কলকাতা, 13 অগস্ট: বছরখানেক আগের ভয়ংকর স্মৃতি ফিরল রতনবাবু ঘাটের ধারে থাকা বাসিন্দাদের । গত বছর ধস নেমেছিল রাস্তায় । ছোট ছোট একচিলতে ঘরগুলোতে একের পর এক ফাটল ধরেছিল । ফের গতকাল রাতে আচমকাই সেই ভয়াবহ কাণ্ড । রাস্তায় নতুন করে ধস নামায় প্রায় কয়েক ফুট গভীর গর্ত তৈরি হয়েছে । শুধু তাই নয় । একাধিক ঘরের মেঝে নেমে যায় বেশ কয়েক ফুট নীচে । দেওয়াল ভেঙে পড়ে সেই গর্তে । কোনওরকমে প্রাণ হাতে করে ছুটে বাইরে বেরিয়ে রক্ষা পান বাসিন্দারা ।
বছর খানেক আগেই এমন ফাটল ও ধসের কবলে পড়লেও তোয়াক্কা করেনি পৌর প্রশাসন । গত রাতে যে ঘটনা ঘটেছে, তাতে এলাকা জুড়ে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় । রাস্তায় এতটাই ধস নেমেছে যে, আশপাশে বেশ কয়েকটি ঘর যে কোনও মুহূর্তে ধসের কবলে পড়বে । এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা ।
তাঁরা জানাচ্ছেন, আশ্বাস মিলেছিল মৃত্যুপুরীর বদলে মিলবে মাথার উপর পাকা ছাদ, বাংলার বাড়ি । অস্থায়ী ভাবে একটি স্কুলবাড়িতে তাঁদের থাকতে দেওয়া হয়েছিল । তারপর দিনের পর দিন কেটেছে ৷ গঙ্গা দিয়ে বহু জল গড়িয়েছে । দেখা মেলেনি সেই এলাকার কাউন্সিলর কার্তিক মান্না থেকে শুরু করে বিধায়ক অতীন ঘোষের । বাংলার বাড়ির আশ্বাস মৌখিকই থেকে গিয়েছে । গত রাত থেকে এখনও পর্যন্ত কাউন্সিলর বা বিধায়ক আসেননি ঘটনাস্থলে । এলাকার একাধিক বাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে গিয়েছে, দেওয়াল পড়ে গিয়েছে । একাধিক নতুন বাড়িতে ফাটল ধরেছে । বর্ষা হলে রাস্তার গর্তের নীচে ফাঁপা মাটিতে আরও বসে যাবে নতুন বাড়ি । 25-30টির বেশি ঘরের বাসিন্দা এখন আতঙ্কে প্রমাদ গুনছেন । কবে মিলবে ফের মাথার উপর পাকা ছাদ ? জানতে চাইছেন তাঁরা ।
আরও পড়ুন: ফিরল 2019-এর বিভীষিকা, মেট্রোর কাজে বউবাজারের বহু বাড়িতে ফাটল
কলকাতা পৌরনিগম সূত্রে খবর, একটি ড্রেনেজ লাইন ছিল । পরিবেশ আদালতের চাপে দূষিত জল গঙ্গায় ফেলা বন্ধ করতে গিয়ে নিয়ম মাফিক কিছু করা হয়নি । শুধু মুখ আটকে দেওয়া হয়েছিল । আর সেই শতাব্দী প্রাচীন ইঁটের লাইনে জল জমে চার দিকে ফাঁক ছড়াতে থাকে ৷ নীচের মাটি ফাঁপা হয়ে গিয়ে ধস নামে । 1-2 ফুট নয়, প্রায় 6-7 ফুট অর্থাৎ এক মানুষের থেকেও বেশি লম্বা সেই গর্ত । বর্ষা নামতে পাইপের কাজ শুরু হয়েছিল । কিন্তু গতকাল আচমকাই ফের বছরখানেক আগের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল । সেই ভয়ংকর স্মৃতি ফিরল আরও ভয়ংকর হয়ে ।
এই বিষয় এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কার্তিক মান্না জানান, "লোক পাঠিয়েছি । মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে । অসুবিধার মুখে পড়া পরিবারগুলিকে স্থানীয় একটি স্কুলে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি । একটা জমি বাংলার বাড়ি করার জন্য চিহ্নিত করেছিলাম কিন্তু নথি নিয়ে ত্রুটি থাকায় সমস্যা তৈরি হয় । আমরা সরকারি হস্তক্ষেপ চেয়েছি । একটু সময় লাগবে তবে হয়ে যাবে ।"