কলকাতা, 11 সেপ্টেম্বর: পুজো বাকি এখনও মাসখানেক ৷ তবে বেশ কিছুদিন আগে থাকতেই শহরজুড়ে দেদার বিজ্ঞাপন চোখে পড়ছে । এইরকম বিজ্ঞাপনের ব্যানারে পুজো কমিটির একাংশই প্রতিবাদ জানিয়েছেন । বিষয়টি জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের সম্পাদক শাশ্বত বসু । এবার তা খতিয়ে দেখতে অভিযানে নামছে কলকাতা পৌরনিগম ৷ সোমবার জানালেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম ।
পৌরনিগম সূত্রে খবর, এমন হোর্ডিং ব্যানার খুলে ফেলা শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই । সেই কাজ আরও দ্রুততার সঙ্গে করতে বলা হয়েছে । পাশাপাশি গাছের গুঁড়ি কোনওভাবেই যাতে বিজ্ঞাপনের কাঠামোর জন্য ব্যবহার না করা হয় বা গাছের ডাল না কাটা হয় বিজ্ঞাপন দেখা যাচ্ছে না বলে সেই বিষয়েও নজর রাখছে পৌরনিগম ।
পুজোর সময় বিজ্ঞাপনের কর বেশি থাকে কলকাতায় । তবে পুজো কমিটিগুলোর সুবিধার্থে পুজোর বিজ্ঞাপনে কর ছাড় দেয় কলকাতা পৌরনিগম । সেই সুযোগেই অসাধু বিজ্ঞাপন এজেন্সি বা সংস্থাগুলো পুজোর দু'মাস আগেই শহরজুড়ে পুজোর ব্যানার লাগিয়ে ফেলেছে ৷ তাতে বিজ্ঞাপন বেশি, পুজো কমিটির নাম দূরবীন দিয়ে খুঁজতে হচ্ছে । ফলে পুজো কমিটিগুলোর ঘাড়ে ভর দিয়ে কর বাঁচানোর ছক করছে সংস্থাগুলো । তাতে পৌরনিগম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ।

এক পুজো কমিটির কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে চাঁদা তুলে আর পুজো হয় না । বিজ্ঞাপনদাতারাই এখন কলকাতার পুজোর ভরসা । সারাবছরই পুজো কমিটিগুলির সমাজসেবায় থাকে বিজ্ঞাপনদাতারা । তাই বিজ্ঞাপনদাতাদের আবদারও রাখতে হয় ।
কলকাতার সিংহভাগ পুজো কমিটির মাথায় থাকা ফোরামের সম্পাদক শাশ্বত বসু জানাচ্ছেন, এই ধরনের বিজ্ঞাপনের বিরোধী তাঁরা । 2019 সালেও কলকাতা পৌরনিগমকে সতর্ক করেছিল ফোরাম । এই ধরনের বিজ্ঞাপন কোনওভাবেই সমর্থন করে না ফোরাম ফর দুর্গোৎসব । দু'বার করে চিঠি দিয়ে এই ধরনের বিজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছে ফোরাম ।
পুজোর থিম প্রচারে বিজ্ঞাপন হাতিয়ার থাকলেও এখন সামাজিক মাধ্যম সেই জায়গা নিয়েছে । তাই পুজোর আগে পুজো কমিটিগুলো খুব কমই ব্যানার হোর্ডিং লাগায় । তবে তাদের নাম ব্যবহার করে একাংশ সংস্থা তাদের অজান্তেই বড় বড় হোর্ডিং লাগিয়ে নিজেদের সংস্থার বিজ্ঞাপনী প্রচার চালাচ্ছে । ক্লাব জানতেই পারছে না ।
এই প্রসঙ্গে মেয়র ফিরহাদ বলেন, "আমরা ক্লাবগুলোকে বিজ্ঞাপন বাবদ খরচে ছাড় দিয়েছি । সেই সুযোগ নিচ্ছে বিভিন্ন সংস্থা । বেআইনিভাবে হোর্ডিং লাগাচ্ছে । ছোট পুজো জানে না যে তাদের ক্লাবের নামে শহরের নানা জায়গায় হোর্ডিং দেওয়া হয়েছে । বিজ্ঞাপনে বড় করে ক্লাবের নাম দিয়ে চিহ্নিত করতে হবে । নির্দিষ্ট ব্যানার হোর্ডিং তাদের । না হলে বিজ্ঞাপন খরচ পুজোয় অনেক বেশি থাকে সেই টাকা আমাদের ক্ষতি হচ্ছে । কিছু বিজ্ঞাপন সংস্থা টাকা দেয় ক্লাবকে । আর বাকিরা তো দেয় না আবার পৌরনিগমকেও দেয় না ।"
আরও পড়ুন : সানগ্লাস দুলিয়ে জমিয়ে নাচ, ভবানীপুর 75 পল্লীর খুঁটিপুজোর মঞ্চ মাতালেন মদন