ৷ চলবে ১৩-১৫ জুন পর্যন্ত। কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়ার মতো যে সব জেলায় ৫ অথবা ৮ জুন চাল-আলু বিতরণ কর্মসূচি শুরু হবে, সেখানকার স্কুলগুলিতে অন্যান্য দফার মতো এখন বিতরণের প্রস্তুতি চলছে। তবে, ঘূর্ণিঝড় আমফানের হাত থেকে বাঁচাতে বেশ কয়েকটি জেলার বহু মানুষকে সরিয়ে এনে শেল্টারে রাখা হয়েছে। শেল্টার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বহু স্কুলকে। আবার রাজ্যে যে সকল পরিযায়ী শ্রমিক আসছেন তাঁদের রাখা হয়েছে বিভিন্ন স্কুলে। গতকালই শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সাত হাজারের বেশি স্কুল-কলেজকে পরিযায়ী শ্রমিকদের কোয়ারানটিন সেন্টার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
আমফানের শেল্টার বা কোয়ারানটিন সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত স্কুলগুলি থেকে কীভাবে বিতরণ করা সম্ভব হবে মিড-ডে মিলের চাল-আলু? স্কুলশিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কোন কোন স্কুল বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এইসব কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে তার তথ্য জেলা প্রশাসনের কাছে আছে। তাই ওইসব স্কুলের মিড-ডে মিল বিতরণের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করতে তাদেরই বলা হয়েছে। সেই অনুযায়ী জেলা প্রশাসনের তরফে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। বিভিন্ন জেলায় BDO-দের উপর বিকল্প ব্যবস্থা করার অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যেমন, উত্তর ২৪ পরগনার DM-এর মিড-ডে মিল সেল থেকে জারি করা নির্দেশিকায় মিড-ডে মিলের চাল-আলু বিতরণের জন্য অন্যান্য সব নিয়মের পাশাপাশি বলা হয়েছে, যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আমফান শেল্টার বা COVID-19-এর জন্য কোয়ারানটিন সেন্টার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে সেইসব স্কুলের মিড-ডে মিল বিতরণের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে সংশ্লিষ্ট BDO বা EO-কে। অন্যান্য দুই দফার মতো এবারও বরাদ্দের চাল-আলু নিতে পড়ুয়ারা স্কুলে যাতে না আসে তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। কোনও অভিভাবকের মধ্যে কোরোনা ভাইরাসের উপসর্গ দেখা গেলে তাঁকেও আসতে নিষেধ করা হয়েছে। কিছু জেলায় ওই পড়ুয়াদের জন্য বরাদ্দের চাল-আলু হোম ডেলিভারির মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।