কলকাতা, 3 মার্চ: নিজস্ব পার্কিং লটেই ইলেকট্রিক গাড়ির জন্য চার্জিং স্টেশন (Charging Station for Electric Vehicle in Kolkata) তৈরির সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা পৌরনিগম (Kolkata Municipal Corporation) ৷ কিন্তু, কেন এই পদক্ষেপ ? তথ্য বলছে, আমাদের প্রিয় মহানগরের বাতাসে ক্রমশ বাড়ছে দূষণ ৷ পরিস্থিতি বাগে আনতে পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে নানা পদক্ষেপ করছে পৌরনিগম কর্তৃপক্ষ ৷ ডিজেল ও পেট্রলচালিত গাড়ির ধোঁয়া কমাতে সরকারি পরিবহণব্যবস্থার আওতায় ধাপে ধাপে ইলেকট্রিক বাস কিনছে তারা ৷ নাগরিকদেরও ইলেকট্রিক গাড়ি কেনার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে ৷ তবে, বাস বা চারচাকা ব্যক্তিগত গাড়ি, যাই হোক না কেন, কলকাতায় রাস্তায় এগুলির জন্য কোনও চার্জিং স্টেশন নেই ৷ ফলে অনেকেই ইলেকট্রিক ব্যাটারিচালিত, পরিবেশবান্ধব গাড়ি কিনতে গিয়েও পিছিয়ে আসছেন ৷ এদিকে, ঘিঞ্জি শহরে চার্জিং স্টেশন তৈরি করার মতো জায়গাও পাওয়া যাচ্ছে না ৷ এই অবস্থায় নিজস্ব পার্কিং লটেই ই-গাড়ির চার্জিং স্টেশন তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে পৌরনিগম (KMC) ৷
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কলকাতার বাতাসের গুণগত মান ক্রমশ নীচে নামছে ৷ বাতাসে বাড়ছে দূষণের বিষ ! এর কারণ হিসাবে অরণ্যছেদন, কংক্রিট বর্জ্যের বাড়বাড়ন্ত-সহ একাধিক বিষয়কে তুলে ধরা হয়েছে ৷ পরিস্থিতি শোচনীয় করে তুলেছে ক্রমশ বেড়ে চলা যানবাহনের ধোঁয়া ৷ সমস্যা মোকাবিলায় শহরের নানা অংশে বৃক্ষরোপন করা হচ্ছে ৷ তবে, তাতে বিরাট কিছু পরিবর্তন হয়নি ৷ এই অবস্থায় যানবাহনে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার শূন্যে নামিয়ে আনতে পারলে পরিবেশ বাঁচানো সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা ৷ ফলে শুধু কলকাতা নয়, বিশ্বজুড়েই ইলেকট্রিক গাড়ির চাহিদা বাড়ছে ৷
বেশ কয়েক বছর আগে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী থাকাকালীন ইলেকট্রিক গাড়ির জন্য চার্জিং স্টেশন তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিলেন ৷ কিন্তু, জায়গা না-মেলায় সেই উদ্যোগ আর বাস্তবায়িত হয়নি ৷ এদিকে, বর্তমানে যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে এবার এই বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ করা জরুরি ৷ সেই কারণেই নিজস্ব পার্কিং লটে চার্জিং স্টেশন তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা পৌরনিগম কর্তৃপক্ষ ৷
আরও পড়ুন: বহুতলে অত্যাধুনিক কার পার্কিং, আলিপুরে 'সম্পন্ন' উদ্বোধন মুখ্যমন্ত্রীর
সূত্রের খবর, প্রস্তাবিত চার্জিং স্টেশনগুলি তৈরি, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে ৷ প্রথম দফায় 13 পার্কিং লটে চার্জিং স্টেশন তৈরি করা হবে ৷ এর মধ্যে রয়েছে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোড, রাজা রামমোহন রায় সরনি, গার্ডেন রিচের মতো এলাকায় থাকা পার্কিং লটগুলি ৷ প্রতিটি স্টেশনে একসঙ্গে সর্বাধিক 12টি গাড়িতে চার্জ দেওয়া যাবে ৷ এর মধ্য়ে কিছু চার্জার হবে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এবং কিছু চার্জার থাকবে নিম্ন ক্ষমতাসম্পন্ন ৷ বাস থেকে শুরু করে চারচাকার ব্যক্তিগত গাড়ি, সবকিছুতেই চার্জ দেওয়া যাবে ৷ স্থির হয়েছে, প্রথম 5 বছর সংশ্লিষ্ট বেসরকারি সংস্থা চার্জিং স্টেশন পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করবে ৷ বদলে কলকাতা পৌরনিগমকে আয়ের একটি অংশ দেবে তারা ৷