কলকাতা, 15 মার্চ: বড়বাজার বা বাগবাজার, রতনবাবুর ঘাট এসব এলাকায় গঙ্গার পাড় বেশ কয়েক বছর ধরেই ভাঙছে। বড়বাজার ভাঙনের গ্রাসে চলে গিয়েছে বেশ অনেকটা জমি। এক সময় বাবুঘাট প্রিন্সেপ ঘাট-সহ নিমতলার কিছু কিছু অংশে পাড় বাঁধানো, সংস্কার ও সৌন্দর্য্যায়ন করা হয়েছিল। তবে তারপরে আর কিছুই হয়নি। আবার অনেক জায়গাতেই নদীর পাড়ে কোনও ঘাট নেই। এবার ভাঙন রোধে সেই সমস্ত জায়গাগুলোতে ম্যানগ্রোভ লাগাতে চাইছে (KMC is Planning to Plant Mangroves) কলকাতা কর্পোরেশন। এই নিয়ে বিশেষজ্ঞদের থেকে পরামর্শ চাওয়া হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে বাগবাজার বিচলী ঘাট থেকে রতনবাবুর ঘাট পর্যন্ত 15 কিলোমিটারের বেশি অংশে এই ম্যানগ্রোভ লাগানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
বাবুঘাট, বাঁজা কদমতলা ঘাটের ধারে কিছু গাছ কলকাতা কর্পোরেশনের উদ্যান বিভাগ লাগলেও তা নেহাত সাজানোর জন্য, দীর্ঘস্থায়ী নয়। ফলে দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে ম্যানগ্রোভ লাগানোর বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হয়েছে। যদিও এর জন্য বন্দর ও সেনাবাহিনীর অনুমতি প্রয়োজন। ইতি মধ্যে কলকাতা বিশ্ব বিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের কিছু ছাত্রছাত্রী এই বিষয় একটি সমীক্ষা চালিয়েছেন। কোথায়, কী ধরনের ম্যানগ্রোভ গাছ বসানো যাবে, কতটা জায়গা আছে, কী ধরনের মাটির অবস্থা এমন নানা বিষয়ে।
আরও পড়ুন: রাজমহল ও মালদার মধ্যে গঙ্গাসেতু নির্মাণে আগ্রহী ঝাড়খণ্ড, বাংলার প্রস্তাবের অপেক্ষা
এই সমীক্ষার উপর বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হবে। পরিবেশ বিজ্ঞানী ডঃ স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী এই পরিকল্পনাকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, "জলের মান ক্রমশ পরিবর্তন হয়েছে। তার জেরে ধীরে ধীরে মাটির বৈশিষ্ট্য বদল আসছে। বাড়ছে জলস্তর। নদীর জলেরও ঘনত্ব পরিবর্তন হচ্ছে। নদীর আশপাশের বিভিন্ন জায়গায় ম্যানগ্রোভ জন্মাচ্ছে স্বাভাবিক নিয়মে। ম্যানগ্রোভ আরও বেশি পরিমাণ মাটিকে ধরে রাখতে পারে। তাতে গঙ্গার ভাঙন রোধে অনেকটাই সম্ভব হবে।" এই প্রসঙ্গে কলকাতা কর্পোরেশনের এক আধিকারিক জানান, পুরো বিষয়টি নিয়ে সমীক্ষা, আলোচনা ইত্যাদি ধাপে ধাপে হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বন্দর ও সেনার গুরুত্ব বুঝে অনুমতি দেবে আশা করি। তারপর জোরকদমে এগোনো সম্ভব।