কলকাতা, 4 অক্টোবর : ভবানীপুর উপনির্বাচন ও দুটি বিধানসভা কেন্দ্রে নির্বাচনের ফল বেরিয়েছে রবিবার ৷ তিন কেন্দ্রেই তৃণমূলের জয়জয়কার ৷ ভবানীপুরে উপনির্বাচনে রেকর্ড ভোটে জিতেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ এই কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী শ্রীজীব বিশ্বাস চার হাজারের সামান্য বেশি ভোট পান ৷ এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা না-করেই 30 অক্টোবর রাজ্যের বাকি চারটি উপনির্বাচনের প্রার্থী ঘোষণা করল বামফ্রন্ট ৷
দিনহাটা কেন্দ্রে লড়বেন ফরোয়ার্ড ব্লক প্রার্থী আব্দুর রউফ, শান্তিপুর ও খড়দহ কেন্দ্রে সিপিআইএমের প্রার্থী যথাক্রমে সৌমেন মাহাতো ও দেবজ্যোতি দাস ৷ আর গোসাবায় বামফ্রন্টের প্রার্থী আরএসপির অনিলচন্দ্র মণ্ডল। তবে প্রার্থী দেওয়ার ক্ষেত্রে জোটসঙ্গী কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি ৷ এদিন বিমান বসুর কথায় তা পরিষ্কার ৷ তাঁর মতে, ফোনে সবকিছু হয় না। পথে নেমে আন্দোলনের সময় কংগ্রেসকে পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে তারা জোটসঙ্গী কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হওয়া স্বাভাবিক ৷ তবে আগ বাড়িয়ে বিচ্ছেদের কথা তাদের তরফে বলা হবে না বলে আবারও মনে করিয়ে দিয়েছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান ৷
রাজ্য বিধানসভা ভোট মেটার পরই কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের ইতি হয়েছে ৷ মাসখানেক আগে কলকাতায় এসে এমনই মন্তব্য় করেছিলেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ৷ তারপর বামফ্রন্ট চেয়ারম্যানের এদিনের মন্তব্যে কংগ্রেসের সঙ্গে তাদের জোটের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল ৷ 2 মে পরবর্তী সময়ে কংগ্রেসকে কোনও আন্দোলনে পাওয়া যায়নি। তাই বাম-কংগ্রেসের জোট রয়েছে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান। সোমবার পার্থ মুখোপাধ্যায়ের লেখা বই ‘চিন্তার সৃজন’ প্রকাশ অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন বর্ষীয়ান বাম নেতা।
আরও পড়ুন : এটা রাম রাজ্য নয়, হত্যার রাজ্য; লখিমপুর নিয়ে যোগী সরকারকে আক্রমণ মমতার
সদ্য ভবানীপুর উপনির্বাচন বিপর্যস্ত সিপিএম ৷ জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে বামফ্রন্টের প্রার্থী শ্রীজীব বিশ্বাসের ৷ মাস ছয়েক আগে বিধানসভা নির্বাচনে ভবানীপুর কেন্দ্রে যে পরিমাণ ভোট পেয়েছিল জোটের প্রার্থী, উপনির্বাচনে তা ধরে রাখতে ব্যর্থ বামফ্রন্ট প্রার্থী। শুধু ভবানীপুর নয়, বাকি দুটি কেন্দ্রেও জামানত বাজেয়াপ্ত হয় বামেদের ৷ বিমান বসু জানান, 2 মে পরবর্তী সময়ে ঘটনাপ্রবাহ যেভাবে এগিয়েছে, তার সঙ্গে এই ফলাফল সামঞ্জস্যপূর্ণ।
পাশাপাশি লখিমপুর কৃষকদের ওপর মন্ত্রীর গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার ঘটনাকে মর্মান্তিক অ্যাখ্যা দিয়ে বিমান বসু বলেন, ‘‘এই ঘটনা দেশের লজ্জার। দিল্লি ও উত্তরপ্রদেশের প্রশাসনের মাথায় যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা কোন অন্ধকার পথের দিকে দেশকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে, তা বোঝা যাচ্ছে না।’’ তাই এদের অবিলম্বে ছুড়ে ফেলার দরকার বলে মনে করেন বর্ষীয়ান এই বাম নেতা ৷