কলকাতা, 19 ডিসেম্বর: শুনানির সময় কথা বলতে বলতে হেসে ফেলেছিলেন এক আইনজীবী ৷ আর তাতেই বেজায় চটে গেলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ৷ সোমবার এই ঘটনায় তিনি এতটাই ক্ষুব্ধ হন যে বিচারপতি ওই আইনজীবীকে শেষ পর্যন্ত হাইকোর্টে শেরিফের জেল হেফাজতেই পাঠিয়ে দেন ৷ আইনজীবীরা বিচারপতির ক্ষমা দাবি করেছেন ৷ পাশাপাশি ক্ষমা না চাইলে আইনজীবীরা বিচারপতি বেঞ্চ বয়কট করতে পারেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ৷
একটি মামলার শুনানিতে আদালত কক্ষে হাজির ছিলেন আইনজীবী প্রসেনজিৎ মুখোপাধ্যায় ৷ কথা বলতে গিয়ে তিনি হেসে ফেলেন ৷ সঙ্গে সঙ্গে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ৷ রীতিমতো ফুঁসে উঠে তিনি বলেন, "এটা হাসির কথা !" আইনজীবী ডিভিশন বেঞ্চের একটি নির্দেশ দেখিয়ে বলেন, "বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে অযথাযথ বলে নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ ৷" এই কথা বলার সময় হাসি মুখেই বলেন ৷ আর আদালতকক্ষে আইনজীবীর এই আচরণে বেজায় চটে যান বিচারপতি ৷ সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাইকোর্টের বিশেষ জেলে পাঠিয়ে দেন ৷
এই ঘটনার পরপর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসের বাইরে রীতিমতো আইনজীবীদের ভিড় শুরু হয়ে যায় ৷ আইনজীবীরা বলতে শুরু করেন, এইভাবে কাউকে জেলে পাঠানো যায় নাকি ? এটা অন্যায় ৷ আইনজীবীরা দল বেঁধে হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনে গিয়ে অভিযোগ জানান ৷
এই সাজা দেওয়ার কিছুক্ষণ পরেই বিচারপতি তাঁর নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেন ৷ কিন্তু ওই আইনজীবী বার অ্যাসোসিয়েশনে চিঠি লেখেন, তাঁকে বিনা কারণে অপমান করা হয়েছে ৷ হাইকোর্ট বারের তরফে তারপরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর এই ধরনের আচরণের জন্য যতদিন না পর্যন্ত ক্ষমা চাইবেন, ততদিন পর্যন্ত আইনজীবীরা বিচারপতির বেঞ্চের মামলায় অংশগ্রহণ করবেন না ৷
পাশাপাশি প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের বেঞ্চে ওই আইনজীবী আবেদন জানিয়েছেন, তাঁকে যে ভাবে অপমান করা হয়েছে, এর ন্যায় বিচার করতে হবে ৷ ভবিষ্যতে একই ঘটনা অন্য আইনজীবীদের সঙ্গেও ঘটতে পারে ৷ প্রধান বিচারপতি, বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ তৈরি করে রাতেই এই মামলার শুনানির নির্দেশ দেন ৷ বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্য ডিভিশন বেঞ্চ আপাতত বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের দেওয়া সব নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ জারি করেছেন ৷
আরও পড়ুন: