কলকাতা, 31 মে : অনুমোদিত নকশার বাইরে গিয়ে কেউ ছাদে ছোট ঘর করেন, কেউ বা বারান্দা খানিকটা বাড়িয়ে ফেলেন । এমন ঘটনা নতুন নয় ৷ অভিযোগও কম নয় ৷ এবার শহরের এই বাড়িগুলির অনুমোদনহীন এই অংশগুলিতে আইন মাফিক অনুমোদন দিয়ে মোট অঙ্কের আয় হল কলকাতা পৌরনিগমের ৷ গত 2022-23 অর্থবর্ষে এভাবে প্রায় 300 কোটি টাকা কোষাগারে তুলেছে কলকাতা কর্পোরেশনের বিল্ডিং বিভাগ ।
সাধারণ দেখা যায়, নতুন বাড়ি তৈরির নকশা পৌরনিগম অনুমোদন করার পরে যে বাড়ি তৈরি হয় তাতে হয়তো কেউ ঘরের বারান্দা অনুমদিত নকশার বাইরে গিয়ে তৈরি করেছেন, কেউ ছাড়া জায়গার নিচে ঘর করেছেন ৷ আবার কেউ ছাদে ঘর বানিয়েছেন । কেউ আবার সানসেড খানিক বাড়িয়ে দিয়েছেন । অধিকাংশ সময়ে পৌরনিগমের তরফে পরিদর্শনের সময় দেখা যায় পরিবারের লোকসংখ্যা বাড়ায় এইগুলি করা হয় ৷ মানবিক কারণেই এইসব ক্ষেত্রে বাড়ি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া থেকে বিরত থাকে কলকাতা কর্পোরেশন ।
পরে এই ধরনের ত্রুটি সংশোধনে কলকাতা কর্পোরেশন আইন তৈরি করে । এগুলিকে মাইনর ডেভিয়েশন বলা হয়ে থাকে ৷ এক্ষেত্রে শুনানি করে অনুমোদন দেওয়া হয় ওই অতিরিক্ত নির্মাণে । প্রতি ওয়ার্ডের প্রতিটি এলাকায় নজরদারি করে এই কাজ করছে বিল্ডিং বিভাগ । তার সুফল তারা তুলতে পারছে দু'বছর ধরে ৷ 2021-22 অর্থবর্ষে এই খাতে কলকাতা কর্পোরেশনের আয় হয় প্রায় 160 কোটি টাকা ।
আর তার পরের বছর অর্থাৎ 2022-23 অর্থবর্ষে সেই আয় বেড়ে হয়েছে প্রায় 310 কোটি টাকা । শহরে গত 10 বছরে অনেকটাই বেড়েছে বেআইনি নির্মাণের ঘটনা । আর তাতে লাগাম না দিতে পরে আর্থিক জরিমানা করে অনুমোদন দেওয়ার পরকল্পনা করেছিল প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় । তবে সেই সময় আইন করা হলেও জরিমানার বিষয়টি তেমন কিছু এগোয়নি । পরে ফিরহাদ হাকিম কলকাতার মেয়র হন । তিনি কয়েক বছর আগে এই আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন ।
আরও পড়ুন: পৌরনিগমের ওয়েবসাইটে দেখা যাবে বাড়ির অনুমোদিত নকশা, বেআইনি নির্মাণ রুখতে তৎপর কর্পোরেশন
সেই মতো পৌর কমিশনার বিনোদ কুমার তৎপর হন । কর্পোরেশন সূত্রে খবর, নকশার বাইরে অতিরিক্ত নির্মাণ করা এরকম প্রায় 250-300 জন মালিকের কাছে প্রায় 50 কোটি টাকা বকেয়া ছিল ৷ তাদের থেকে সুদ সমেত প্রায় 100 কোটি টাকা আদায় হয়েছে ৷ এই প্রসঙ্গে কর্পোরেশনের এক আধিকারিক জানান, দীর্ঘদিন নরম মনোভাব দেখানোয় বকেয়ার পরিমাণ প্রায় 50 কোটি টাকার বেশি হয়েছিল । তবে কঠোর হয়ে বর্তমান হারে জরিমানা আদায় করা হয়েছে ৷ পাশাপাশি, নতুন কিছু ঘটনাও সামনে এসেছে ৷ সব মিলিয়ে জরিমানা আদায় করে এই আয় হয়েছে ৷ এই প্রক্রিয়া চলবে ৷