ETV Bharat / state

'মাতৃভাষায় বলে জিভ কাটলে 21 ফেব্রুয়ারি অর্থহীন', বাংলায় সওয়ালের পক্ষে ব্যাট ধরলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়

Justice Abhijit Gangopadhyay: এবার থেকে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে বাংলা ভাষায় সওয়াল করা যাবে ! অন্তত বিচারপতির বক্তব্য থেকে তেমনটাই উঠে এসেছে ৷ কোর্ট অফিসারদের তিনি বিভিন্ন কথা বাংলাতেই বলতে শুরু করেছেন এজলাসে।

Etv Bharat
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jan 18, 2024, 6:13 PM IST

কলকাতা, 18 জানুয়ারি: বাংলা ভাষায় সওয়াল করা নিয়ে কয়েকদিন আগেই মুখ খুলেছিলেন। বৃহস্পতিবার ফের মাতৃভাষায় মামলা করা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

এদিন একটি মামলার শুনানির সময় এজলাসেই বিচারপতি বলেন, "সুপ্রিম কোর্ট যদি আমাকে এজলাসে বাংলা ভাষায় কথা বলার কারণ জানতে চায় তাহলে আমি মৃদুভাবে, সবিনয়ে তার একটি উত্তর দেব। সেই উত্তর সবাইকে জানিয়েই দেব। আমি লক্ষ্য করেছি এখানে অনেকে এসে বাংলায় কথা বলেছেন বলে জিভ কেটেছেন। মাতৃভাষায় কথা বলার জন্য যেখানে জিভ কাটতে হয় সেখানে 21 ফেব্রুয়ারির কোনও মানে হয় না। আমাকে এখনও পর্যন্ত কোনও আবেদনকারী এসে যদিও বলেননি তিনি ইংরেজিতে কথাবার্তা বুঝতে পারছেন না।"

ফলে বলাই যায়, এদিন থেকে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বাংলায় শুনানি শুরু করলেন। উপস্থিত মামলাকারি (বাদী) ও বিবাদী পক্ষের বোঝার সুবিধার জন্য এই সিদ্ধান্ত বলেও জানিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, গত 11 জানুয়ারি বিচারপতি এজলাসে বসে বাংলা ভাষায় শুনানিতে আপত্তি কেন, সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন। তিনি বলেন, "বাংলা ভাষায় শুনানিতে আপত্তি কেন ? আমাদের মাতৃভাষায় কথা বলতে অসুবিধা কীসের ? যে কেউ আমার কাছে বাংলায় মামলা করলে আমি তা গ্রহণ করি। এতে অন্যদের আপত্তি থাকার কথা নয়।"

সেই সময় বিচারপতি আরও জানিয়েছিলেন, "বাংলাভাষাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বইমেলায় বেশ কিছু উপযুক্ত বই বেরোচ্ছে। আমি নিজেও সেখানে একটি কবিতার বই লিখেছি। ইংরেজরা ইংরেজি ভাষাটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আদালত-সহ বিভিন্ন জায়গায় ইংরেজি ভাষার প্রচলন করেছিল। তাহলে আমরা বাংলা ভাষাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এই প্রচেষ্টা চালাব না কেন ?"

এদিন অবশ্য এজলাসে উপস্থিত আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছেলে আইনজীবী শীর্ষাণ্য বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আইনের সমস্ত বিষয় ইংরেজিতেই হয়। যেমন আবেদন (পিটিশন), হলফনামা (এফিডেবিট), নির্দেশ (অর্ডার) সবই লেখা হয় ইংরেজিতে। বাংলায় সওয়াল করলে কীভাবে চলবে ? সওয়াল পর্ব কোন কাজে ব্যবহার করা হবে ?" যার উত্তরে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি তা বলিনি। আদালত চত্বরে যাঁরা আসেন, তাঁরা যাতে বুঝতে পারেন আদালত কক্ষে কী হচ্ছে; সেই কথা ভেবেই সওয়ালটা বাংলায় হোক। তবে যে পারবে সে ইংরেজিতেও বলবে।"

উপস্থিত থাকা আইনজীবী কল্লোল বসু বলেন, ‘‘হোক না। শুরুটা আপনি করুন। ভাষার প্রতি সংবেদনশীলতা থাকা প্রয়োজন।’’ বিচারপতি বলেন, ‘‘এই বাংলা নিয়ে কেউ আমার কাছে ব্যাখ্যা চাইলে আমি অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে তার উত্তর দেব।’’ এরপরেই কোর্ট অফিসারদের তিনি বিভিন্ন কথা বাংলাতেই বলতে শুরু করেন।

