কলকাতা, 23 নভেম্বর: মোবাইলে প্লে-স্টোরে টক এক্সচেঞ্জে একটি অ্যাপ ডাউনলোড করিয়ে কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিকের 27 লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ সাইবার দস্যুদের বিরুদ্ধে । তদন্ত নেমে দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর আড়াই মাস পর অবশেষে খোয়া যাওয়া 27 লক্ষ টাকার গোটাটাই পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হল কলকাতা পুলিশের সাইবার সেলের গোয়েন্দারা ।
এই ঘটনায় কলকাতা পুলিশের ডিসি পোর্ট জাফর আজমল কিদওয়াই ইটিভি ভারতকে বলেন,"আমরা এই বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিয়ে প্রথম থেকেই তদন্ত শুরু করি । প্রথমে তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয় । পাশাপাশি আমরা এই ঘটনায় যুক্ত থাকার সাইবার দস্যুদের গ্রেফতার না করতে পারলেও লিগাল সেল এবং সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিয়ে গোটা 27 লক্ষ টাকা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি । কিন্তু এই ঘটনায় কারা যুক্ত রয়েছে তা এখনও জানা বাকি রয়েছে তদন্তকারীদের । তবে এই ঘটনায় একাধিক বিদেশি সাইবার দস্যুদের যুক্ত থাকার সম্ভাবনাও রয়েছে । ফলে আমরা বিস্তারিত তদন্ত শুরু করেছি । তদন্ত পুরোপুরি শেষ না হওয়া পর্যন্ত কীভাবে 27 লক্ষ টাকা আমরা উদ্ধার করলাম সেই প্রক্রিয়াটি এখনই সামনে আনছি না ।"
পুলিশ সূত্রে খবর, গত 20 অক্টোবর ওয়েস্ট পোর্ট থানায় কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের উচ্চপদস্থ আধিকারিক সত্যরঞ্জন পট্টনায়ক একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন । সেখানে তিনি জানান, গত 2 সেপ্টেম্বর তাঁকে কয়েকজন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি টেলিফোন করে নিজেদের স্টক এক্সচেঞ্জের কর্মী বলে দাবি করে । এছাড়াও তাঁকে মোবাইলের প্লে-স্টোরে একটি বিশেষ অ্যাপ ডাউনলোড করতে বলে ৷ সেই অ্যাপের মাধ্যমে স্টক এক্সচেঞ্জে 27 লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করলে নাকি তাঁরা তাকে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বহু গুণ টাকা ফিরিয়ে দেবেন ।
জানা গিয়েছে, কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের ওই আধিকারিক মাঝে মধ্যেই স্টক এক্সচেঞ্জের টাকা বিনিয়োগ করতেন । কিন্তু তাঁর অভিযোগ, যখনই তিনি শেয়ার মার্কেটে 27 লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করলেন তারপর থেকেই ওই ব্যক্তিরা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিলেন । এই ঘটনায় 20 অক্টোবর তিনি ওয়েস্ট পোর্ট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন । যেহেতু এটি সাইবার প্রতারণা ফলে তাঁর সেই অভিযোগটি সেখান থেকে সরাসরি রেফার করে দেওয়া হয় কলকাতা পুলিশের পোর্ট ডিভিশনের সাইবার সেলের গোয়েন্দাদের কাছে ।
তদন্ত নেমে যে ব্যাংকের মাধ্যমে তিনি 27 লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন সেই সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কর্মী থেকে শুরু করে ম্যানেজার সকলকে থানায় ডেকে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা । কীভাবে ওই টাকা বিনিয়োগ হয়েছিল এবং কোন অ্যাকাউন্টে সেই টাকা জমা পড়েছিল তার বিস্তারিত তথ্য হাতে পেয়ে সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিতে শুরু করে কলকাতা পুলিশ । এরপরেই একাধিক প্রযুক্তিবিদ্যার সাহায্যে খোয়া যাওয়া প্রায় 27 লক্ষ টাকা গোটাটাই উদ্ধার করতে সক্ষম হয় কলকাতা পুলিশের পোর্ট ডিভিশনের সাইবার সেল ।
আরও পড়ুন :
1 ডিপফেক টেকনোলজিকে আটকানো মুশকিল, বাঁচার পথ দেখালেন বিশিষ্ট সাইবার বিশেষজ্ঞ
2 মোবাইলে অ্যাপ ডাউনলোড করতেই ফাঁকা অ্যাকাউন্ট, সাইবার প্রতারণার শিকার মালদার যুবক
3 গ্রামের মানুষদের 7 শতাংশ কমিশন দেওয়ার লোভে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট! সাইবার প্রতারণার নতুন ছক