কলকাতা, 10 এপ্রিল: হাওড়ার শিবপুর ও হুগলির রিষড়া অশান্ত হওয়ার পর পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বাংলায় আসে একটি তথ্য অনুন্ধানকারী দল ৷ যদিও সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতে 144 ধারা জারি থাকায় পুলিশ ওই দলকে সেখানে যেতে দেয়নি ৷ এই নিয়ে সোমবার বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তাঁর অভিযোগ, এলাকাকে আবার অশান্ত করতে এসেছে বিজেপির ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম ।
এদিন নবান্ন থেকে সাংসদদের এমপিল্যাডের টাকায় দেওয়া 30টি অ্যাম্বুল্যান্সের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ তার পরই অশান্তি নিয়ে মুখ খোলেন তিনি ৷ তোপ দাগেন বিজেপির বিরুদ্ধে ৷ সরাসরি অশান্তির দায় তিনি বিজেপির ঘাড়ে চাপিয়ে দেন ৷ বিজেপি বহিরাগতদের নিয়ে এসে গোলমাল পাকাচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন ৷ তাঁর দাবি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার বিজেপি ফের অশান্তি বাঁধাতে চাইছে ৷ তাই ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম পাঠিয়েছে ৷
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘এলাকাকে আবার অশান্ত করতে এসেছে বিজেপির ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম । এটা খায় না মাথায় দেয় । এটা কাঁচা লঙ্কা না লবডঙ্কা ।’’ প্রসঙ্গত, বিজেপি ওই দল পাঠিয়েছে বলে অভিযোগ উঠলেও সংশ্লিষ্ট টিমের দাবি, তারা স্বাধীনভাবে কাজ করে ৷ যদিও মমতা সরাসরি বিজেপির বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছেন ৷ তিনি বলেন, ‘‘এখন সব ব্যাপারেই হিউম্যান রাইটস, মহিলা কমিশন, চিলড্রেনস কমিশন । সংবাদ মাধ্যমকে সকালবেলায় বলে দেওয়া হয়, এর খবর দেবে না । গণতন্ত্র কোথায় । মানুষ কথা বলতে পারে না । সংবাদ মাধ্যমকে সকালবেলা থেকে বলে দেওয়া হয় একটা পার্টির প্রোগ্রাম দেখাবে না । শুধু বিজেপি নেতাদের দেখাবে ।’’
হাওড়ায় অশান্তি ছড়ানোর পর থেকেই মমতা বহিরাগতদের এনে গোলমাল পাকানোর অভিযোগ বারবার তুলেছেন ৷ সোমবারও তিনি একই অভিযোগ তুললেন ৷ তাঁর অভিযোগ, ঘটনার দিন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে মিছিল করা হয়েছিল । ওই মিছিলে যাঁরা অংশগ্রহণ করেছিলেন, তাঁদের একটা বড় অংশ ছিল বহিরাগত । রামনবমীর শোভাযাত্রায় বন্দুক নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে আবার সরব হন মুখ্যমন্ত্রী ৷ তাঁর দাবি, ওই দিন মিছিলে বিজেপি কর্মীরা বন্দুক নিয়েছিল । তাদের অস্ত্র নিয়ে নাচ করতেও দেখা গিয়েছে । বুলডোজার ও ট্রাক্টরও তারা নিয়ে এসেছিল । ধর্মীয় শোভাযাত্রায় কেন অস্ত্র নিয়ে আসা হয়েছিল, কেন সেখানে বন্দুক নিয়ে নৃত্য করা হল, কেন বুলডোজার বা ট্রাক্টর নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, কার অনুমতিতে এসব করা হয়েছিল, সেই প্রশ্নও তুলেছেন মমতা ৷
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ওইদিন যাদের নৃত্য করতে দেখা গিয়েছে, তাদের মুঙ্গের থেকে নিয়ে আসা হয়েছে । এরা বাইরের লোক । এখানকার লোক নয় । আমাদের এখানকার লোক সকলে একসঙ্গে থাকে । তারা কখনোই এ ধরনের ঘটনা ঘটান না । বাংলার মানুষের সংস্কৃতি হল সম্প্রীতি ।’’ পুলিশের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি দাবি করেন, ঘটনার সময় যখন দুই পক্ষ পরস্পরের মুখোমুখি ছিল, সেই সময় পুলিশ ব্যবস্থা নিতে গেলে গুলিবিদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা ছিল । সেই জন্য পুলিশ কর্মীরা সেখানে এক ঘণ্টা ধরে পরিকল্পনা করে ৷ তার পর কাজ করেছে ৷ এখন এলাকা পুরো শান্ত ।
আরও পড়ুন: রামের নাম বদনাম করছে বিজেপির গুন্ডারা, অভিযোগ মমতার