কলকাতা, 28 এপ্রিল : কোরোনা সংক্রমণের পরিস্থিতিতে সমগ্র দেশের পাশাপাশি এ রাজ্যেও রেকর্ড সংখ্যা কমেছে ESI এবং EPF-র নতুন সদস্য । বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাজ্যের শ্রমদপ্তর । এর ফলে একদিকে যেমন প্রত্যন্ত এলাকার শ্রমজীবী গরিব মানুষের যথাযথ চিকিৎসা হবে না । তেমনই সংক্রমণ ছড়াতে পারে আক্রান্ত ব্যক্তির থেকে । সচেতনতার অভাবে সংক্রমণের পরও অনেকে লুকিয়ে রাখছেন । ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রচার এবং সচেতনতা বৃদ্ধি করা হয়েছে । বিশেষ করে রাজ্যের চা বাগান, কয়লা খনি এবং বিভিন্ন অসংগঠিত শ্রমিক ক্ষেত্র গুলিকে ।
এমপ্লয়িজ় স্টেট ইনসিওরেন্স কর্পোরেশনের আওতায় আসা নতুন সদস্য সংখ্যা গত কয়েক মাসে অনেকটাই কমে গিয়েছে । শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক জানান, গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বর এবং চলতি বছরের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি-সহ এখনও পর্যন্ত 12.67 লাখ সদস্য ছিল ESIC-তে । গত বছরের শেষের দিকেই এই সংখ্যা ছিল 14.59 লাখ । 2019-20 অর্থবছরে মোট 1.49 কোটি সদস্য ছিল ESIC-তে । চলতি আর্থিক বছরের তুলনায় আগের আর্থিক বছরে দেখা যাচ্ছে, 3.50 কোটি মানুষ এই এমপ্লয়িজ় স্টেট ইনসিওরেন্সের অধীনে ছিলেন । কেন এমন ঘটছে, বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে । যে সমস্ত কম্পানি এখনও পর্যন্ত তাদের কর্মীদের নিয়ম মেনে ESIC-র অন্তর্ভুক্ত করেনি তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক ।
একই সঙ্গে কমেছে কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ডে নতুন খাতা খোলা নতুন সদস্য সংখ্যাও । কেন্দ্রের ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকাল অফিসের এক রিপোর্ট উদ্ধৃত করে মন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, "EPFO-র ছাতার তলায় নিট 10.08 লাখ নতুন কর্মী শামিল হলেও তা আগের বছরের শেষ মাসের 10.09 লাখ থেকে একটু কম ।" সংশ্লিষ্ট মহলের যুক্তি, বহু অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মী শ্রমিকরাও অনেক সময় নিয়মিত বেতনের আওতায় আসেন । তখন সরকারের এইসব সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয় তাঁদেরও । ফলে এগুলিকে শুধু নতুন কাজ তৈরির হিসেব বলে ধরা যায় না । ভয়ংকর দুর্দিনের মধ্যে দেশের অর্থনীতি । এই সময়ে সংশ্লিষ্ট দু'টি সুরক্ষা প্রকল্পের এভাবে নতুন সদস্যের সংখ্যা কমে যাওয়া, দেশ যে কঠিন সময়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তারই বার্তা দেয় বলে মন্তব্য করেছেন মন্ত্রী ।
সুরক্ষা প্রকল্পে যোগ দেওয়া নতুন সদস্যের এইসব হিসেবকে বিভিন্ন সময় নতুন চাকরি তৈরির পরিসংখ্যান বলে দাবি করেছে মোদি সরকার । অভিযোগ, রাজ্য সরকারের শ্রমমন্ত্রীর । সমগ্র বিষয়টি নিয়ে CITU-র সভাপতি সুভাষ মুখোপাধ্যায় বলেন, "প্রকৃত বিষয় হল মানুষ নিয়মিত বেকার হচ্ছে । সরকার কোনওরকমভাবেই মানুষের সঙ্গে নেই বলেই এই চূড়ান্ত দুর্দিনে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পগুলি থেকে দরিদ্র মানুষের নাম বাদ যাচ্ছে ।"