কলকাতা, 8 এপ্রিল : প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা মানুষের ব্যক্তিগত কারণ, সবসময় সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় । আয়লা বিধ্বস্ত সুন্দরবন-সহ দক্ষিণ 24 পরগনার সর্বত্র কীভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্য করেছেন তিনি, তা রাজ্যবাসী মাত্রই জানেন । খালি গায়ে, খাটো প্যান্ট পরে আয়লাবিধ্বস্ত এলাকায় বালির বস্তা দিয়ে বাঁধ নির্মাণের কাজ করেছেন এলাকার "কান্তি বুড়ো" । এবার লকডাউনে রাজ্যের ভয়াবহ পরিস্থিতিতে অভুক্ত মানুষের পাশে একইভাবে রইলেন তিনি ।
একসময় মন্ত্রীত্বের তকমা ছিল । বামফ্রন্টের রাজত্বকালে তিনি ছিলেন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী । কিন্তু আর্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অদৃশ্য আর্মব্যান্ড তাঁর হাতে সব সময় । বাঘে মানুষের সহাবস্থানের জলাভূমিতে তিনিই বিপদতারণ । বলছেন, সুন্দরবনের পুরো দায়িত্ব নেওয়ার ক্ষমতা তাঁর নেই । কিন্তু রায়দিঘি এলাকার মানুষ যাতে অভুক্ত না থাকে তার জন্য নিয়মিত খাবারের ব্যবস্থা রেখেছেন তিনি ৷ কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "আমি যেখানে থাকি রায়দিঘিতে আমার বাড়ির চারিপাশে প্রায় 300 পরিবার রয়েছে । প্রত্যেকের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে । একদিনও কেউ না খেয়ে থাকবে না । মুটে, মজুর, চাষি, হকার, সব মিলিয়ে প্রায় দেড় হাজার মানুষকে চাল, আলু, ডাল বিলি করা হয়েছে । মথুরাপুর স্টেশনের হকার যেমন আছে, তেমনি মন্দিরবাজার, বিজয়গঞ্জের মুটে মজুরদের বেশি বেশি করে চাল, ডাল, আলুর ব্যবস্থা করে দিয়েছি । সমস্ত সুন্দরবনের মানুষের জন্য হয়তো ত্রাণের ব্যবস্থা করতে পারব না ।"
হৃদরোগ, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ-সহ সংকটজনক রোগীকে কোনও হাসপাতাল ভরতি নিচ্ছে না । সেই সময় দাঁড়িয়ে প্রাক্তন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় কঠিন রোগের চিকিৎসা করাচ্ছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দিয়ে। থ্যালাসেমিয়া, হিমোফিলিয়া আক্রান্ত রোগীদের জন্য সুন্দরবনে এবং দক্ষিণ 24 পরগনার সর্বত্র রক্তদান শিবিরও করছেন তিনি । প্রচারবিমুখ কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, ত্রাণ বিলি করার ছবি তিনি কাউকে তুলতে দেন না । এসব সস্তা প্রচার অপছন্দ তাঁর । বিপন্ন মানুষের জন্য মানুষই সাহায্য করবে । এটা খুব স্বাভাবিক ব্যাপার । তাই সংবাদমাধ্যমে প্রচার তিনি একদমই চাননা ।
"এলাকার তৃণমূল বিধায়ক দেবশ্রী রায় গত আট মাস ধরে রায়দিঘি এলাকায় আসেন না । টোটো কেলেঙ্কারির পর রায়দিঘিতে ঢোকার মুখ নেই তাঁর ।" বললেন কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় । ভ্যানে করে এলাকার মানুষের বাড়িতে ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি । আনন্দের সঙ্গে জানালেন, কুলপি, মন্দির বাজার এবং রায়দিঘি এলাকার প্রায় 150 যুবককে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের চাহিদামতো অ্যাপ্রন সেলাই করার কাজে নিযুক্ত করেছেন । আগামীকাল এবং পরশু বিশেষ বাসে করে তাঁদের সেলাইয়ের কাজে পাঠানো হবে ।