কলকাতা, 30 ডিসেম্বর: পায়ে পায়ে হাজার দিন অতিক্রম করল যাদবপুরের জ্যোতিদেবী শ্রমজীবী ক্যান্টিন (Jadavpur Sramajibi Canteen) । লকডাউনের সময় শুরু হয়েছিল এই ক্যান্টিনের । ভ্যানে করে রান্না করা খাবার দুপুরে বিতরণ করা হত । এখন সেটাই বিশাল কর্মকাণ্ড পরিণত হয়েছে (Sramajibi Canteen in Jadavpur) । তৈরি করা হয়েছে যাদবপুর শ্রমজীবী ট্রাস্ট । ক্যান্টিন পরিচালনা করতে রান্নার জোগাড়, প্যাকেজিং ইত্যাদি কাজের জন্য মাসিক বেতনের বিনিময়ে লোক রাখা হয়েছে 9 জন ।
করোনা লকডাউন পর্বে 2020 সালে একবেলা ন্যূনতম 20 টাকা অনুদানের বিনিময়ে খাবার পাওয়া যেত এই শ্রমজীবী ক্যান্টিন থেকে। এখন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য বৃদ্ধির কারণে ন্যূনতম 25 টাকা করা হয়েছে এই অনুদান ৷ এই ক্যান্টিন শুরুর পরের দিন থেকে প্রায় 1000-1500 প্যাকেট বিলি করা হত, তবে বর্তমানে এই প্যাকেট বিলির সংখ্য়া কামানো হয়েছে ৷ এখন প্রতিদিন 450-500 প্যাকেটে বিলি করা হয় । প্রতিদিনই মাছ ভাত অথবা মাংস ভাত থাকে ৷ তাও মাত্র 25 টাকার বিনিময়ে (kolkata news) ৷
আরও পড়ুন: জয় শ্রীরামে বিজেপির অসৌজন্যতা দেখছে তৃণমূল, মমতার বিরুদ্ধে পালটা তোপ শুভেন্দু-রাহুলের
এই শ্রমজীবী ক্যান্টিন থেকে রিক্সাচালক থেকে শুরু করে নির্মাণ শ্রমিক, আইটি কর্মী, ডাক্তার, উকিল, গৃহবধূ প্রায় সকলেই খাবার সংগ্রহ করেন । এই খাবার গ্রহণে কোনও বাধ্যবাধকতা রাখা হয়নি । সিপিএমের উদ্যোগে এই ক্যান্টিনকে মডেল বলা হয়েছে । কারণ তাদের যুক্তি, যেকোনো প্রক্রিয়াতেই দুই ধরনের জিনিস লাগে, পুঁজি আর শ্রম। এই ক্যান্টিনের কাজে সাহায্যকারী 9 জনে বেতন দেওয়া হয় ক্যান্টিন থেকে যে আয় হয় ৷ বলা যায় শুধু খাদ্যের চাহিদা পূরণ করা নয়, খুব অল্প সংখ্যায় হলেও কিছু লোকের কর্মসংস্থানও করেছে এই ক্যান্টিন ।
আরও পড়ুন: মেট্রোর উদ্বোধনে মমতার মুখে কাননের প্রশংসা ! ফের প্রাসঙ্গিক হচ্ছেন শোভন ?
ক্যান্টিনের দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্যতম সিপিআইএম নেতা সুদীপ্ত সেনগুপ্ত বলেন, "এটা যৌথ মডেল । সর্বক্ষেত্রে এই যৌথ মডেল আমরা ছড়িয়ে দিতে পারি তবে খাবার ও কর্মসংস্থান উভয়ের ব্যবস্থা হবে । লকডাউনের সময় আমরা বুঝতে পেরেছি যে গরিব নিম্নবিত্ত মানুষের কাছে একটা বিশাল সংকটের জায়গা হল স্বাস্থ্য ও সেবার খরচ। বড় বড় কর্পোরেট সংস্থা যেমন একে একে সব ক্ষেত্রে দখল করছে, তেমনি স্বাস্থ্য পরিষেবা চলে গিয়েছে তাঁদের হাতে । যা আমাদের সকলের আয়ত্বের বাইরে । তাই যাদবপুর শ্রমজীবী ট্রাস্ট আর নিকুঞ্জ চক্রবর্তী চ্যারিটেবল ট্রাস্ট যৌথভাবে যাদবপুর অঞ্চলে বিকল্প স্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে । যেখানে মাত্র 100 টাকার বিনিময়ে যে কেউ বিখ্যাত বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শ নিতে পারবেন । একই সঙ্গে ডায়াগনস্টিক পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে । আগামীতে লাইব্রেরীরও ব্যবস্থা করা হবে।"