কলকাতা, 2 সেপ্টেম্বর: ভাঙড় এলাকা লালবাজারের আওতাধীন হয়ে যাওয়ার পর থেকেই এলাকায় পুলিশি কার্যকলাপে একাধিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। বাহিনীর নজরদারি থেকে শুরু করে এলাকায় আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা ঠিক রাখা সব ক্ষেত্রেই পরিবর্তন এসেছে ৷ এবার পরিবর্তন হচ্ছে 'রাফ রেজিস্টার'ও। কী এই রাফ রেজিস্টার? মূলত কলকাতা পুলিশের প্রত্যেকটি থানায় একজন করে অ্যান্টি রাউডি অফিসার (এআরও) থাকেন। তিনি মূলত সাব-ইন্সপেক্টর ব়্যাংকের অফিসার। এলাকায় কোনও গুণ্ডা-মস্তান আসছে কি না, কোথায় থাকছে, কোথায় অপরাধের পরিকল্পনা করছে, সে বা তারা কতবার এর আগে পুলিশের হাতে কোথায় কবে গ্রেফতার হয়েছে, তার বিস্তারিত তথ্য সংশ্লিষ্ট পুলিশ আধিকারিক যে ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ করে রাখেন তাকেই মূলত পুলিশি ভাষায় বলা হয় 'রাফ রেজিস্টার'।
যেহেতু দক্ষিণ 24 পরগনা জেলার বারুইপুর পুলিশ জেলা থেকে ইতিমধ্যেই ভাঙড় এলাকা যুক্ত হয়েছে কলকাতা পুলিশে। ফলে হাতিশালা, পোলেরহাট, উত্তর কাশীপুর, বিজয়গঞ্জ বাজার, মাধবপুর, চন্দনেশ্বর, বোদরা এবং ভাঙড় এলাকায় কোথায় কোথায় কোন কোন সমাজবিরোধীরা কাজ করছে, কে কোথায় এসে আশ্রয় নিচ্ছে, এবার তাদের চিহ্নিত করে ঠিকুজি-কুষ্ঠি বানিয়ে ওই এলাকার নতুন রাফ রেজিস্টার বানাচ্ছে লালবাজার। প্রথম দিকে এই বিষয় কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ একাধিক পুলিশ আধিকারিকারিকের সঙ্গে কথা বলেন। নিজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের দায়িত্বে থাকা একজন পুলিশ আধিকারিক ইটিভি ভারতকে বলেন, "যেহেতু এই এলাকাগুলি আগে রাজ্য পুলিশের অধীনে ছিল, যেহেতু সেগুলি এবার লালবাজারের আধীনে এসেছে, ফলে এই সব এলাকায় নতুন করে কাজ শুরু করতে হয়েছে। এলাকায় রাফ রেজিস্টার মেনে চললে এলাকায় কোনও অপরাধের ঘটনা ঘটলে সেগুলির কিনারা করতে পুলিশ এবং গোয়েন্দা বিভাগের সুবিধা হয়।"
আরও পড়ুন: হাইকোর্টে বছরের সেরা রায়ের তালিকা প্রকাশ, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের কোন নির্দেশ স্থান পেল ?
একইসঙ্গে জানা গিয়েছে, ওই এলাকার প্রায় আটটি থানা থাকছে। সেগুলি হাতিশালা, পোলেরহাট, উত্তর কাশীপুর, বিজয়গঞ্জ বাজার, মাধবপুর, চন্দনেশ্বর, বোদরা এবং ভাঙড়। এছাড়াও ওই ডিভিশনের যানবাহন নিয়ন্ত্রণে তৈরি হচ্ছে নয়া ভাঙড় ট্রাফিক গার্ডও। কলকাতা পুলিশের দশম ডিভিশন হল ভাঙড় ডিভিশন। সেই ডিভিশনের আওতায় থাকছে দু'জন ডেপুটি কমিশনার এবং প্রায় 14 জন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদমর্যাদায় পুলিশ আধিকারিকরা। সম্প্রতি পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে এলাকায় আইনশৃঙ্খলার চূড়ান্ত অবনতি ঘটে। এলাকায় 144 ধারা জারি করতে হয় প্রশাসনকে। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ভাঙড় এলাকাকে কলকাতা পুলিশের অধীনে আনতে হবে।