কলকাতা, 17 অক্টোবর: দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাসের বই থেকে মুঘল সাম্রাজ্যের উপর গোটা অধ্যায় বাদ দিয়েছে এনসিইআরটি । এ ভাবে নতুন প্রজন্মকে ইতিহাস ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে অনেক আগেই । এই পরিস্থিতিতে মুঘল আমলের সৈন্যদের ব্যবহৃত অস্ত্রশস্ত্র সংরক্ষণ করা হবে কলকাতার প্রস্তাবিত মিউজিয়ামে । ইতিমধ্যে জয়পুর থেকে মুঘল আমলের সেই ঢাল, তলোয়ার, চেস্ট গার্ড, আর্ম গার্ড সংগ্রহ করে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়েছে । আরও কিছু পুরাতন ইতিহাস সমৃদ্ধ সামগ্রী সংগ্রহ করা হবে বলেও জানা গিয়েছে ।
পশ্চিমবঙ্গের অ্যাডমিনিস্ট্রেটর জেনারেল এবং অফিসিয়াল ট্রাস্টি বিপ্লব রায় ইটিভি ভারতকে বলেন,
"শুধু ব্রিটিশ আমল নয়, শেষের দিকের ব্যবহৃত কামানও প্রস্তাবিত মিউজিয়ামে সংরক্ষণ করা হবে । জয়পুরের এক পুরনো ফার্নিচার ব্যবসায়ী বিরাট সিংয়ের থেকে মুঘল আমলের এই রণসজ্জার সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে । সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত সম্পর্কের খাতিরে ওই ব্যবসায়ী মুঘল আমলের এই সামগ্রী হস্তান্তর করেছেন । আগামীতে আমি জয়পুরে যাব । আরও কিছু জিনিস সংগ্রহ করে আনব ।"
উদ্ধার হওয়া এই ঢাল, তরোয়ালে একাধিক জায়গায় উর্দুতে লেখা আছে । যেগুলি আল্লাহর নাম বলে দাবি করেছেন পশ্চিমবঙ্গের অ্যাডমিনিস্ট্রেটর জেনারেল এবং অফিসিয়াল ট্রাস্টি বিপ্লব রায় ।
তিনি ইটিভি ভারতকে বলেন, "ভগবান কৃষ্ণের যেমন 108টি নাম রয়েছে, তেমনই আল্লাহর 99টি নাম রয়েছে । 99টি নামের মধ্যে 21টি নাম ঢাল, তরোয়ালে লেখা রয়েছে । ঢাল, তরোয়ালের ওজন এবং তার দৈর্ঘ্য ও ব্যাসার্ধ থেকে স্পষ্ট যে, ব্যবহারকারীরা যথেষ্ট শক্তিশালী ও উচ্চতা সম্পন্ন ছিলেন । তারপরও তাঁরা আল্লাহর নাম ওই ঢাল ও তলোয়ারে লিখতেন । কারণ তখনকার সময় সেনারা বিশ্বাস করতেন, যে কোনও মুহূর্তে বা যে কোনও বিপদ থেকে আল্লাহ তাঁদের রক্ষা করবে । এ কারণেই ঢাল তরোয়ালে আল্লাহর নাম লেখা ।"
আরও পড়ুন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ফোন, দিল্লির অনুমতি নিয়ে কলকাতা ছাড়তে হবে রাজ্যপালকে
উদ্ধার বা মুঘল আমলের এই ঢাল তলোয়ার বা রণসজ্জার সামগ্রী খুব শীঘ্রই সাধারণ দর্শকদের জন্য প্রদর্শিত হবে এবং নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা ইতিহাসকে আরও ভালোভাবে জানবেন ও বুঝতে পারবেন বলে আশাবাদী বিপ্লব রায় । তবে শুধু মুঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাস বা ঢাল তলোয়ার নয়, পুরাতন কলকাতার একাধিক জায়গার ছবি, ব্রিটিশ আমলের একাধিক কমান্ড থেকে গোটা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মূর্তি থেকে একাধিক পুরাতন তথ্য বিপ্লব রায়ের দফতরে জমা রয়েছে । জমা পড়তে চলেছে 71-এর যুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণ করা অস্ত্রও । আগামী দিনে কলকাতার প্রস্তাবিত মিউজিয়ামে তা সংরক্ষণ করা হবে । ইতিমধ্যেই সংগৃহীত সামগ্রী বিভিন্ন বিভাগে ভাগ করে নাম্বারিং-এর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে ।