কলকাতা, 27 অগাস্ট: বেহালা সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দিরের প্রধান পুরোহিত সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্য মদ্যপ অবস্থায় নিজের গলায় ফাঁস লাগিয়েছিলেন । পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসছে এমন তথ্যই । সিদ্ধার্থের মৃত্যুতে তাঁর বান্ধবী ঝুমা রায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করেই এমন তথ্য পেয়েছে পুলিশ ।
ঝুমা দাবি করেছেন, সিদ্ধার্থ গলায় ফাঁস লাগাতে চেষ্টা করছেন তা দরজায় চাবি লাগানোর ফুটো দিয়ে দেখতে পান তিনি ৷ সেই সময় ঝুমা নিজের ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে বারবার দরজা ধাক্কা দিয়েছিলেন । তাঁদের ধাক্কায় দরজা খুলে যায় ৷ গলার ফাঁস কেটে নিয়ে যান বিদ্যাসাগর হাসপাতালে । সেখানে মৃত বলে ঘোষণা করা হয় সিদ্ধার্থকে ।
পুলিশ সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদে ঝুমা জানিয়েছেন, সাধারণভাবে রাতে সিদ্ধার্থ তাঁর বাড়িতেই ঘুমোতেন । মাঝে দু-তিনদিন পর্ণশ্রী রবীন্দ্রনগরের 542 FMB রোডের ঝুমার বাড়িতে আসেননি সিদ্ধার্থ । সেই সময়টায় তিনি থাকছিলেন ব্রাহ্মসমাজ রোডে নিজের বাড়িতে ।
ঝুমা জেরায় জানান, গতকাল বিকেলে সিদ্ধার্থ মদ্যপ অবস্থায় ঝুমার বাড়িতে আসেন । সঙ্গে আনেন একটি মদের বোতল । তিনি ওখানে মদ্যপানও করেন । তারপর ঝুমার পোষ্য কুকুরকে মেরে ফ্ল্যাট থেকে বের করে দেন । তখন ফ্ল্যাটে ঝুমা এবং সিদ্ধার্থ ছিলেন । ঝুমার ছেলে ধ্রুব ফ্ল্যাটের বাইরে ছিল ৷ কুকুরকে মারা নিয়ে বান্ধবী ঝুমার সঙ্গে সিদ্ধার্থর বচসা হয় । এর পর কুকুরকে ধরে আনার জন্য ঝুমা ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যান । তখন ঘরের দরজার ছিটকিনি লাগিয়ে দেন সিদ্ধার্থ । ঝুমা একা কুকুরটিকে ধরে আনতে পারছিলেননা ৷ তখন তিনি ছেলে ধ্রবকে ডাকেন । সে গিয়ে কুকুরটিকে ধরে নিয়ে আসে ৷ ফ্ল্যাটে ফিরে ঘরের দরজা বন্ধ দেখে তখন আর সিদ্ধার্থকে ডাকেননি ঝুমা ৷ এর পর প্রায় এক ঘন্টা সিদ্ধার্থ দরজা না খোলায় সন্দেহ হয় ঝুমার ৷ বারবার ধাক্কা দিতে থাকেন দরজায় । দরজা খোলেননি সিদ্ধার্থ ।
ঘড়ির কাঁটা 12টা পেরিয়ে গিয়েছে দেখে এরপর দরজার চাবির ফুটো দিয়ে ভিতরে দেখার চেষ্টা করেন ঝুমা ৷ তাঁর দাবি, ''আমি দেখি সিদ্ধার্থ গলায় দড়ি দেওয়ার চেষ্টা করছে । ছেলের সাহায্য নিয়ে কোনওভাবে দরজা খুলি । ততক্ষণে সিদ্ধার্থ গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়েছেন । বটি দিয়ে সিদ্ধার্থর গলার দড়ি কাটি ৷ নিয়ে যাই বিদ্যাসাগর হাসপাতালে । চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন সেখানে ৷''