কলকাতা, 22 জুন: রাজ্য পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের টিকিটে প্রার্থী হয়েছেন ৷ মনোনয়নও জমা দিয়েছেন ৷ নির্বাচন কমিশনের স্ক্রুটিনিতেও সব ঠিক রয়েছে বলে ছাড় পেয়ে গিয়েছেন তিনি ৷ এ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল ৷ গোল বাঁধল কলকাতা হাইকোর্টে ৷ বৃহস্পতিবার এক মামলায় আচমকাই প্রার্থীকে তলব করেন বিচারপতি ৷ প্রার্থীর বদলে তারপর যা শুনলেন, তাতে হতবাক খোদ হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা ৷ প্রার্থীর অনুপস্থিতিতে কীভাবে তাঁর মনোনয়ন পত্র জমা পড়ে যায়, এমনকী স্ক্রুটিনি পর্বও সম্পন্ন হতে পারে, এর সদুত্তর পেলেন না খোদ বিচারপতি ৷ যার জেরে এবার অভিবাসন দফতরকে মামলায় যুক্ত করার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি ৷
রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা গিয়েছে ৷ মনোনয়ন জমা দেওয়া থেকে শুরু হয়েছে রক্তপাত, হিংসার ঘটনা ৷ আর তারপরই কার্যত হাইকোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়েছে কমিশন ৷ এমনকী নিরপেক্ষ ভোট করাতে কমিশন ব্যর্থ হলে কমিশনারকে পদ থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশও দিয়েছে হাইকোর্ট ৷ এরপর মনোনয়ন সংক্রান্ত নতুন মামলায় এবার খোদ প্রার্থী না-থাকলেও স্ক্রুটিনিতে তিনি পাশ করে গিয়েছেন, এমন নজিরের হদিশ পেয়ে স্তম্ভিত হাইকোর্ট ৷ তৃণমূলের প্রার্থী মইনুদ্দিন গাজি রয়েছেন সৌদি আরবে ৷ অথচ তাঁর নামেই জমা পড়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র। এমনকী স্ক্রুটিনি পর্বও শেষ ৷ কী করে হয়? প্রশ্ন খোদ বিচারপতি অমৃতা সিনহার। কেন্দ্রের অভিবাসন দফতরকে মামলায় যুক্ত করতে এদিন নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা।
এদিন মামলার শুনানিতে বিচারপতি সিনহা বলেন, "প্রার্থী পৌঁছতে পারছেন না। বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছেন। আর কিছু প্রার্থী না-গিয়েই মনোনয়ন দাখিল করছেন! আইন অনুযায়ী স্বাক্ষর করতে হবে প্রার্থীকেই । কিন্তু প্রার্থী কোথায়? স্ক্রুটিনি দরকার কি? অফিসাররা কী করছেন?" রাজ্যের তরফে আইনজীবী শীর্ষাণ্য বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "স্ক্রুটিনিতে সই নকল বলে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি ৷ আর সে কারণেই হয়তো অফিসার সত্য বলে ধরে নিয়েছেন।" উল্লেখ্য, অভিযোগকারী বাম প্রার্থী মিনাখাঁর কুমারজোলর গ্রাম পঞ্চায়েতে শাসক দলের প্রার্থী কীভাবে সৌদি আরবে বসে মনোনয়ন ফাইল করলেন, সেই প্রশ্ন তুলে মামলা দায়ের করেন। এদিন নির্বাচন কমিশনের রিপোর্ট তলব করেন বিচারপতি। শুক্রবার দুপুরে মামলার পরবর্তী শুনানি।
আরও পড়ুন: নির্বাচন কমিশনারের পদে কি তিনি এখনও আছেন, রাজীবা সিনহাকে নিয়ে প্রশ্ন বিচারপতি সিনহার
অভিযোগ, যেদিন নোটিফিকেশন বের হয় তার আগেই মইনুদ্দিন গাজি নামে ওই প্রার্থী দেশ ছেড়ে চলে যান। হজ কমিটি থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী 4 জুন সৌদি আরবে গিয়েছেন তিনি ৷ তাঁর ফিরে আসার কথা 16 জুলাই। মনোনয়ন জমা করা তাঁর পক্ষে কোনওভাবেই সম্ভব ছিল না। যদি না শাসক দলের সঙ্গে ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসার ও পঞ্চায়েত রিটার্নিং অফিসারের কোন যোগসাজস থাকে। মামলায় স্বাধীন তদন্তকারী সংস্থা কে দিয়ে তদন্তের আবেদন জানানো হয়।