কলকাতা, 22 অগস্ট: বেআইনি বাড়ি নির্মাণ নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে কলকাতা পৌরনিগম । জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে সোমবার সিঁথি এলাকায় প্রাক্তন এক পুলিশকর্তার পরিবারের সদস্যের বেআইনিভাবে নির্মীয়মাণ বাড়ি ভাঙল পৌরনিগম ।
অভিযোগ, প্রাক্তন পুলিশকর্তা প্রভাব খাটিয়ে নানাভাবে চাপ তৈরি করে ভাঙার কাজে বাধা দেয় । তবে ধোপে টেকেনি সেই সব । অধিকাংশ বেআইনি অংশ ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে ডেমোলিশন স্কোয়াডের কর্মীরা । বাকিটা আজ করবে ।
কলকাতা পৌরনিগম সূত্রে খবর, ওই বাড়িটি সিঁথির গণপতি সুর লেনে । তিনতলা বাড়িটির সামনের দিকে কলাম তুলে দোতলা এবং তিনতলায় লম্বা ব্যালকনি বা বারান্দা বানানো হয়েছে । যা পুরোটাই বেআইনি । এর জন্য বিল্ডিং বিভাগের কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি । ওই বাড়ির কর্তা সম্পর্কে লালবাজারের এক উচ্চপদস্থ প্রাক্তন পুলিশকর্তার ঘনিষ্ঠ ।
এই বিষয় পৌরনিগমের বিল্ডিং বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, "এদিন দোতলার বেআইনি অংশ ভাঙা হয়েছে । এবার ধাপে ধাপে কলাম-সহ গোটা বেআইনি অংশ ভেঙে ফেলা হবে । ওই পুলিশকর্তা মেয়রকে ফোন করবেন বলে জানিয়েছিলেন । কিন্তু, আমাদের কাছে উচ্চস্তর থেকে ভাঙা বন্ধ করার আপাতত কোনও নির্দেশ আসেনি ।"
অন্যদিকে, উলটোডাঙার 14 নম্বর ওয়ার্ডে বি 19/এইচ/এইচ/1 হরিশ নিয়োগ রোডেও সোমবার একটি বেআইনি নির্মাণ ভাঙা হয় । দেশবন্ধু স্কুলের সামনে একটি দোতলা বাড়ি । সেখানে দোতলার উপরে তিনতলায় বেআইনিভাবে ঘর বানানো হয়েছে । তাই ওই তিনতলার অংশটি ভেঙে ফেলা হয়েছে ।
আরও পড়ুন : বেআইনি নির্মাণ শুরুর আগেই বন্ধ করুন, বৈঠকে নির্দেশ মেয়র ফিরহাদের
এই বিষয়ে বাড়ির বাসিন্দা গোপাল রায়ের অভিযোগ করে বলেন, "আমি তৃণমূলের পুরনো কর্মী । 2007 সাল থেকে দল করি । কাউন্সিলর অমল চক্রবর্তীর দুর্নীতি ধরেছি । তাই আমার বাড়ি ভাঙল । বাড়ির তিনতলার ঘরের ছাদ সম্পূর্ণভাবে ভেঙে দেওয়া হয়েছে ।" তাঁর স্ত্রী মিঠু রায়ের কথায়, "আজ থেকে ছেলের পরীক্ষা শুরু । আজই এই ঘটনা । কীভাবে ছেলেটা পড়বে ? আমাদের মাথা থেকে ছাদটাই কেড়ে নিল । আমার শ্বশুরমশাই অসুস্থ হয়ে গিয়েছেন ।"
যদিও, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কাউন্সিলর অমল চক্রবর্তী জানান, কোনও প্রতিহিংসা নেই । যার জায়গা, সেই ওর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে । যৌথ উদ্যোগে বাড়ি করে অন্যজনকে ঠকিয়েছে । ওর কাছে দলিল নেই । ওকে দলিল দেখাতে বলুন । বেআইনিভাবে নির্মাণ হয়েছে । তাই পৌরনিগম ভেঙে দিয়েছে ।
উল্লেখ্য, 400(8) ধারায় কোনও নোটিশ ছাড়াই গোপনে বেআইনি নির্মাণ ভাঙার আইন রয়েছে । সেই অনুযায়ী নিয়মিত পদক্ষেপ করা হচ্ছে । সোমবার একদিনে শহরে কমবেশি 20টি জায়গায় বেআইনি নির্মাণ ভাঙার কাজ চালালো পৌরনিগম ।
আরও পড়ুন : 'অফিসাররা ঘুষ খাচ্ছে, বদনাম হচ্ছে মেয়র', বেআইনি নির্মাণ নিয়ে বিস্ফোরক মেয়র