কলকাতা, 18 মে : লকডাউন মেনে চলা হবে । তবে রাত্রিকালীন কারফিউ থাকবে না । আজ নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে একথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আরও জানিয়েছেন, 21 মে থেকে অ্যাফেক্টেড কনটেইনমেন্ট জ়োনের বাইরে সমস্ত বড় দোকান খুলে যাবে।
গতকাল 31 মে পর্যন্ত লকডাউনের সময়সীমা বাড়ানো হয় । তারপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে চতুর্থ দফার লকডাউনের জন্য একটি নির্দেশিকা জারি করা হয় । সেখানেই নাইট কারফিউ বা রাত্রিকালীন কারফিউর কথা বলা হয় । নির্দেশিকায় জানানো হয়, দিনের বেলায় বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে ৷ তবে সন্ধে সাতটা থেকে সকাল সাতটা পর্যন্ত রাস্তায় চলাফেরা নিষেধ । এনিয়ে সাধারণ মানুষকে সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকা দেবে স্থানীয় প্রশাসন । স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এই নির্দেশিকা দেওয়ার পরও আজকের সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় সাফ জানিয়ে দেন, রাজ্য়ে কোনও রাত্রীকালীন কারফিউ জারি করা হবে না । তিনি বলেন, "রাজ্যে লকডাউন মেনে চলা হবে । তবে কোনও রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করা হবে না । খুব ইমার্জেন্সি ছাড়া কারফিউ ঘোষণা করা যায় না। তাই সরকারিভাবে এই রাজ্যে কারফিউ ঘোষণা করা হচ্ছে না। তবে জমায়েত করলে পদক্ষেপ নেবে পুলিশ ।"
কনটেইনমেন্ট অ্যাফেক্টেড জ়োন বাদে 21 মে থেকে রাজ্য়ের সর্বত্র দোকান খুলে যাবে । আজকের সাংবাদিক বৈঠকে এই বিষয়টিও স্পষ্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ জানিয়েছেন, কনটেইনমেন্ট জ়োনকে বুথ ভিত্তিক তিনটি ভাগে ভাগ করা হবে । কনটেইনমেন্ট অ্যাফেক্টেড জ়োন, কনটেইনমেন্ট বাফার জ়োন ও কনটেইনমেন্ট ক্লিন জ়োন ৷ অন্যত্র দোকান খোলা হলেও অ্যাফেক্টেড জ়োনে দোকান খোলা যাবে না ৷ তিনি আরও জানান, দোকান খোলার জন্য পাস দেওয়া হবে ৷ সব ক্ষেত্রেই সামাজিক দূরত্বের পাশাপাশি মাস্ক ও গ্লাভস ব্যবহার বাধ্যকতামূলক ৷
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "27 মে একটি মিটিং করা হবে । তারপর জোড়-বিজোড় পদ্ধতিতে হকার মার্কেট খোলা হবে ৷ তবে এই বিষয়ে পুলিশ ও কর্পোরেশন কথা বলে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে ৷" খুলছে বেসরকারি অফিস । এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, 50 শতাংশ কর্মী নিয়ে বেসরকারি অফিসগুলি কাজ করতে পারে । পাশাপাশি মলের ভিতরের অফিসগুলি খোলার কথাও জানিয়েছেন তিনি ।
লকডাউনের চতুর্থ দফায় কী কী খোলা থাকছে ? মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, "হোটেল খুলবে । তবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে । প্রাথমিক স্বাস্থ্যবিধি মেন চলতে হবে । হোটেল খুললেও , এখনই রেস্তরাঁ খোলা হবে না ৷ সেলুন, বিউটি পার্লারও খুলে দেওয়া হচ্ছে । এক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে ৷ এর পাশপাশি ব্যবহৃত জিনিস স্যানিটাইজ় করার জন্য একটি বিশেষ গাইডলাইন দেওয়া হবে ৷"
পরিবহন পরিষেবা চালু করা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, 21 মে থেকে আন্তঃজেলা বাস পরিষেবা চালু হবে ৷ 27 মে থেকে অটো চলবে । তবে মাত্র দু'জন করে যাত্রী নিতে পারবে ৷ খেলার স্টেডিয়ামও খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি । বলেন, "খেলা চলবে কিন্তু জমায়েত ছাড়া ৷"
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন এই পরিস্থিতিতে বিয়েবাড়ি, শ্রাদ্ধের ক্ষেত্রে 7 জন থেকে 15 জনের উপস্থিতির অনুমতি দেওয়া হয়েছে ৷ ইদ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর তাঁর বার্তা, "ইদে ঘরে প্রার্থনা করুন ৷ কোনও সম্প্রদায়কে নিয়ে রাজনীতি করবেন না ৷ এটা রাজনীতি করার সময় নয় ৷"
পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্যে ফেরাতে খরচ বহন করবে রাজ্য সরকার । দিন দুয়েক আগেই একথা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী । আজকের সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, "রাজ্যে 16টি ট্রেন এসেছে ৷ সকলের স্ক্রিনিং করা হচ্ছে ৷ 120টি ট্রেন বুক করা হয়েছে ৷ সবমিলিয়ে 235টি মোট ট্রেনের সব খরচ বহন করবে রাজ্য ৷ প্রতিদিন 10টা ট্রেন আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে ৷ ইতিমধ্যে অন্য রাজ্যের বহু মানুষকে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে ৷"