কলকাতা, 26 এপ্রিল: বিশ্বভারতী ও অমর্ত্য সেনের জমি নিয়ে বিতর্কে আগেই হস্তক্ষেপ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । নিজে বাড়ি গিয়ে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের হাতে তাঁর জমির কাগজপত্র দিয়ে এসেছিলেন তিনি । তারপরেও জমি দখলের অভিযোগ নিয়ে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের জমি নিয়ে সংঘাত থামার নাম নেই । সম্প্রতি অমর্ত্য সেনকে উচ্ছেদের নোটিশ ধরিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ । ইতিমধ্যেই তাই নিয়ে সরব হয়েছেন বুদ্ধিজীবীদের একাংশ । এবার এই ঘটনায় সরাসরি নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের পাশে দাঁড়ালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন, অমর্ত্য সেনের বাড়ি ভাঙার চেষ্টা হলে তিনি সেখানেই ধরনায় বসবেন ৷
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লির বিরুদ্ধে বাংলায় চক্রান্ত করার অভিযোগ তুলেছেন । তিনি অভিযোগ করেছেন, নানাভাবে দিল্লির সরকার বাংলাকে হেনস্তা করার চেষ্টা করছে । নাম না করে একই সারিতে বিজেপিকে রেখে মমতার দাবি, বাংলায় অশান্তির চেষ্টা করছে ওরা ।
এদিন মমতা বলেন, ‘‘বাংলা উত্তর প্রদেশ, দিল্লি বা গুজরাট নয়, যেখানে জঙ্গল রাজ চলছে । কীভাবে বিজেপি শাসিত রাজ্যে বিলকিস বানোর ধর্ষকদের মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে ? এখানে এসব হয় না । এটা বাংলা, বাংলার পরিচিতি স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য, আমাদের পরিচিতি শিক্ষা সংস্কৃতির জন্য, এই মাটিতেই রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, স্বামী বিবেকানন্দের মতো মনীষীরা জন্মেছেন । এখানে কোনোভাবেই আগুন নিয়ে খেলা মানুষ মেনে নেবে না ।’’
এরপরই তিনি অমর্ত্য সেনের প্রসঙ্গ তোলেন ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্ন তোলেন, ‘‘নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের সঙ্গে কী হচ্ছে ? যারা এসব করছে, তাদের সাহস দেখে আমি অবাক হচ্ছি ? তারা অমর্ত্য সেনের বাড়ি ভেঙে দিতে চাইছেন ।’’ মমতার দাবি, ‘‘যদি অমর্ত্য সেনের বাড়ি ভাঙার উদ্যোগ নেওয়া হয়, সবার আগেই আমি সেখানে ধরনায় বসব । আমি দেখতে চাই কার তার বাড়ি ভাঙার ক্ষমতা আছে ।’’
প্রসঙ্গত, অমর্ত্য সেনকে এভাবে উচ্ছেদ নোটিশ দেওয়ার পর তাঁর পাশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাঁড়ানোয় পুরো ঘটনা নতুন মাত্রা পেল । কারণ, যিনি এই কথাগুলো বলছেন তিনি রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান অর্থাৎ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী । এই অবস্থায় বিশ্বভারতী কী পদক্ষেপ নেয়, সেটাই এখন দেখার ।
আরও পড়ুন: বিহার থেকে লোক এনে কালিয়াগঞ্জে পুলিশের উপর হামলা, অভিযোগ মমতার