কলকাতা, 29 জুন : কোরোনা সংক্রমণের জেরে গির্জাগুলিতে ভিড় এড়িয়ে চলছে উপাসনা । ভিড় এড়াতে অনেক জায়গায় শুরু হয়েছে অনলাইনে প্রার্থনাও । দীর্ঘ তিন মাস বন্ধ থাকার পর 1 জুন থেকে শহরের চার্চগুলি খুলতে শুরু করেছে । উপাসনা চললেও মানা হচ্ছে একাধিক বিধিনিষেধ ৷
প্রতি সপ্তাহে রবিবার সব থেকে বেশি সংখ্যক মানুষ প্রার্থনায় অংশ নেয় । প্রার্থনার সময় প্রায় 300 থেকে 400 জন উপস্থিত থাকেন উপাসনা কক্ষে । কিন্তু, এখন ছবিটা বদলেছে । এখন সেই সংখ্যাটা কমে দাঁড়িয়েছে 10-এ ৷ মাস প্রেয়ার আগের মতোই দিনে তিনবার হচ্ছে । কিন্তু বদলে গেছে মাস প্রেয়ারে অংশগ্রহণের নিয়ম ৷ আগে মাস প্রেয়ারে অংশগ্রহণে কোনও বিধিনিষেধ ছিল না ৷ কিন্তু এখন গির্জাগুলিতে মাস প্রেয়ারে অংশগ্রহণ করতে হলে অনলাইনে আবেদন করতে হচ্ছে ৷ আবেদনের তালিকা অনুযায়ী প্রতি সপ্তাহের রবিবার 10 জনকে প্রেয়ারে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে ৷
কলকাতায় 100-র বেশি গির্জা রয়েছে । সেখানে গির্জাগুলি খোলার ব্যাপারে নির্দেশিকা জারি করেছে বিশপ হাউস । বিশপ হাউসের সেই নির্দেশিকা মেনে চলতে হচ্ছে গির্জাগুলিকে । আর্চ বিশপ থমাস প্রতিটি গির্জার জন্য যে গাইডলাইন তৈরি করেছেন সেখানে বলা হয়েছে, প্রার্থনার সময় 10 জনের বেশি একসঙ্গে প্রার্থনা কক্ষে থাকতে পারবেন না । থার্মাল গান দিয়ে মাপা হবে দেহের তাপমাত্রা । হাত স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক । মাস্ক সকলকেই পরতে হবে । গির্জায় উপাসনা চলাকালীন বজায় রেখতে হবে সামাজিক দূরত্ব । 10 বছরের নিচে ও 60 বছরের উপর বয়স্কদের না আসতে আবেদন করা হয়েছে । সেই সঙ্গে এখন থেকে জুতো খুলে প্রবেশ করতে হবে চার্চে ।
আর্চ বিশপ থমাস জানান, "যতটা সম্ভব নিরাপত্তা অবলম্বন করেই চার্চগুলিতে প্রার্থনা করা হচ্ছে । দীর্ঘদিন ধরে চার্চগুলি বন্ধ ছিল । কিন্তু অনন্ত কাল ধরে বন্ধ রাখা সম্ভব নয় তাই ভিড় এড়িয়ে যাতে উপাসনা করা যায় সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে চার্চের পক্ষ থেকে।" তিনি আরও জানান, "নিয়মেও বেশ কিছু বদল আনা হয়েছে । এখন থেকে চার্চের ভেতরে জিশুর মূর্তি বা মাদার মেরির মূর্তিতে স্পর্শ করা যাবে না । দূর থেকেই প্রণাম করতে হবে । ইতিমধ্যেই মূর্তিগুলি সামনে স্পর্শ না করার নোটিশ টাঙানো হয়েছে চার্চগুলিতে । রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনে উপাসনা চলছে চার্জগুলিতে ।"
ফাতেমার চার্চের ফাদার অমর বাগ বলেন, "ভক্তদের থার্মাল স্ক্রিনিং হচ্ছে । হাতে স্যানিটাইজ়ার দেওয়া হচ্ছে । জুতো খুলে চার্চের ভেতরে প্রবেশ করতেও বলা হয়েছে । এখন প্রার্থনায় অংশ নেওয়ার জন্য আগে থেকে রেজিস্ট্রেশন করাতে হচ্ছে। যাতে 10 জনের বেশি ভক্ত না হয় সেই বিষয় বিশেষ করে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে ।" তিনি আরও বলেন, "প্রতিবার প্রার্থনার শেষে চার্চে স্যানিটাইজ়েশন করা হচ্ছে । দিনে তিন থেকে চারবার জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে ।"
গির্জাগুলিতে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা প্রশংসনীয় বলে মনে করছেন অনেকেই । ইতিমধ্যেই বিশপ হাউস থেকে অনলাইনে প্রার্থনা শুরু করা হয়েছে । 22 মার্চ থেকেই এই অনলাইনে প্রার্থনা চলছে । যাঁরা গির্জায় যেতে পারছেন না তাঁদের কথা ভেবেই এই পদক্ষেপ ৷