কলকাতা, 11 মে : সাংসদই থাকবেন নিশীথ প্রামাণিক এবং জগন্নাথ সরকার । ছেড়ে দেবেন দিনহাটা ও শান্তিপুরের বিধায়ক পদ । এমনটাই চাইছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব । আর তাতেই সম্মতি দিয়েছে রাজ্য বিজেপি । মঙ্গলবার বিষয়টি মেনে নিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ।
সূত্রের খবর, গত শনিবার দিল্লিতে রাজ্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব । বৈঠকের পরই দুই সাংসদের বিধায়ক পদ ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় । সোমবার কলকাতায় দলের বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে এবিষয়ে বিশেষ আলোচনা না হলেও দিনহাটা ও শান্তিপুরে উপনির্বাচনের জন্য ভিতরে ভিতরে প্রস্তুতি শুরু করে দেওয়ার চিন্তা ভাবনা রয়েছে বিজেপির । ইতিমধ্যেই বিজেপি-র 77 জন বিধায়কের সিংহভাগই বিধানসভায় এসে শপথ নিয়েছেন । কিন্তু সেই তালিকায় এখনও পর্যন্ত নাম নেই নিশীথ ও জগন্নাথের । তা নিয়ে জল্পনা চললেও দু’জনেই সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, দল যা সিদ্ধান্ত নেবে তাই মেনে নেবেন তাঁরা । বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য জানালেন, 'নিশীথ প্রামাণিক ও জগন্নাথ সরকার সাংসদ থাকছেন । তাঁরা বিধায়ক পদ ছেড়ে দেবেন । দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে । আমরা সেটা মেনেও নিয়েছি । '
প্রসঙ্গত একুশের বিধানসভা নির্বাচনে লোকসভার 8 সাংসদকে প্রার্থী করেছিল বিজেপি । ফলাফলে দেখা গিয়েছে, তাদের মধ্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় ও হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় পরাজিত হয়েছেন । কিন্তু মাত্র 59 ভোটের ব্যবধানে হলেও তৃণমূলের উদয়ন গুহকে হারিয়ে দিনহাটা থেকে বিধায়ক হয়েছেন নিশীথ প্রামাণিক, আবার শান্তিপুরে রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার 15,878 ভোটে জয়ী হয়েছেন ।
নিশীথ-জগন্নাথ বিধায়ক পদ ছেড়ে দিলে দিনহাটা ও শান্তিপুরে উপনির্বাচন হবে । তবে রাজ্যে আরও কমপক্ষে 2 টি আসনে উপনির্বাচন হবেই । ফল ঘোষণার আগেই খড়দহ আসনে জয়ী তৃণমূলের কাজল সিনহার মৃত্যু হয়েছে । সেখানে উপনির্বাচন করতে হবে । নন্দীগ্রামে বিজেপি জয় পাওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও কোনও একটি আসন থেকে জিতে আসতে হবে । সোমবার শপথ নেওয়া অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রও এবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি । সেই কারণে মমতা ও অমিতের জন্য 2 টি আসনে উপনির্বাচন হবে । তাঁদের একজন খড়দায় প্রার্থী হলেও অন্য একটি কেন্দ্রে কোনও বিধায়ককে পদ ছাড়তে হবে ।
আরও পড়ুন : মৃত্যু সংবাদ ভুয়ো, ভাল আছেন বুদ্ধদেব গুহ
বাংলায় দল ক্ষমতায় এলে বিজেপি নেতৃত্বের ভাবনা ছিল কোচবিহার ও রানাঘাট লোকসভা আসনে উপনির্বাচনে দলের নতুন কোনও প্রার্থীকে জিতিয়ে আনা হবে । কিন্তু এখন পরিস্থিতি অন্য রকম । তাই উপনির্বাচনে দিনহাটা ও শান্তিপুরে দখল কায়েম রাখা বিজেপি-র কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে । কারণ, সাধারণ ভাবে দেখা যায় উপনির্বাচনে শাসকদলের লড়াইটা শুরু হয় কিছুটা এগিয়ে থেকে ।