কলকাতা, 20 মে: এ বছরের মধ্যেই রাজ্যবাসীকে এসপ্ল্যানেড থেকে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা দিতে বদ্ধপরিকর মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ । তাই পুরোদমে নিয়মিতভাবে চলছে মহড়া দৌড় । প্রতিদিন না-হলেও ধাপে ধাপে এবং বারে বারে করা হচ্ছে এই ট্রায়াল রান । শুক্রবার ফের ধর্মতলা থেকে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত মেট্রো রেক নিয়ে যাওয়া হল । প্রতিবার মহড়ার পর কোথায় কোথায় সমস্যা রয়েছে সেগুলি খতিয়ে দেখে আবারও ত্রুটিগুলি সংশোধন করা হচ্ছে । হুগলি নদীর নীচ দিয়ে মেট্রোর যেই অংশটি চলে গিয়েছে ৷ তার যাত্রাপথ হল প্রায় 520 মিটার । মেট্রোরেলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গ্রিন লাইন কমিশন হওয়ার পর এই দূরত্ব 45 সেকেন্ডের মধ্যে সম্পূর্ণ করা হবে ।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ট্রায়াল রানের জন্য প্রথমবার হুগলি নদীর নিচে প্রবেশ করানো হয় মেট্রোর একটি রেক । যদিও দু'টি রেক দিয়ে ট্রায়াল রান চলছে । গ্রিন লাইন তৈরি হয়ে গিয়েছে ৷ রাজ্যের এই মেট্রোটি হবে দেশের প্রথম মেট্রো পরিষেবা যেটি নদীর নীচ দিয়ে দৌড়বে । পাতাল রেল পথে যুক্ত হবে দুটি শহর । সেটি হল কলকাতা ও হাওড়া । ট্রায়াল রানের প্রথম দিন হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্লানেড পর্যন্ত প্রতিঘণ্টায় 15 থেকে 20 কিলোমিটার বেগে ট্রেন চালানো হয় । কলকাতা মেট্রোর পক্ষ থেকে আপাতত মোটর ম্যানের অভাব থাকায় বিইএমএলের চালকদের নিয়ে আশা হয়েছে ৷ টেস্ট এবং ট্রায়াল রান পর্বের জন্য বেঙ্গালুরু থেকে নিয়ে আসা হয়েছে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এই দু'জন মোটর ম্যানকে । যারা এই ট্রায়াল রান করছেন ।
আরও পড়ুন: ইতিহাস গড়ে গঙ্গার নীচ দিয়ে ছুটল রেক, মেট্রো রেলপথে জুড়ে গেল এপার-ওপার
উল্লেখ্য, কেএমআরসিএল-এর পক্ষ থেকে আগেই জানানো হয়েছিল যে চলতি বছরের ডিসেম্বরেই এসপ্ল্যানেড থেকে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত চালু হয়ে যাবে পরিষেবা । জলের উপর দিয়ে সেতু বন্ধন আগেই হয়েছিল ৷ এবার জলের নীচ দিয়ে রেল পথে জুড়ছে দুই শহর । ইস্ট এবং ওয়েস্ট বাউন্ড দুটি ট্যানেল । এক একটি 520 মিটার লম্বা । ঠিক হাওড়া ব্রিজের পাশ দিয়ে পাশাপাশি ছুটে গিয়েছে এই দু'টি টানেল । যুক্ত করেছে হাওড়া এবং কলকাতাকে । 2008 সালে প্রথম এই প্রকল্পের পরিকল্পনা করা হয়েছিল । এরপর দীর্ঘ সময় ধরে চলে ডিজাইনিংয়ের কাজ । তারপরে শুরু হয় নির্মাণ কাজ ।
15 টা বছর মাঝে পেরিয়েছে । কাজ এগিয়েছে ৷ তবে মাঝে আবার বউবাজার অংশে বিপর্যয়ের জন্য থমকে গিয়েছিল কাজ । তখন এই ট্যানেল ইস্ট ওয়েস্ট হয়ে উঠতে পারবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন উঠেছিল । তবে স্মার্ট ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বিদেশি ইঞ্জিনিয়রদের সাহায্যের ফলে সেই সমস্যা অতিক্রম করে এগিয়েছে কাজ । এবার মোটামুটি প্রস্তুত হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত । সাত মাস বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা চলবে । সিগন্যালিংয়ের কাজ চলবে । তারপরেই এসপ্ল্যানেড, মহাকরণ, হাওড়া এবং হাওড়া ময়দান খুলে যাবে সাধারণ মানুষের জন্য ।
আরও পড়ুন: আধিকারিকদের নিয়ে গঙ্গার নীচ দিয়ে পরীক্ষামূলক রান মেট্রোর