কলকাতা, 23 নভেম্বর: একাধিক মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি এবং সিবিআই গ্রেফতার করেছে তৃণমূল কংগ্রেসের একের পর এক নেতা-মন্ত্রীকে । এই মুহূর্তে জেলবন্দি একদা তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডল, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক । কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার, কারও বিরুদ্ধে আবার অভিযোগ উঠেছে, কয়লা এবং গরু পাচারের । আবার কেউ অভিযুক্ত রেশন দুর্নীতির সঙ্গে । এই অবস্থায় দুর্নীতি ও চুরি নিয়ে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে নিশানা করছে বিরোধীপক্ষ । এ দিন তার বিরুদ্ধেই সরব হলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । কারাগারের অন্তরালে থাকা তৃণমূল নেতাদের পাশে দাঁড়িয়ে পালটা বিরোধী নেতা-নেত্রীদের শ্রীঘরে পোড়ার হুমকি দিলেন তিনি । একইসঙ্গে, তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন, জেলবন্দি পার্থ, কেষ্ট বা বালু যে চোর, তা তিনি বিশ্বাস করেন না ।
এ দিন তৃণমূলের নেতা মন্ত্রীদের গ্রেফতারের পালটা হিসাবে বিরোধীদের শ্রীঘরে পাঠানোর কথা বলেছেন মমতা । তিনি বলেন, "আমার চার জনকে জেলে ঢোকালে, আমার দলের পক্ষ থেকে ওদের আট জনকে জেলে ভরব । যাঁদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আছে, প্রত্যেককে জেলে ঢোকাব ।"
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "সবচেয়ে বেশি গরুর টাকা খায় কারা ! গরু কাদের আন্ডারে ? বিএসএফ । কাদের অর্গানাইজেশন ! সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট অর্থাৎ দিল্লির । বর্ডার পাহারা দেয় কারা ? গরু আসে কোথা থেকে ? উত্তরপ্রদেশ, বিহার, রাজস্থান থেকে । সেখান থেকে গাড়িগুলো যখন পাস হয়, তখন তোমরা টাকা খাও না, তোমরা কি ল্যাবেনচুস খাও !"
কয়লা কেলেঙ্কারি নিয়েও কেন্দ্রকেই নিশানা করেছেন মমতা । তাঁর কথায়, "কয়লা ধুলেও যাবে না ময়লা । কোল ইন্ডিয়া কাদের আন্ডারে । ওখানে সিআইএসএফ আছে, কেন্দ্রীয় সরকার আছে । তাহলে সেখানে চুরি হলে দোষ কার !"
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে বার্তা দেন, "আমি যে পয়েন্টগুলো বলছি লিখে নিন । এলাকায় এলাকায় এগুলি বলবেন । আমরা শুনি ভুলে যাই, মনে রাখি না । একটা কথা বারবার বলতে হবে । মিথ্যে কথা বলে বলে অনেক সময় মিথ্যেকে সত্য করে দেওয়া হয় । আপনাদের কাজ হবে সত্যটাকে তুলে ধরা । সঠিক তথ্যটাকে তুলে ধরা ।"
মমতার কথায়, "আমাদের লোকেরা সবাই চোর ! দুর্নীতি দেখাচ্ছে । দু একটা চ্যানেল খুলে সেজেগুজে বসে পড়ছে । সেখানে শিখিয়ে তাঁদের টাকা দিয়ে বলা হচ্ছে বলো চোর । তৃণমূলকে চোর না বললে ইডি সিবিআই তাঁদের গিয়ে রেড করবে । আজকে খুব হাসছেন, ভাবছেন কেষ্ট জেলে, পার্থ জেলে, মানিক ভট্টাচার্য, বালু জেলে এটাই চলবে ! আগামী দিন যখন আপনারা চেয়ারে থাকবেন না... তখন আপনারা কোথায় থাকবেন ? সেলে না কোলে, না কোলবালিশ হয়ে ঘুরবেন । এখন বিজেপি আর সিপিএম কোলবালিশ হয়ে দুলছে ।"
মমতার নিশানায় এ দিন ছিল বামেরাও । অতীতে বদলা নয় বদলের কথা বলেছিলেন । এ দিন অবশ্য তিনি বদলার কথা বললেন । রাজনৈতিক ভাবে বদলার কথা । বললেন, বাম বিজেপিকে রাজনৈতিকভাবে কান মুলে দেওয়া উচিত । এ দিন জয়নগর প্রসঙ্গ উঠে এসেছে মুখ্যমন্ত্রীর কথায় । তিনি বলেন, জয়নগরে বারবার খুনের রাজনীতি হয়েছে । আর এর সঙ্গে যুক্ত সিপিএমই । নরকঙ্কাল নিয়ে বসে থাকে সিপিএম । তাই ওরা শূন্যে আছে শূন্যেই থাকবে ।
আরও পড়ুন: