কলকাতা, 13 অক্টোবর : কোরোনা পরিস্থিতির মধ্যেই দুর্গোৎসব পালনের জন্য প্রস্তুত কলকাতা । বিশেষজ্ঞরা অনেকেই বলছেন, এবারের শারদ উৎসবে কলকাতার পরিচিত দৃশ্য ফিরে এলে বিপদ বাড়তে পারে । এক লাফে বাড়তে পারে আক্রান্তের সংখ্যা । তার জন্য রাজ্য সরকারের তরফে জারি করা হয়েছে নির্দেশিকা । কলকাতা পুলিশও পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠক করে বুঝিয়ে দিয়েছে কী করা যাবে আর কী যাবে না । কিন্তু সরকারি নির্দেশিকা আদৌ পুজো কমিটিগুলি মানছে তো ? বিষয়টি খতিয়ে দেখতে এবার পথে নামলেন যুগ্ম কমিশনার(সদর) শুভঙ্কর সিনহা । ঘুরে দেখলেন উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতার কয়েকটি মণ্ডপ । কুমোরটুলি পার্ক থেকে মহম্মদ আলি পার্ক, কলেজ স্কয়্যার, সন্তোষ মিত্র স্কয়্যার, বোসপুকুর শীতলা মন্দির, একডালিয়া এভারগ্রিন, দেশপ্রিয় পার্ক, মুদিয়ালি শিব মন্দির সহ একাধিক পুজো মণ্ডপ পরিদর্শন করেন তিনি । সঙ্গে পুজো কমিটিগুলোকে প্রয়োজনীয় পরামর্শও দেন ।
কী কী মেনে করতে হবে পুজো-
• মণ্ডপ খোলামেলা রাখতে হবে ৷
• মণ্ডপের সিলিং যদি আচ্ছাদিত থাকে তবে তারা চারপাশ খোলা রাখতে হবে ৷
• মণ্ডপে প্রবেশ এবং প্রস্থানের পৃথক ব্যবস্থা রাখতে হবে ৷
• মণ্ডপ হতে হবে খোলামেলা যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকে ৷
• দর্শনার্থীদের মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক ৷
• স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার বাধ্যতামূলক ৷
• যেসব দর্শনার্থী মাস্ক না পরেই মণ্ডপে আসবেন তাঁদের মাস্ক দিতে হবে উদ্যোক্তাদের। তাই পর্যাপ্ত মাস্কের ব্যবস্থা রাখতে হবে ।
• সামাজিক দূরত্ব বিধি রক্ষার জন্য পুজো উদ্যোক্তাদের যথেষ্ট সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক রাখতে হবে ৷
• স্বেচ্ছাসেবকদের মাস্ক এবং ফেস শিল্ড ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক ৷
• অঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ কিংবা সিঁদুর খেলার জন্য উদ্যোক্তাদের বিশেষ পরিকল্পনা রাখতে হবে ৷ যাতে একসঙ্গে অনেকটা ভিড় না জমে যায় ৷
• যাঁরা অঞ্জলি দেবেন তাঁদের বাড়ি থেকে ফুল আনতে হবে ৷
• পুজো মণ্ডপ কিংবা মণ্ডপ চত্বরে কোনওরকম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না ৷
• পুজাের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এবং নিরঞ্জনের শোভাযাত্রা ছোটো করে করতে হবে ৷
• ভার্চুয়ালি উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করার উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে ৷
• নিরঞ্জনের শোভাযাত্রার সময় কোনও জায়গায় প্রতিমা দাঁড় করানো যাবে না ৷ সোজা নিরঞ্জন ঘাটে নিয়ে যেতে হবে ৷
• প্রতিমা নিরঞ্জনের ক্ষেত্রে প্রতিটি কমিটিকে নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেবে প্রশাসন ৷
সেরা পুজো বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে বিচারকমণ্ডলীর সংখ্যা এবার সীমিত করে দেওয়া হয়েছে । প্রতি বছর দেখা যায়, বড়সড় কনভয় নিয়ে বিচারকমণ্ডলীরা মণ্ডপগুলোতে সেরা পুজো বেছে নিতে যান । এবার তা করা যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে নবান্ন । একবারে বিচারকদের দুটির বেশি গাড়ি কোনও মণ্ডপে যেতে পারবে না । বিচারপর্ব চলবে সকাল দশটা থেকে তিনটে পর্যন্ত । গভীর রাতের বিচারপর্ব এবার নিষিদ্ধ করা হয়েছে । রাজ্য সরকার চাইছে পুজো উদ্যোক্তারা দর্শনার্থীদের প্রতি মুহূর্তে সতর্ক করুক । এই বিষয়ে ইলেকট্রনিক এবং সোশাল মিডিয়াতেও প্রচার চালানোর কথা বলা হয়েছে ।