কলকাতা, 26 জুলাই: মনোনয়ন থেকে ভোট গণনা, গোটা পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্বে একের পর এক হিংসা ও অশান্তির সাক্ষী থেকেছে ভাঙড় ৷ একাধিক মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে দক্ষিণ 24 পরগনার ওই এলাকায়। পঞ্চায়েতের ভোট হিংসা নিয়ে এবার রাজ্য বিধানসভায় নিন্দা প্রস্তাব আনতে চলেছেন সেই ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। তিনি চান ভাঙড়ের এই হিংসার ঘটনা যেন বিধানসভার রেকর্ডে লেখা থাকে। মূলত সে কারণেই এই উদ্যোগ। প্রয়োজনীয় বিধায়ক না-থাকায় এই নিন্দা প্রস্তাব গৃহীত হলেও বিধানসভায় পাশ হবে না, তা জানেন নওশাদ ৷ তবুও তাঁর বিরোধিতা বজায় রাখতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি ৷
বুধবার রাজ্য বিধানসভায় তাঁকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "ভাঙড়ে ভোটের মনোনয়ন পর্ব থেকেই সন্ত্রাস হয়েছে। পুলিশের সহযোগিতায় বিরোধী আইএসএফের উপর আক্রমণ চালানো হয়েছে। ভোটের দিন আমাদের প্রার্থীদের বাড়ির মধ্যে আটকে রেখে দেওয়া হয়েছিল, তাঁদের ভোট কেন্দ্রে যেতে দেওয়া হয়নি। গণনা পর্বেও হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে, দুজন আইএসএফ কর্মী-সহ একজন পথ চলতি সাধারণ মানুষ মারা গিয়েছেন । এরপর পুলিশ ধরপাকড়ের নাম করে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছে ৷ যেভাবে আমাদের প্রার্থীদের করা হচ্ছে এসবের বিরুদ্ধে বিধানসভায় আমি নিন্দা প্রস্তাব আনার জন্য আবেদন জমা করেছি । এই নিন্দা প্রস্তাবে যাতে আলোচনা হয়, যাতে এই প্রস্তাব পাস করানো যায় তার জন্য যথাযথ প্রয়াস চালাব ।"
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত নিয়ে আলোচনা চাইছে তৃণমূলও, বিধানসভায় জানালেন পরিষদীয় মন্ত্রী
আইএসএফ বিধায়কের এই বক্তব্যের পালটা জবাব দিয়েছেন ভাঙড়ের তৃণমূল কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক শওকত মোল্লা। তিনি ভাঙড়ে এই অশান্ত পরিস্থিতির জন্য নওশাদকেই দায়ী করেছেন। শওকত এদিন বলেন, "নওশাদের কারণেই ভাঙড়ে 144 ধারা জারি হয়েছে । এই অবস্থায় বিধায়ক হিসেবে উনি বিধানসভায় আলোচনা চাইছেন ভালো কথা । কিন্তু উনার উচিৎ শান্তি স্থাপনের প্রয়াস চালানো ।"
আরও পড়ুন: ভাঙড় এবার কলকাতা পুলিশের অধীনে, ডিজিকে পদক্ষেপের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর
শওকত এদিন আরও জানান, ব্যবসায়ীরা তাঁদের মাল কেনাবেচা করতে পারছেন না। তারা অসুবিধার মধ্যে আছেন ৷ এর জন্য যদি কেউ দায়ী হয় তাহলে তিনি নওশাদ সিদ্দিকী এবং তাঁর গুন্ডাবাহিনী। এর পালটা নওশাদের কটাক্ষ, শওকত মোল্লা সাপ হয়ে কাটার চেষ্টা করছে । আবার ওঝা হয়ে ঝাড়ার চেষ্টা করছে । আর দু'য়ের মাঝে পড়ে ভুক্তভোগী হচ্ছে ভাঙড়। প্রসঙ্গত ভাঙড়ের যাবতীয় অশান্তির দায় নওশাদ সিদ্দিকী শওকত মোল্লা এবং রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে চাপিয়েছেন ।