কলকাতা, 11 জানুয়ারি: সন্দেশখালি কাণ্ড নিয়ে কোনোরকম মন্তব্য করতে নারাজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ বৃহস্পতিবার সেই বিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি ৷ এমনকী, আদালতের চৌহদ্দির বাইরে বিচারপতির করা কোনও মন্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া তিনি দেবেন না বলে এ দিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন বাংলার প্রশাসনিক প্রধান ৷
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার উত্তর 24 পরগনার সন্দেশখালিতে রেশন দুর্নীতির তদন্তে যায় ইডি ৷ তাদের সঙ্গে ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী৷ সেখানে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়ির সামনে আক্রান্ত হন ইডির আধিকারিক ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা ৷ সেই ঘটনা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে সরগরম রাজ্য রাজনীতি ৷
এই নিয়ে শাসক দলকে কাঠগড়ায় তুলেছে বিরোধীরা ৷ তৃণমূলের তরফে কেন্দ্রীয় এজেন্সির বিরুদ্ধে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে ৷ তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি ৷ গঙ্গাসাগরে গিয়ে তিনি এই কথা বলেননি ৷ দক্ষিণ 24 পরগনার জয়নগরে প্রশাসনিক সভা থেকেও তিনি কোনও কথা বলেননি ৷
স্বাভাবিকভাবে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছিল যে সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে নীরব কেন মুখ্যমন্ত্রী ? বিজেপিও একই প্রশ্ন তুলেছিল ৷ পাশাপাশি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও ৷ বৃহস্পতিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ সেখানেই তাঁকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হয় ৷ উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘শাহজাহানে বিষয় নিয়ে যেহেতু তদন্ত চলছে, তাই আমি এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না ।’’
প্রসঙ্গত, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ও সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন ৷ তাছাড়া আদালতের চৌহদ্দির বাইরেও তাঁকে একাধিক বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছে ৷ সেই নিয়েও এ দিনের সাংবাদিক বৈঠকে প্রশ্নের মুখোমুখি হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এবার কি আপনারা চাইছেন আমি বিচারপতিদের নিয়েও আমি মন্তব্য করি । সেটি হবে না ।’’
এদিকে সন্দেশখালির ঘটনার পর প্রায় এক সপ্তাহ পেরিয়ে গিয়েছে ৷ এখনও খোঁজ নেই সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের । ইতিমধ্যেই এই ঘটনা নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে ইডি । এই পরিস্থিতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারত ৷ কিন্তু তিনি এই নিয়ে কোনও মন্তব্যই করতে চাইলেন না ৷
এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারের বক্তব্যের অনুসারী হিসেবেই দেখছে রাজনৈতিক মহল । কারণ, আগেই ডিজি জানিয়েছিলেন, যারা আইন ভেঙেছে, পুলিশের তদন্তের কাজে বাধা দিয়েছে, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে ।
আরও পড়ুন: