ETV Bharat / state

Successful Heart Transplant: কলকাতার হাসপাতালে সফল হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন, নতুন জীবন পেলেন ত্রিপুরার ব্যক্তি - tripura man gets new heart in kolkata

দীর্ঘদিন ধরে হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ভুগছিলেন ত্রিপুরার বাসিন্দা রণজিৎ রায় ৷ সম্প্রতি সফলভাবে তাঁর হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন হয়েছে কলকাতার মেডিকা হাসপাতালে (Successful Heart Transplant) ৷

ETV Bharat
ত্রিপুরার ব্যক্তির সফল সফল হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন কলকাতায়
author img

By

Published : Jan 7, 2023, 8:54 PM IST

কলকাতা, 7 জানুয়ারি: সম্প্রতি রাজ্যের এক নাট্যকর্মীর ব্রেন ডেথ হওয়ার পর তাঁর শরীরের পাঁচটি অংশ দান করা হয়েছিল । সেই নাট্যকর্মীর হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপিত হওয়ায় প্রায় মৃত্যুমুখ থেকে ফিরে এলেন ত্রিপুরার এক বাসিন্দা । অর্থাৎ বাংলার এক ব্যক্তির দান করা হার্ট প্রতিস্থাপিত হয়ে নতুন জীবন পেলেন ত্রিপুরার এক বাসিন্দা ৷ এই প্রথম হার্ট প্রতিস্থাপিত হল ত্রিপুরার কোনও ব্যক্তির শরীরে ৷ কলকাতার বেসরকারি হাসপাতাল মেডিকাতে এই হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন হয়েছে (man from Tripura gets new heart in Kolkata) ৷

জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ভুগছিলেন ত্রিপুরার সেপাহিজলা এলাকার বাসিন্দা রণজিৎ রায় । পেশায় তিনি একজন দোকানদার, বয়স 44 । একসময় চিকিৎসক কুণাল সরকার ত্রিপুরার একটি ক্যাম্পে গিয়ে প্রথম তাঁকে দেখেন । তখনই তিনি চিকিৎসা শুরু করার পরামর্শ দিয়েছিলেন । দেখা যায় তিনি ভুগছেন ডায়লেড কার্ডিও মায়োপ্যাথি রোগে। এর জেরে হাঁটাচলা করা প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছিল ওই ব্যক্তির পক্ষে ৷ তখন চিকিৎসক তাঁকে হার্ট প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন (Successful Heart Transplant)।

তবে এক্ষেত্রে বেশকিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় রণজিৎ রায়কে ৷ প্রথমত, ত্রিপুরায় এই ধরণের চিকিৎসার সুযোগ না থাকায় তাঁকে কলকাতায় এসে চিকিৎসা করাতে হত ৷ দ্বিতীয়ত বি পজিটিভ রক্তের ডোনার পেতেও সমস্যা হচ্ছিল ৷ এই দুইয়ের জেরেই দু'বার তাঁর এই হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনে বাধা পড়ে । তবে গত মাসের 30 তারিখ এরাজ্যের এক নাট্যকর্মীর ব্রেন ডেথ হওয়ার পরে তাঁর পরিবার ওই ব্যক্তির অঙ্গদান করেন ।

আরও পড়ুন: টিউমার কোষ দিয়ে ক্যানসারের চিকিৎসায় মেলে একাধিক সুফল

প্রয়াত নাট্যকর্মীর লিভার, ফুসফুস, কিডনি, কর্নিয়া ও হৃদযন্ত্র দান করা হয় । বিভিন্ন হাসপাতালে বিভিন্ন অঙ্গ স্থানান্তরিত হলেও ওই বেসরকারি হাসপাতাল রেখে দিয়েছিল হৃদযন্ত্রটি । ওই রাতেই মেডিকা হাসপাতাল থেকে ফোন যায় রণজিৎ রায়ের বাড়িতে । তখনই কোনওমতে টাকা জোগাড় করে রাত দুটোর সময় বিমানের টিকিট কাটেন তিনি । তবে কুয়াশার জন্য বাতিল হয়ে যায় সেই বিমানও । অবশেষে পরের দিন দুপুর 1টার সময় কলকাতায় আসেন ওই ভদ্রলোক ও তাঁর পরিবার । সেদিনই হয় তাঁর হার্ট প্রতিস্থাপন (Successful Heart Transplant in Kolkata Hospital)।

বেসরকারি হাসপাতালটির তরফে জানানো হয়েছে বর্তমান সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছেন রণজিৎবাবু । কথাও বলতে পারছেন তিনি ৷ নিজের এই নব জীবন প্রসঙ্গে ওই ব্যক্তি বলেন,"হাঁটার সময় বা মাঝে মধ্যে কথা বলতে সমস্যা হত । একাধিক হাসপাতাল ঘুরেছি, ফল হয়নি । তারপর আমার এক দাদা চিকিৎসক কুণাল সরকারের নাম বলেন, সেইমতো আমার ছেলে এসে যোগাযোগ করেন । তবে তখন চিকিৎসক বাইরে ছিলেন । ফলে 10 দিন এখানে আমি অপেক্ষা করি । তারপর চিকিৎসককে দেখাই এবং ওই হাসপাতালেই সমস্ত প্রক্রিয়া চলতে থাকে । তারপর এই হার্ট প্রতিস্থাপনের কথা ওঠে । কিন্তু কিছুতেই ডোনার মিলছিল না । তবে আচকাই 30 তারিখ রাতে ফোন যায় আমরা বাড়িতে । কিছু টাকা জোগাড় করে রওনা দিই আমরা । কলকাতা বিমানবন্দরে হাসপাতালের তরফ থেকে অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করা হয়েছিল ৷ তাতেই এখানে আসি এবং আমার অস্ত্রোপচার হয় । বর্তমানে সম্পূর্ণ আমি । কোনও অসুবিধা নেই ।"

চিকিৎসক কুণাল সরকারের নেতৃত্বে হয় এই সফল হার্ট প্রতিস্থাপন ৷ এই প্রসঙ্গে কুণাল সরকার বলেন, "পশ্চিমবঙ্গের বাইরে কোথাও দরকার হলে আমরা চাই সাহায্য করতে । তবে বেশ কিছু জায়গায় সমস্যা হয় । উত্তরবঙ্গে এধরণের সমস্যা বেশি । যেহেতু এটা ত্রিপুরা তাই ওখান থেকে এখানে দ্রুত আসতে পেরেছেন রোগী এবং এই অস্ত্রোপচারে আমারা সাফল্য পেয়েছি । উনি প্রায় সাত মাস ধরে অপেক্ষা করছিলেন । আগের দু'বার বিমান চলাচলের সময় ঠিক না হওয়ায় উনি আসতে পারেননি, এবারে তা হয়নি ।"

বর্তমানে সম্পূর্ণ সুস্থ ত্রিপুরার ওই বাসিন্দা । শনিবার হাসপাতাল থেকে ছুটি পান তিনি । কিছুদিন বাদে ফিরে যাবেন নিজের বাড়ি । তবে ওষুধ থেকে শুরু করে ওনার চিকিৎসা ও ভালো থাকার জন্য ওষুধ-সহ আর যা যা দরকার, সেই সবই কলকাতার এই বেসরকারি হাসপাতাল থেকে পাঠানো হবে তাঁর বাড়িতে ।

কলকাতা, 7 জানুয়ারি: সম্প্রতি রাজ্যের এক নাট্যকর্মীর ব্রেন ডেথ হওয়ার পর তাঁর শরীরের পাঁচটি অংশ দান করা হয়েছিল । সেই নাট্যকর্মীর হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপিত হওয়ায় প্রায় মৃত্যুমুখ থেকে ফিরে এলেন ত্রিপুরার এক বাসিন্দা । অর্থাৎ বাংলার এক ব্যক্তির দান করা হার্ট প্রতিস্থাপিত হয়ে নতুন জীবন পেলেন ত্রিপুরার এক বাসিন্দা ৷ এই প্রথম হার্ট প্রতিস্থাপিত হল ত্রিপুরার কোনও ব্যক্তির শরীরে ৷ কলকাতার বেসরকারি হাসপাতাল মেডিকাতে এই হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন হয়েছে (man from Tripura gets new heart in Kolkata) ৷

জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ভুগছিলেন ত্রিপুরার সেপাহিজলা এলাকার বাসিন্দা রণজিৎ রায় । পেশায় তিনি একজন দোকানদার, বয়স 44 । একসময় চিকিৎসক কুণাল সরকার ত্রিপুরার একটি ক্যাম্পে গিয়ে প্রথম তাঁকে দেখেন । তখনই তিনি চিকিৎসা শুরু করার পরামর্শ দিয়েছিলেন । দেখা যায় তিনি ভুগছেন ডায়লেড কার্ডিও মায়োপ্যাথি রোগে। এর জেরে হাঁটাচলা করা প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছিল ওই ব্যক্তির পক্ষে ৷ তখন চিকিৎসক তাঁকে হার্ট প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন (Successful Heart Transplant)।

তবে এক্ষেত্রে বেশকিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় রণজিৎ রায়কে ৷ প্রথমত, ত্রিপুরায় এই ধরণের চিকিৎসার সুযোগ না থাকায় তাঁকে কলকাতায় এসে চিকিৎসা করাতে হত ৷ দ্বিতীয়ত বি পজিটিভ রক্তের ডোনার পেতেও সমস্যা হচ্ছিল ৷ এই দুইয়ের জেরেই দু'বার তাঁর এই হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনে বাধা পড়ে । তবে গত মাসের 30 তারিখ এরাজ্যের এক নাট্যকর্মীর ব্রেন ডেথ হওয়ার পরে তাঁর পরিবার ওই ব্যক্তির অঙ্গদান করেন ।

আরও পড়ুন: টিউমার কোষ দিয়ে ক্যানসারের চিকিৎসায় মেলে একাধিক সুফল

প্রয়াত নাট্যকর্মীর লিভার, ফুসফুস, কিডনি, কর্নিয়া ও হৃদযন্ত্র দান করা হয় । বিভিন্ন হাসপাতালে বিভিন্ন অঙ্গ স্থানান্তরিত হলেও ওই বেসরকারি হাসপাতাল রেখে দিয়েছিল হৃদযন্ত্রটি । ওই রাতেই মেডিকা হাসপাতাল থেকে ফোন যায় রণজিৎ রায়ের বাড়িতে । তখনই কোনওমতে টাকা জোগাড় করে রাত দুটোর সময় বিমানের টিকিট কাটেন তিনি । তবে কুয়াশার জন্য বাতিল হয়ে যায় সেই বিমানও । অবশেষে পরের দিন দুপুর 1টার সময় কলকাতায় আসেন ওই ভদ্রলোক ও তাঁর পরিবার । সেদিনই হয় তাঁর হার্ট প্রতিস্থাপন (Successful Heart Transplant in Kolkata Hospital)।

বেসরকারি হাসপাতালটির তরফে জানানো হয়েছে বর্তমান সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছেন রণজিৎবাবু । কথাও বলতে পারছেন তিনি ৷ নিজের এই নব জীবন প্রসঙ্গে ওই ব্যক্তি বলেন,"হাঁটার সময় বা মাঝে মধ্যে কথা বলতে সমস্যা হত । একাধিক হাসপাতাল ঘুরেছি, ফল হয়নি । তারপর আমার এক দাদা চিকিৎসক কুণাল সরকারের নাম বলেন, সেইমতো আমার ছেলে এসে যোগাযোগ করেন । তবে তখন চিকিৎসক বাইরে ছিলেন । ফলে 10 দিন এখানে আমি অপেক্ষা করি । তারপর চিকিৎসককে দেখাই এবং ওই হাসপাতালেই সমস্ত প্রক্রিয়া চলতে থাকে । তারপর এই হার্ট প্রতিস্থাপনের কথা ওঠে । কিন্তু কিছুতেই ডোনার মিলছিল না । তবে আচকাই 30 তারিখ রাতে ফোন যায় আমরা বাড়িতে । কিছু টাকা জোগাড় করে রওনা দিই আমরা । কলকাতা বিমানবন্দরে হাসপাতালের তরফ থেকে অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করা হয়েছিল ৷ তাতেই এখানে আসি এবং আমার অস্ত্রোপচার হয় । বর্তমানে সম্পূর্ণ আমি । কোনও অসুবিধা নেই ।"

চিকিৎসক কুণাল সরকারের নেতৃত্বে হয় এই সফল হার্ট প্রতিস্থাপন ৷ এই প্রসঙ্গে কুণাল সরকার বলেন, "পশ্চিমবঙ্গের বাইরে কোথাও দরকার হলে আমরা চাই সাহায্য করতে । তবে বেশ কিছু জায়গায় সমস্যা হয় । উত্তরবঙ্গে এধরণের সমস্যা বেশি । যেহেতু এটা ত্রিপুরা তাই ওখান থেকে এখানে দ্রুত আসতে পেরেছেন রোগী এবং এই অস্ত্রোপচারে আমারা সাফল্য পেয়েছি । উনি প্রায় সাত মাস ধরে অপেক্ষা করছিলেন । আগের দু'বার বিমান চলাচলের সময় ঠিক না হওয়ায় উনি আসতে পারেননি, এবারে তা হয়নি ।"

বর্তমানে সম্পূর্ণ সুস্থ ত্রিপুরার ওই বাসিন্দা । শনিবার হাসপাতাল থেকে ছুটি পান তিনি । কিছুদিন বাদে ফিরে যাবেন নিজের বাড়ি । তবে ওষুধ থেকে শুরু করে ওনার চিকিৎসা ও ভালো থাকার জন্য ওষুধ-সহ আর যা যা দরকার, সেই সবই কলকাতার এই বেসরকারি হাসপাতাল থেকে পাঠানো হবে তাঁর বাড়িতে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.