কলকাতা, ৩১ মার্চ: বসিরহাটের মাটিয়া এবং মালদার ইংরেজবাজারে ধর্ষণের (Matia Englishbazar rape) ঘটনায় রাজ্যকে হলফনামা দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট । এখনও পর্যন্ত তদন্তের পরিস্থিতি কী তা জানতে চেয়ে বিচারপতি বলেছেন, এই ঘটনার কেস ডায়েরি জমা দিতে হবে আদালতে (Calcutta HC on rape case)। সমস্ত রকমের চিকিৎসার সুযোগ করে দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । যে মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করা হয়েছে, তাতে হাসপাতালে বর্ষীয়ান চিকিৎসকদের রাখার নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ । বলা হয়েছে, আক্রান্তদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন তাঁদের বাবা-মা (Calcutta HC orders to submit case diary details report)।
রাজ্যের দু'জায়গায় ঘটে যাওয়া নারকীয় ঘটনা নিয়ে হাইকোর্টে দুটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন সুমিত্রা নিয়োগী ও সুস্মিতা সাহাদত্ত নামে দুই আইনজীবী । তাঁরা আজ আদালতে বলেন, "আত্মীয় পরিজনকে পর্যন্ত হাসপাতালে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে । বর্তমানে আরজিকর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে আক্রান্তরা । এর নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া দরকার ।"
তাঁরা আরও উল্লেখ করেন, "শেষ 15 দিনে রাজ্যে অন্তত 11টা ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে অল্পবয়সি মেয়েদের উপর । ভয় দেখিয়ে এটা করা হয়েছে ।" আদালতের তত্ত্বাবধানে অথবা সিবিআইয়ের মতো এজেন্সির হাতে তদন্তভার দেওয়া দরকার ।" ডাক্তারদের চিকিৎসার ব্যাপারেও সন্দেহ প্রকাশ করেন আইনজীবীরা ৷ যদিও এজি সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় সঙ্গে সঙ্গে আপত্তি জানিয়ে বলেন, আরজিকর রাজ্যের অন্যতম নামী হাসপাতাল । চিকিৎসকদের নিয়ে কোনও আপত্তি হওয়ার কথা নয় ।
আরও পড়ুন: Matia Rape Case : পাঁচদিন পর মাটিয়া ধর্ষণ-কাণ্ডে নমুনা সংগ্রহ ফরেন্সিক দলের, উঠছে প্রশ্ন
আক্রান্তদের চিকিৎসার ব্যাপারে একটা মেডিক্যাল বুলেটিন প্রকাশ করার আবেদন জানান আইনজীবীরা ৷ কী ধরনের চিকিৎসা হচ্ছে, নিগৃহীতারা কী পরিস্থিতিতে আছে, তা যাতে তাদের পরিবারের লোকেরা জানতে পারেন । অ্যাডভোকেট জেনারেল এই আবেদনে সম্মতি জানিয়েছেন । গ্রামের রাস্তায় যাতে লাইটের ব্যবস্থা করা যায়, মামলাকারী আইনজীবীরা সেই দিকটিও খতিয়ে দেখার আর্জি জানিয়েছেন আদালতের কাছে, যাতে এই ধরনের অনভিপ্রেত ঘটনা আর না ঘটে ।
অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, "এটা ঘৃণ্য অপরাধ তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই । রাজ্যকে এ ব্যাপারে রিপোর্ট দেওয়ার সময় দেওয়া হোক । বসিরহাটের মেয়েটি আপাতত চিকিৎসাধীন, ভাল আছে বলে আমরা খবর পেয়েছি । যথাযথ তদন্ত হচ্ছে ।" কেস ডায়েরি আদালতে দেওয়ার জন্য সময় দেওয়ার আর্জি জানান তিনি । তারপর আদালত যদি মনে করে, সে ক্ষেত্রে পরবর্তীতে যা নির্দেশ দেওয়ার দেবে ।
আরও পড়ুন: Malda girl raped: মালদায় দশম শ্রেণির ছাত্রীকে মুখ বেঁধে ধর্ষণ ! প্রতিবেশী যুবক পলাতক
সব পক্ষের বক্তব্যের পর প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যকে হলফনামা দিয়ে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কী তদন্ত হয়েছে এবং কেস ডায়েরি আদালতে পেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন । আগামী 4 এপ্রিল ফের শুনানি ।