আরও পড়ুন:

  1. লালবাজারের মুকুটে যুক্ত হল 'স্কচ অ্যাওয়ার্ড', সম্মানিত প্রণাম ও সুকন্যা
  2. রাজ্যে জব কার্ড দুর্নীতির তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন হাইকোর্টের

কলকাতা, 18 জানুয়ারি: বাংলা ভাষায় সওয়াল করা নিয়ে কয়েকদিন আগেই মুখ খুলেছিলেন। বৃহস্পতিবার ফের মাতৃভাষায় মামলা করা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

এদিন একটি মামলার শুনানির সময় এজলাসেই বিচারপতি বলেন, "সুপ্রিম কোর্ট যদি আমাকে এজলাসে বাংলা ভাষায় কথা বলার কারণ জানতে চায় তাহলে আমি মৃদুভাবে, সবিনয়ে তার একটি উত্তর দেব। সেই উত্তর সবাইকে জানিয়েই দেব। আমি লক্ষ্য করেছি এখানে অনেকে এসে বাংলায় কথা বলেছেন বলে জিভ কেটেছেন। মাতৃভাষায় কথা বলার জন্য যেখানে জিভ কাটতে হয় সেখানে 21 ফেব্রুয়ারির কোনও মানে হয় না। আমাকে এখনও পর্যন্ত কোনও আবেদনকারী এসে যদিও বলেননি তিনি ইংরেজিতে কথাবার্তা বুঝতে পারছেন না।"

ফলে বলাই যায়, এদিন থেকে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বাংলায় শুনানি শুরু করলেন। উপস্থিত মামলাকারি (বাদী) ও বিবাদী পক্ষের বোঝার সুবিধার জন্য এই সিদ্ধান্ত বলেও জানিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, গত 11 জানুয়ারি বিচারপতি এজলাসে বসে বাংলা ভাষায় শুনানিতে আপত্তি কেন, সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন। তিনি বলেন, "বাংলা ভাষায় শুনানিতে আপত্তি কেন ? আমাদের মাতৃভাষায় কথা বলতে অসুবিধা কীসের ? যে কেউ আমার কাছে বাংলায় মামলা করলে আমি তা গ্রহণ করি। এতে অন্যদের আপত্তি থাকার কথা নয়।"

সেই সময় বিচারপতি আরও জানিয়েছিলেন, "বাংলাভাষাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বইমেলায় বেশ কিছু উপযুক্ত বই বেরোচ্ছে। আমি নিজেও সেখানে একটি কবিতার বই লিখেছি। ইংরেজরা ইংরেজি ভাষাটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আদালত-সহ বিভিন্ন জায়গায় ইংরেজি ভাষার প্রচলন করেছিল। তাহলে আমরা বাংলা ভাষাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এই প্রচেষ্টা চালাব না কেন ?"

এদিন অবশ্য এজলাসে উপস্থিত আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছেলে আইনজীবী শীর্ষাণ্য বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আইনের সমস্ত বিষয় ইংরেজিতেই হয়। যেমন আবেদন (পিটিশন), হলফনামা (এফিডেবিট), নির্দেশ (অর্ডার) সবই লেখা হয় ইংরেজিতে। বাংলায় সওয়াল করলে কীভাবে চলবে ? সওয়াল পর্ব কোন কাজে ব্যবহার করা হবে ?" যার উত্তরে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি তা বলিনি। আদালত চত্বরে যাঁরা আসেন, তাঁরা যাতে বুঝতে পারেন আদালত কক্ষে কী হচ্ছে; সেই কথা ভেবেই সওয়ালটা বাংলায় হোক। তবে যে পারবে সে ইংরেজিতেও বলবে।"

উপস্থিত থাকা আইনজীবী কল্লোল বসু বলেন, ‘‘হোক না। শুরুটা আপনি করুন। ভাষার প্রতি সংবেদনশীলতা থাকা প্রয়োজন।’’ বিচারপতি বলেন, ‘‘এই বাংলা নিয়ে কেউ আমার কাছে ব্যাখ্যা চাইলে আমি অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে তার উত্তর দেব।’’ এরপরেই কোর্ট অফিসারদের তিনি বিভিন্ন কথা বাংলাতেই বলতে শুরু করেন।

আরও পড়ুন:

  1. লালবাজারের মুকুটে যুক্ত হল 'স্কচ অ্যাওয়ার্ড', সম্মানিত প্রণাম ও সুকন্যা
  2. রাজ্যে জব কার্ড দুর্নীতির তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন হাইকোর্টের
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.