কলকাতা, 14 অগস্ট: নবান্নের উদ্যোগের পরেও এবার হচ্ছে না বন্দিমুক্তি । বিষয়টি নিয়ে স্বাধীনতা দিবসের আগের সন্ধ্যায় ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তিনি স্পষ্টতই জানিয়েছেন, রাজ্যপাল ফাইলে সই না-করায় এবার বন্দিমুক্তি আটকে গিয়েছে ৷ নবান্নের তরফে আগেই জানা গিয়েছিল, বন্দি মুক্তির ফাইলে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস স্বাক্ষর করে নবান্নে না-পাঠানোয় এ বছর স্বাধীনতা দিবসে কোনও বন্দিকেই মুক্তি দেওয়া যাচ্ছে না ।
প্রত্যেক বছরই স্বাধীনতা দিবস ও প্রজাতন্ত্র দিবসে কিছু বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয় । কিন্তু নবান্ন এবং রাজভবন সংঘাতে এবার সেই বন্দি মুক্তির প্রক্রিয়া প্রশ্নের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে । যার ফলে শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার কোনও বন্দিকেই মুক্তি দেওয়া যাচ্ছে না । সোমবার বেহালায় প্রাক স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে গিয়ে রাজ্যপালের এই ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তিনি এই বন্দি মুক্তির প্রক্রিয়া থমকে যাওয়ার জন্য রাজভবনকেই দায়ী করেছেন ।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "মঙ্গলবার বন্দিমুক্তি করব বলে প্রায় 80-85 জনের নাম পাঠানো হয়েছিল রাজ্যপালের কাছে । কিন্তু যে কোনও ফাইল পাঠাব, উনি হয় সিএসকে ডাকবেন, না-হয় ডিজিকে ডাকবেন। নয় আমাকে ডাকবেন। সবাই যেন ওঁর চাকর-বাকর, তিনি যখন ডাকবেন যেতে হবে । সকাল 6টায় বললে চলে যেতে হবে । রাত 10টায় ফোন করে বলবেন, চলে এসো । আমাদের চলে যেতে হবে । কেন?" তাঁর কথায়, "আপনি মাননীয় রাজ্যপাল, আপনাকে আমরা সম্মান করি । শুধু বলি, রাজার পার্ট আপনি করুন । প্রজার পার্ট কিন্তু করতে যাবেন না । প্রজার পার্ট করবে জনগণ ।"
আরও পড়ুন: যাদবপুর এখন আতঙ্কপুর, ছাত্রের রহস্যমৃত্যু নিয়ে মমতার নিশানায় মার্কসবাদীরা
এদিন রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "এবছর রাজভবনের অনুমোদন না-মেলায় স্বাধীনতা দিবসে বন্দিমুক্তি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না । ফলে আগামিকাল কেউ মুক্তি পাচ্ছেন না ।" এদিকে এই বিষয়টি নিয়ে রাজভবনের সঙ্গেও যোগাযোগ করার চেষ্টা হয়েছিল । কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে রাজভবনে কোনও প্রেস সচিব না-থাকায় বিষয়টি নিয়ে রাজভবনের প্রতিক্রিয়া জানা সম্ভব হয়নি ।
প্রত্যেক বছর স্বাধীনতা দিবসে বন্দি মুক্তি নতুন ঘটনা নয় । কখনও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের ভালো ব্যবহারের ভিত্তিতে আচার আচরণ বিবেচনা করে মুক্তির বিষয়ে ভাবনা চিন্তা করা হয় । এক্ষেত্রে বন্দি মুক্তির জন্য একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া আছে । প্রথমে কারা দফতরের তরফ থেকে ফাইল পাঠানো হয় নবান্নে । নবান্ন অনুমোদন দিলেই সেই ফাইল যায় রাজভবনে। এরপর রাজভবন থেকে রাজ্যপাল সরকারের এই সিদ্ধান্তের সিলমোহর দিলেই বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয় । কিন্তু এবার তা হল না ৷