কলকাতা, 2 ডিসেম্বর : বছর খানেক আগে রোমানিয়ান গ্যাং-এর সদস্যদের জন্য কলকাতায় ATM জালিয়াতির আতঙ্ক ছড়িয়েছিল । এবার যাদবপুরে ATM জালিয়াতির পিছনেও সেই গ্যাংয়ের হাত রয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা । ইতিমধ্যে সেই সংক্রান্ত বেশকিছু তথ্যও পেয়েছে কলকাতা পুলিশ ।
আজ যাদবপুর থানায় 22 টি ATM জালিয়াতির অভিযোগ দায়ের হয় । প্রতিটি ক্ষেত্রে 10 থেকে 30 হাজার টাকা পর্যন্ত তুলে নেওয়া হয়েছে খবর । অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ । জানতে পারে, এই টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে দিল্লি থেকে । শুধু তাই নয়, চলতি বছরের এপ্রিলে যাদবপুরের যে দুটি ATM-এ স্কিমার পাওয়া গিয়েছিল, প্রতারিতদের অনেকেই সেই ATM ব্যবহার করেছে বলে জানতে পারেন তদন্তকারীরা । তাই পুলিশের অনুমান, এপ্রিল মাসে স্কিমারের সাহায্যে ATM কার্ড থেকে চুরি করা তথ্যের ভিত্তিতেই টাকা তুলছে প্রতারকরা ।
কিন্তু এই ATM জালিয়াতির পিছনে কারা ?
চলতি বছরের এপ্রিলে ATM জালিয়াতির অভিযোগে দিল্লির মুনিরকা, বসন্তকুঞ্জ এলাকা থেকে রোমানিয়ার তিন নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ । তারাই ATM জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা । ইতিমধ্যেই দিল্লিতে গিয়েছে কলকাতা পুলিশের তদন্তকারী দল । লালবাজার সূত্রে খবর, নির্দিষ্ট ATM থেকে CCTV ফুটেজ পেয়েছে পুলিশ ।
চলতি বছরের এপ্রিলে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজার রথীশ কুমার সিং হেয়ার স্ট্রিট থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন । সেই অভিযোগে তিনি জানান, মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে 12 এপ্রিলের মধ্যে ব্র্যাবোর্ন রোডের প্রায় 12 টি ATM-এ স্কিমার বসিয়ে গ্রাহকদের তথ্য হাতানো হয়েছে । একটি ATM থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের কর্মীরা স্কিমার উদ্ধার করেছিলেন । সেই সময় ওপিয়ান দারিউ নামে এক রোমানীয় যুবককে প্রথমে পুলিশ গ্রেপ্তার করে । তারপর তার থেকে পুলিশ জানতে পারে পার্কস্ট্রিট, যাদবপুর এলাকাতেও বসানো হয়েছিল স্কিমার । ওপিয়ানকে জেরা করে পাপুয়া রবার্ট জর্জ এবং মারিয়ানু এলিয়েন নামে দু'জনকে দিল্লি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ।
লালবাজার সূত্রের খবর, ওপিয়ান সেই সময় অ্যাড্রিয়ান লুপু নামে আরও এক যুবকের কথা জানিয়েছিল পুলিশকে । কিন্তু তাকে ধরতে সমর্থ হয়নি গোয়েন্দারা । তাই এবারে ATM জালিয়াতির ঘটনায় ওই অ্যাড্রিয়ান জড়িত রয়েছে বলে তদন্তকারীদের ধারণা । তাদের অনুমান, অ্যাড্রিয়ান নিজে এই কাজ করেছে অথবা সে ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমে কার্ডের তথ্য বেচে দিয়েছে । সেই তথ্যের ভিত্তিতেই অন্য কোনও প্রতারক গ্যাং নেমেছে ATM জালিয়াতিতে ।