কলকাতা, 2 অগস্ট: বিধানসভায় প্রায়শই শাসকদলকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করতে দেখা যায় যে রাজ্যকে বঞ্চনা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। আর এক্ষেত্রে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ থাকে, প্রতিহিংসার রাজনীতি করে রাজ্যের প্রাপ্য বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করছে গেরুয়া শিবির। অন্যদিকে বিজেপির অভিযোগ, শাসকের দুর্নীতির কারণেই নিজেদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রাজ্য। চুরি বন্ধ করলেই মিলবে প্রাপ্য। এই পরিচিত আবহের উলটো ছবি দেখা গেল রাজ্য বিধানসভায়। অভিযোগ প্রতি অভিযোগ থেকে দূরে গিয়ে এদিন বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গা দাবি করলেন, রাজ্যের সাহায্য পেলে রেলব্রিজের জন্য 100 শতাংশ অর্থ কেন্দ্রীয় সরকার তথা রেলমন্ত্রক থেকে নিয়ে আসার জন্য তদ্বির করতে পারেন তিনি।
বুধবার প্রশ্নোত্তর পর্বে রাজ্য বিধানসভায় তাঁর আনা প্রশ্ন নম্বর 50 অনুযায়ী পূর্ত দফতরের মন্ত্রী পুলক রায়ের কাছে বিজেপির মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গার প্রশ্ন ছিল, বীরপাড়ার 155 নম্বর রেলগেটে রেলওয়ে ওভারব্রিজ তৈরির কোনও পরিকল্পনা রাজ্য সরকারের আছে কি না। মন্ত্রী এই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে জানান, ইতিমধ্যেই এই নিয়ে ডিটেলস প্রজেক্ট রিপোর্ট বা ডিপিআর তৈরি হয়ে গিয়েছে। এক্ষেত্রে এই প্রকল্পের জন্য রেল এবং রাজ্য সরকার 50 শতাংশের হিসাবে অর্থ খরচ করে। তাই রেলের অনুমোদন এলেই এই বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এরপরই মনোজ টিগ্গা বিধানসভায় মন্ত্রীকে জানান, এই বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই রেল বোর্ডের কর্তাদের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। রাজ্য সরকার জমির ব্যবস্থা করলে 100 শতাংশ টাকাই কেন্দ্রের থেকে এনে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারেন তিনি। জবাবে অবশ্য মন্ত্রী বলেন, "ইতিমধ্যেই বিষয়টিতে ডিটেলস প্রজেক্ট রিপোর্ট তৈরি হয়ে গিয়েছে। আমি কথা দিচ্ছি আপনি যদি টাকার ব্যবস্থা করেন, জমির জরিপ থেকে শুরু করে ব্রিজ তৈরির কাজও আমরা শুরু করে দেব।" একইসঙ্গে, মন্ত্রী অনুরোধের সুরে বলেন, "আরও একাধিক ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যকে টাকা দিচ্ছে না।" এক্ষেত্রে তাঁরা যদি উদ্যোগী হয়ে টাকা নিয়ে আসার চেষ্টা করেন তাহলেও তিনি খুব খুশি হবেন।
আরও পড়ুন: 'এটা আমার বিষয় নয়', নুসরত প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী
প্রসঙ্গত, এদিন বিধানসভায় এই বক্তব্যের পর মন্ত্রী পুলক রায় নিজের ঘরে গিয়ে আলাদাভাবে বলেন, "এটা খুব ভালো প্রস্তাব। 100 দিনের কাজ থেকে শুরু করে বহু ক্ষেত্রে কেন্দ্র-রাজ্যের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ তৈরি করেছে। তার ফল ভুগতে হচ্ছে রাজ্যের সাধারণ মানুষকে। বিজেপি বিধায়কেরা যদি সাধারণ মানুষের কথা ভেবে এভাবে সমস্ত প্রকল্পগুলিতে এগিয়ে আসে তাতে বাংলা উপকৃত হবে।"