কলকাতা, 15 ফেব্রুয়ারি: রবিবার রাত থেকেই বারবার সংবাদ শিরোনামে উঠে আসছিলেন রাজ্যপালের প্রধান সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী (Nandini Chakraborty) । কারণ, রাজভবন তাঁকে অব্যাহতি দেওয়ার পরও সরকারের তরফ থেকে তাঁকে বদলির বিজ্ঞপ্তি জারি করা হচ্ছিল না । ফলে একটা সংকটের মধ্যে পড়েছিলেন এই আমলা । এমনকি এও শোনা যাচ্ছিল যে রাজভবন (Rajbhaban) তাঁকে অব্যাহতি দেওয়ার পরও চাকরির বাধ্যবাধকতা থেকেই তিনি রাজভবনে থেকে গেলেও এই ঘটনাকে ভালো চোখে দেখছেন না রাজ্যপাল ।
ফলে তাঁর বিরুদ্ধে সংবিধান অবমাননার অভিযোগ উঠতে পারে । এমনকি রাজ্যপাল চাইলে তাঁকে ‘ট্রেসপাসার’ আখ্যা দিতে পারে । রাজনৈতিক মহল এমতাবস্থায় এমন বক্তব্য রাখতে শুরু করেছিল যে রাজভবন ও সরকারের সংঘাতে বলি হচ্ছেন নন্দিনী চক্রবর্তী । অবশেষে সংকট মুক্তি ঘটল । নতুন পদ পেলেন নন্দিনী চক্রবর্তী । একই সঙ্গে তাঁকে ঘিরে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল, তারও অবসান হল এবার । যতদূর জানা যাচ্ছে, নন্দিনী চক্রবর্তীকে রাজভবন থেকে সরিয়ে এবার পর্যটন দফতরের (Tourism Department) প্রধান সচিবের দায়িত্ব দিল রাজ্য সরকার । প্রসঙ্গত, আগেও এই দফতরের দায়িত্ব সামলেছেন নন্দিনী চক্রবর্তী । আবারও তার পরিচিত দফতরেই তাঁকে পুনর্বহাল করা হল ।
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, গতকাল দিল্লি থেকে ফিরেই নন্দিনী চক্রবর্তীকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে রাজ্যের মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদির সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (Bengal Governor CV Ananda Bose) । সেই সময়ই বার্তা দেওয়া হয় এই আমলাকে যেন দ্রুত সরিয়ে নেওয়া হয় । এদিন রাজ্য বিধানসভায় ছিল বাজেট । বিধানসভাতেই বাজেটের আগে অনুষ্ঠিত হয় মন্ত্রিসভার বৈঠক । এরপরেই নবান্নের তরফে নন্দিনীর বদলি নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয় ।
এদিকে এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ্যে আসার পর তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) তরফ থেকে বলা হয়েছে, এই ঘটনায় একজন দক্ষ রাজ্য সরকারি আধিকারিকের সম্মানহানি হল । যা কখনোই কাম্য নয় । এদিন এই প্রসঙ্গে রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার সৌজন্য দেখাল । রাজ্যপালের সিদ্ধান্তের প্রতি সৌজন্য দেখাল । রাজভবন একজন দক্ষ অফিসারকে সরিয়ে অসম্মান করা হল । একজন মহিলাকে অসম্মান করা হল । বাকিটা রাজভবন এবং রাজ্য সরকারের প্রশাসনিক বিষয় । এ নিয়ে আলাদা করে কিছু বলার নেই ।’’
তবে তৃণমূল কংগ্রেসের অপর মুখপাত্র তাপস রায় নন্দিনী চক্রবর্তী ও রাজ্যপালকে ঘিরে শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) করা মন্তব্য নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন । তিনি বলেন, ‘‘গভর্নর শাসক না বিরোধীদের পক্ষে, এটা কোনও আলোচনার বিষয় হতে পারে না । রাজ্যপাল ট্র্যাকে ফিরছেন, বলছেন বিরোধী দলনেতা । এর জন্য রাজ্যপালের উচিত শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া । রাজ্যপাল সম্পর্কে যা বলছেন সেটা কি বলা যায় ! এটা কি সংবিধানের অবমাননা নয় । রাজ্যপাল সাংবিধানিক প্রধান ৷ তাঁর বিরুদ্ধে মন্তব্য করার শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে কেন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না ?’’
আরও পড়ুন: ঠিক কেন রাজ্যপালের প্রধান সচিবের পদ থেকে সরতে হল নন্দিনীকে?