কলকাতা, 1 অক্টোবর : প্রথম মেধাতালিকার ভিত্তিতে খুব কম সংখ্যক পড়ুয়া ভরতি হয়েছিলেন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকের কোর্সগুলিতে । 16টির মধ্যে 9টি কোর্সে পড়ুয়া ভরতির সংখ্যা ডবল ডিজ়িটেও পৌঁছায়নি । দ্বিতীয় মেধাতালিকার ভিত্তিতে ভরতির পরও বদলালো না সেই ছবি । দ্বিতীয় দফার ভরতি শেষ হওয়ার পর দেখা যাচ্ছে , প্রেসিডেন্সিতে বাংলায় একজন জন পড়ুয়া ভরতি হয়েছেন । আবার দেখা যাচ্ছে দর্শনশাস্ত্রে নতুন করে একজনও ভরতি হননি । দ্বিতীয় মেধাতালিকার ভিত্তিতেও 16টি কোর্সের মধ্যে 15টিতে পড়ুয়া ভরতির সংখ্যা ডবল ডিজ়িটে পৌঁছাল না ।
রাজ্যের সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়েও স্নাতক কোর্সে ভরতির প্রক্রিয়া চলছে । এবছর কোরোনা পরিস্থিতিতে প্রবেশিকা পরীক্ষা নয়, মেধার ভিত্তিতে অর্থাৎ বোর্ড পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে ভরতি নেওয়া হচ্ছে । কিন্তু একদিকে যখন বোর্ড পরীক্ষায় নম্বরের ছড়াছড়িতে বহু পড়ুয়া পছন্দের কলেজে ভরতি হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না তখনই প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে দু'দফার ভরতির পরও পড়ুয়া ভরতির সংখ্যা অত্যন্ত কম দেখা গেল ।
প্রেসিডেন্সিতে প্রথম মেধাতালিকার ভিত্তিতে মোট 665টি আসনের মধ্যে 179 জন পড়ুয়া ভরতি হয়েছিলেন । বাংলায় 38টি আসনের মধ্যে 4টি, ইংরেজিতে 38টি আসনের মধ্যে 8 টি , হিন্দিতে 30টি আসনের মধ্যে 6টি, ইতিহাসে 46টি আসনের মধ্যে 11, দর্শনশাস্ত্রে 20টি আসনের মধ্যে 6টি , রাষ্ট্রবিজ্ঞানে 31টি আসনের মধ্যে 5 টি , সোশিওলজিতে 32 টি আসনের মধ্যে 5টি , পারফর্মিং আর্টসে 15টি আসনের মধ্যে 1টি , কেমিস্ট্রিতে 53টি আসনের মধ্যে 11টি , অর্থনীতিতে 53টি আসনের মধ্যে 23টি , ভূগোলে 28 টি আসনের মধ্যে 9টি , জিওলজিতে 31টি আসনের মধ্যে 13টি , জীবনবিজ্ঞানে 116টি আসনের মধ্যে 43টি , গণিতে 53টি আসনের মধ্যে 14টি, ফিজ়িক্সে 53 টি আসনের মধ্যে 14 টি ও স্ট্যাটিস্টিক্সে 28 টি আসনের মধ্যে মাত্র 6 টি আসন পূরণ হয়েছিল ।
প্রথম দফার ভরতির পর 17 সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয় দ্বিতীয় মেধাতালিকা । 18 থেকে 23 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেই মেধাতালিকার ভিত্তিতে ভরতির প্রক্রিয়া চলে । ভরতি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার পর দেখা যায়, প্রথম দফার থেকেও কম সংখ্যক পড়ুয়া ভরতি হয়েছেন দ্বিতীয় দফায় । বাংলায় বাকি থাকা 34টি আসনের মধ্যে 1টিতে , ইংরেজির 30টির মধ্যে 6টিতে, কেমিস্ট্রির 42টির মধ্যে 7টি , অর্থনীতিতে 30টির মধ্যে 9টিতে , ভূগোলে 19টির মধ্যে 5টিতে, জিওলজির 18টির মধ্যে 6টি , হিন্দির 24টির মধ্যে 6 টি , ইতিহাসে 35টির মধ্যে 7টিতে, জীবনবিজ্ঞানে 73 টির মধ্যে 16টিতে, গণিতে 39টির মধ্যে 4টিতে , পারফর্মিং আর্টসে 14টির মধ্যে 2টিতে , ফিজ়িক্সে 39টির মধ্যে 9টিতে , রাষ্ট্রবিজ্ঞানে 26টির মধ্যে 4টিতে ভরতি হয়েছেন । আবার দর্শনশাস্ত্রে 14টি আসন ফাঁকা ছিল । দ্বিতীয় দফাতে একজনও ভরতি না হওয়ায় সেই সংখ্যা 14 রয়ে গেছে।
প্রথম মেধাতালিকার ভিত্তিতে খুব কম সংখ্যক পড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভরতি হওয়ার পরই প্রশ্ন উঠেছিল, তাহলে কি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভরতিতে অনীহা দেখা দিচ্ছে পড়ুয়াদের মধ্যে ? নাকি এর পিছনে অনলাইন ভরতি ব্যবস্থা দায়ী ? প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনলাইনে ভরতি ব্যবস্থাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিলেন । আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত অনেকেরই মতে, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মানের অবনমন ঘটছে এবং তাই ভরতিতে পড়ুয়াদের মধ্যে অনীহা দেখা দিচ্ছে ।
দ্বিতীয় মেধাতালিকার ভিত্তিতেও কম সংখ্যক পড়ুয়া ভরতির পিছনে আবারও অনলাইন ভরতি ব্যবস্থাকেই দায়ী করে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ । প্রেসিডেন্সির অ্যাডমিশনের নোডাল অফিসার অরবিন্দ নায়েক বলেন, "হয়তো এই প্রার্থীরা নেই, হয়তো অন্য কোথাও ভরতি হয়ে গেছেন । অনেক বিভাগেই ভালো হয়েছে, কিছু কিছুতে হয়নি । আসলে আমাদের আগে কাউন্সেলিং হত । কাউন্সেলিং হলে অনেককে একসঙ্গে ডাকা হত । এবার তো সেটা করতে পারছি না । এখন যা আসনসংখ্যা ততজনেরই নাম প্রকাশ করতে পারছি ।" তবে আর একটি, দুটি তালিকা প্রকাশের পর বেশিরভাগ আসনই পূরণ হয়ে যাবে বলে আশা করছে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ।