কলকাতা, 29 নভেম্বর: এ রাজ্যের বঞ্চিতদের হয়ে যেদিন ধর্মতলায় সভা করতে এলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, সেদিনই কেন্দ্রের নয়া ভারতীয় ন্যায় সংহিতা বিল নিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় ৷ বুধবার সরাসরি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকেই এই চিঠি লিখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী অনুরোধ করেছেন, আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে তাড়াহুড়ো করে যেন এই বিল পেশ করা না হয় ৷
এদিন যে চিঠি অমিত শাহকে লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়, সেখানেই তিনি পরামর্শ দিয়েছেন, ভারতীয় দণ্ডবিধি আইন বদলের জন্য কেন্দ্র যেন অহেতুক তাড়াহুড়ো না করে ৷ ইতিমধ্যেই সংসদের স্থায়ী কমিটিতে এই প্রস্তাবিত বিল নিয়ে কড়া বিরোধিতা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস, ডিএমকে এবং অন্যান্য ইন্ডিয়া জোটভুক্ত দলগুলি । তৃণমূল সাংসদদের তরফেও কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানানো হয়েছে ৷ আগেও নয়া এই বিল ও তার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এবার তিনি সরাসরি চিঠি দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ৷
এই চিঠিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, "আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে এগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিল যা আমাদের ফৌজদারি অপরাধের আইনিবিধি তৈরি করে ৷ এই অবস্থায় বর্তমান আইনকে প্রতিস্থাপন করতে তার প্রভাব প্রসারী হতে পারে এবং রাজনীতির ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে। তিনি মনে করছেন নতুন সংশোধন নাগরিকের জীবনযাত্রার উপর প্রভাব ফেলতে পারে। কাজেই এই বিষয়টি নিয়ে কোনোভাবেই তাড়াহুড়ো করা উচিত নয় ।" মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ, আইনে কেনও পরিবর্তন করার আগে এর সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেক অংশীদারের সঙ্গে আলোচনা করে ঐক্যমতে পৌঁছনো উচিত। এক্ষেত্রে আইন পাশ সহমতের ভিত্তিতেই হওয়া উচিত ।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী ফৌজদারি ও দেওয়ানীবিধির নাম পরিবর্তন পরবর্তী লোকসভায় নির্বাচিত সদস্যদের উপর ছেড়ে দেওয়ার কথাও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাম্প্রতিক সময়ে বারবারই বলেছেন এই লোকসভার মেয়াদ রয়েছে আর মাত্র তিন মাস। একটা সরকার যখন শেষ পর্যায়ে চলে আসে তখন এমন সিদ্ধান্ত সরকারের নেওয়া উচিত নয় যার প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে ৷ মুখ্যমন্ত্রী এদিন তাই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আবেদন করেছেন, অহেতুক তাড়াহুড়ো করে কোনও সিদ্ধান্ত না নিতে ৷ বিষয়টি নিয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে ৷ আইনবিদ, পাবলিক অ্যাক্টিভিস্ট, মানবাধিকার কর্মী, সাধারণ জনগণের পরামর্শ সাপেক্ষে এই বিষয়ে এগনো উচিত বলে মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী ৷
আরও পড়ুন: